মালিক সংগঠন বিটিএ ২৭ এপ্রিলের মধ্যে আলোচনায় না বসলে ২৩ মে থেকে সারা দেশের চা বাগানগুলোতে লাগাতার ধর্মঘট
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি : ‘একজন চা শ্রমিকের দৈনিক ১৫০ টাকা মজুরিসহ ১৮ দফা দাবিতে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের কার্যালয় লেবার হাউসে শ্রমিক নেতাদের নিয়ে মঙ্গলবার এক যৌথ প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভায় চা শ্রমিক ইউনিয়নের আহ্বায়ক বিজয় বুনার্জি ঘোষণা দেন, চলতি মাসের ২৭ এপ্রিলের মধ্যে চুক্তি সম্পাদনের উদ্যোগ না নিলে আগামী ২৩ মে থেকে দেশের সব চা বাগানে লাগাতার শ্রমিক ধর্মঘটসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে।
এদিকে মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলায় চা শ্রমিকেরা মজুরি বৃদ্ধি, ভিটা উচ্ছেদ আইন বাতিলকরণ, চাকরি ও শিক্ষা কৌটা সংরক্ষণ এবং শ্রমিক ইউনিয়নের গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখার দাবিতে গত শুক্রবার আধাঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করে। পরে শ্রমিকরা বাংলাদেশ চা সংসদের চেয়ারম্যানের কাছে স্মারকলিপি দেয়। চা শ্রমিক সূত্র জানায়, গত শুক্রবার উপজেলার ২২ টি চা বাগানের শ্রমিকেরা কাজে যাওয়ার আগে সকাল ৮টার দিকে তাদের কার্যালয়ের সামনে আধাঘণ্টার কর্মবিরতি পালন করা হয়। পরে শ্রমিকরা স্থানীয় চা বাগান ব্যবস্থাপকদের মাধ্যমে চা সংসদের চেয়ারম্যানের কাছে স্মারকলিপি দেয়।
চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রাম ভজন কৈরী জানান, চা শ্রমিকেরা নিজেরাই এখন জেগে উঠেছে। কমলগঞ্জের চা শ্রমিকদের আন্দোলন পর্যায়ক্রমে দেশের সব চা বাগানে ছড়িয়ে পড়বে।
অপরদিকে শ্রীমঙ্গলে বাংলদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ঘোষিত বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ১ মে মৌলভীবাজার জেলা সদরে চা শ্রমিক সমাবেশ, ২ মে থেকে দেশের সব চা বাগানে সমাবেশ ও মিছিল, ২০ মে মশাল মিছিল, ২৩ মে থেকে দেশের সব চা বাগানে শ্রমিক ধর্মঘট এবং ২৪ মে শ্রীমঙ্গলে চা শ্রমিক মহাসমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিনিধি সভায় চা শিল্পের ৭ টি অঞ্চল থেকে (ভ্যালী) ২২৪ টি ইউনিটের ৮ শতাধিক প্রতিনিধি অংশ নেন। এতে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের আহ্বায়ক ও শ্রীমঙ্গল উপজেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও রাজঘাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যন বিজয় বুনার্জি।
চা শ্রমিক ইউনিয়নের আহ্বায়ক বিজয় বুনার্জি জানান, দৈনিক ১৫০ টাকা মজুরি ও এক কেজি রেশন, উৎসব ভাতা বাড়ানো, বছরে ২০ দিন ছুটিসহ মালিকপক্ষের কাছে আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে ১৮ দফা দাবি পেশ করা হয়েছে। ওই দাবিনামার ভিত্তিতে চা বাগানের মালিকদের সংগঠন বিটিএ আমাদের সঙ্গে নতুন চুক্তির জন্য ২৭ এপ্রিলের মধ্যে আলোচনা শুরম্ন না করলে ২৩ মে থেকে সারা দেশের চা বাগানগুলোতে লাগাতার ধর্মঘটে যেতে বাধ্য হব। প্রসঙ্গত, দেশে মোট ১৬৩ টি চা বাগান রয়েছে। এর মধ্যে মৌলভীবাজার জেলায় ৯২ টি আর বাকিগুলো সিলেট, চট্টগ্রাম ও পঞ্চগড়ে। এসব চা বাগানে ১ লক্ষাধিক চা শ্রমিক কর্মরত রয়েছে।