সিলেটে ধরণিকন্যা উপাধিতে ভুষিত হলেন প্রধানমন্ত্রী
নিউজ ডেস্ক:: সিলেট মদন মোহন কলেজের হীরক জয়ন্তী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধরণিকন্যা উপাধিতে ভুষিত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বেলা ২টা ৪০ মিনিটে সিলেট মদন মোহন কলেজের হীরক জয়ন্তী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ অনুষ্ঠানে বিশ্বব্যাপী মানবতার কল্যাণে কাজ করার জন্য তাকে ধরণিকন্যা উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সিলেট নগরীর মদন মোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজকে সরকারী করণের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, দেশের প্রতিটি বিভাগে একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা ও প্রতি উপজেলায় একটি করে স্কুল ও কলেজ সরকারিকরণ করা হচ্ছে। এছাড়া দেশের প্রতিটি জেলায় একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার পদক্ষেপও বর্তমান সরকারের রয়েছে বলে তিনি জানান।
অর্থমন্ত্রী ও কলেজ গভর্নিং বডির সভাপতি আবুল মাল আব্দুল মুহিতের সভাপতিত্বে ৭৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন কলেজর অধ্যক্ষ ড. আবুল ফতেহ ফাত্তাহ।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ, অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, শিক্ষাসচিব সোহরাব হোসেন।
বক্তব্য রাখেন, আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মিছবাহ উদ্দিন সিরাজ, কলেজ গভর্নিং বডির সদস্য ও সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আশফাক আহমদ, বিজিত চৌধুরী, সুকেন্দু বিকাশ দাশ, আসাদ উদ্দিন প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে প্লাটিনাম জুবিলি অভিভাষণ প্রদান করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য্ প্রফেসর ড. হারুন অর রশিদ।
অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীকে বিশ্বব্যাপী মানবতার কল্যাণে কাজ করার জন্য ধরণিকন্যা উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের প্রতিটি বিভাগে একটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হবে। ইতোমধ্যে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পর চট্টগ্রাম ও রাজশাহীতে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হচ্ছে।
এর ধারাবাহিকতায় প্রতিটি বিভাগে একটি করে মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হবে
বর্তমান সরকার শিক্ষাকে অধিকতর গুরুত্ব দেয় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের যেসকল উপজেলায় সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ নেই সেসব উপজেলায় একটি করে সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হবে।
এছাড়া দেশের প্রতিটি জেলায় একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় গড়ার পদক্ষেপও বর্তমান সরকারের রয়েছে উল্লেখ করে তিনি জানান সরকারি কিংবা বেসরকারীভাবেই হোক দেশের প্রতিটি জেলায় একটি করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করা হবে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষার প্রসারে সরকারের পাশাপাশি সমাজের বিত্তবানদের এগিয়ে আসতে হবে। আমাদের দেশে বেশিরভাগ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানই সমাজের বিত্তবানরা স্থাপন করেছেন। মদন মোহন কলেজ সেরকমই একটি প্রতিষ্ঠান। এই কলেজের গৌরবোজ্জ্বল ইতিহাস রয়েছে।
তিনি কলেজের প্রতিষ্ঠাতা মোহিনী মোহন দাশ ও জোগেন্দ্র মোহন দাশকে তাদের পিতার নামে কলেজ প্রতিষ্ঠার জন্য ধন্যবাদ ও আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানান।
দেশের শিক্ষাকে আন্তর্জাতিক মানসম্মত পর্যায়ে উন্নীত করতে সরকার চেষ্টা চালাচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শিক্ষাকে অধিকতর গুরুত্ব দিয়ে সেই সময় কুদরত এ খোদা কমিশন গঠন করেছিলেন। আমরা ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় এসে একটি শিক্ষা কমিশন ও ২০০৯সালে ক্ষমতায় এসে একটি শিক্ষনীতি প্রণয়ন করি। আমাদের সরকার নিরক্ষরমুক্ত একটি জাতি গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে। সে অনুযায়ী ১৯৯৬ সালে আমরা সরকার গঠনের পর দেশকে নিরক্ষরমুক্ত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেই এবং অনেকটা সাফল্যের দ্বার প্রান্তে পৌছি কিন্তু বিএনপি জামাত সরকার ক্ষমতায় এসে আবারও দেশকে নিরক্ষরতার দিকে ধ্বাবিত করে। তবে বর্তমানে বিগত ৬/৭ বছরে দেশের স্বাক্ষরতার হার শতকরা ৭১ ভাগ এ উন্নীত হয়েছে।
তিনি বলেন, সিলেট বিভাগ শিক্ষায় পিছিয়ে ছিলো সেকারণে আমি সিলেট থেকে শিক্ষামন্ত্রী নিয়েছি এবং তাকে নির্দেশ দিয়েছি সিলেটের শিক্ষার প্রসার ঘটাতে যেনো কার্পণ্য করা না হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সিলেট থেকে অর্থমন্ত্রীও নেয়া হয়েছে। বিগত দিনে আমাদের সরকারের সিলেটেরই আরেক কৃতি সন্তান শাহ এম এ এস কিবরিয়াকে অর্থমন্ত্রী করা হয়। কিন্তু দূর্ভাগ্যজনকভাবে তাকে নিষ্ঠুরভাবে গ্রেনেড হামলায় প্রাণ দিতে হয়।
প্রধানমন্ত্রী সিলেট মদন মোহন কলেজের হীরক জয়ন্তী অনুষ্ঠানে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি প্রসঙ্গে বিস্তৃত কোন বক্তব্য রাখেন নি।
দেশের উন্নয়নে প্রবাসীদের অবদানের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশীরা দেশের উন্নয়নে যেমন ভুমিকা রাখছেন তেমনি দেশের দুর্দিনে তারা আপনজনের মতো আমাদের পাশে দাড়ান। এমনকি ব্যক্তিগত সুবিধা অসুবিধায়ও তাদেরকে আমরা পাশে পাই। ২০০৭ সালে বৃটেন থেকে দেশে ফেরার সময় বৃটেন প্রবাসী প্রায় ১০০জন তার সঙ্গে দেশে এসে তৎকালিন সরকারের রোষানলে পড়ে জেল খাটেন উল্লেখ করে তিনি বলেন প্রবাসীরা আমাদের সঙ্গে আছেন এবং থাকবেন।