অবশেষে ধরা পরলো ট্রেনের সেই দুই ধর্ষক বিএসএফের জওয়ান
আন্তর্জাতিক ডেস্ক ::
ভারতের ‘অমৃতসর এক্সপ্রেস’ ট্রেনে সেনাদের রিজার্ভ কামরায় গত ২৬ ডিসেম্বর রাতে গণধর্ষণের শিকার হয় এক কিশোরী। কিশোরীকে উদ্ধার করা সম্ভব হলেও এর পর থেকেই দুই ধর্ষক লাপাত্তা। অবশেষে ধরা পড়েছে সেই দুই ধর্ষক সেনা। বিএসএফ বা ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর এই দুই জওয়ানের নাম পবন কুমার ও বালকরাম যাদব। এরা দুজনই বিএসএফের আগরতলা ইউনিটে কর্মরত। অবশ্য সেদিন ট্রেনের ওই কামরায় ছিলেন তিন জওয়ান। সেনাবাহিনীর আরেক জওয়ান মঞ্জরীশ ত্রিপাঠীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল কামরা থেকেই। পবন আর বালকরামই এত দিন পালিয়ে ছিলেন।
এই শুক্রবার রাতে এই দুজনকে গোয়াহাটি থেকে বিমানে কলকাতায় নিয়ে আসে হাওড়া রেল পুলিশ। দুজনকে গোয়াহাটিতেই গ্রেফতার করা হয় শুক্রবার সন্ধ্যায়। তাদের নিয়ে যাওয়া হয় হাওড়া জিআরপি থানায়। আর সেখানেই এ দিন ওই দুজনকে শনাক্ত করার জন্য ধর্ষিত কিশোরীকে তার বাড়ির লোকজনসহ ডেকে পাঠায় রেল পুলিশ।
কিশোরীকে নিয়ে তার মা-বাবা পৌঁছানোর পর তাদের ওসির ঘরে নিয়ে যাওয়া হয়। ধৃত পবন ও বালকরামকে ঘরে নিয়ে আসার নির্দেশ দেন ওসি। দুজনকে দুদিক থেকে দুজন কনস্টেবল হাতকড়া ধরে নিয়ে ঘরে ঢোকেন। দরজার সামনেই তাদের দাঁড় করানো হয়। আট ফুট দূরত্ব থেকেই তাদের শনাক্ত করে ওই কিশোরী। কিন্তু ওই দুজনকে দেখেই সাময়িক উত্তেজনার জেরে সে কিছুটা অসুস্থ হয়ে পড়ে। তখন ওই দুই অভিযুক্তকে তড়িঘড়ি ঘর থেকে বের করে নিয়ে যাওয়া হয়।
হাতকড়া পরানো দুজনকে দেখিয়ে ওসি জিজ্ঞেস করলেন, ‘এরা?’ মাত্র কয়েক মুহূর্তের স্তব্ধতা। তার পর চোখমুখ বদলে গেল তার। তর্জনী তুলে চেঁচিয়ে উঠল, ‘এরাই, এরাই। এরাই আমাকে…।’ পুরোটা বলতে পারল না। হাঁপাতে হাঁপাতে মায়ের গায়ে নেতিয়ে পড়ল কিশোরী।
এ দিন ওই দুই ধৃতকে হাওড়া আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক তাদের ১৪ দিনের জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। সেই সঙ্গে তাদের টিআই প্যারেডের নির্দেশও দিয়েছেন বিচারক। সেই সঙ্গে তিনি ওই দুই জওয়ানের শারীরিক পরীক্ষা করিয়ে মেডিক্যাল রিপোর্ট জমা দিতে বলেছেন।
জিআরপি সূত্রের খবর, পবনের বাড়ি বিহারের বৈশালীতে আর বাবলু উত্তর প্রদেশের ফরিদাবাদের বাসিন্দা। তদন্তকারীরা জানান, ঘটনার পর ওই দুই জওয়ান যে যার বাড়ি চলে যান। কয়েক দিন বাড়িতে ছুটি কাটাবার পর শুক্রবার যখন তারা বিএসএফের আগরতলায় ইউনিটে কাজে যোগ দিতে যাওয়ার জন্য গোয়াহাটি বিমান বন্দরে পৌঁছান, তখনই তাদের আটক করা হয়। তদন্তকারীরা জানান, দুজনই স্বীকার করে নিয়েছেন, ট্রেনে তারা ওই কিশোরীর ঠান্ডা পানীয়র সঙ্গে মদ মিশিয়ে দিয়েছিলেন।
রেল পুলিশ জানিয়েছে, দমদমের বাড়ি থেকে পালানো ওই কিশোরী হাওড়া স্টেশনে গিয়ে অমৃতসর এক্সপ্রেসে সেনাদের জন্য সংরক্ষিত কামরায় না বুঝে উঠে পড়ে। আর ওই কামরাতেই তিন জওয়ান ছয়বার ধর্ষণ করে ওই কিশোরীকে।