আংকেল আম্মুকে মেরে ফ্যানে ঝুলিয়ে দেয়
নিউজ ডেস্ক : ‘আম্মু ও আংকেল ঝগড়া করছিল। এর মধ্যে আম্মুকে আংকেল লাঠি দিয়ে মারতে থাকে। দা দিয়েও মারে। আর আমি ছিলাম পাশের ঘরে। কিছুক্ষণ পরে শব্দ বন্ধ হয়ে যায়। দেখি আংকেল আম্মুকে খাটের উপর তোলে। খাটের উপর একটা চেয়ার তুলে তাতে বসানো হয় আম্মুকে। পরে সিলিং ফ্যানে আম্মুকে ঝুলিয়ে দিয়ে চেয়ারটি লাথি মেরে ফেলে দেয় আংকেল। এরপর আংকেল বাথরুমের পাশের দরজা দিয়ে বেরিয়ে যায়।’
সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে বিচার চাইতে এসে মাকে হত্যার দৃশ্য এভাবেই গণমাধ্যমের সামনে বর্ণনা করছিল সাত বছরের শিশু রাদ।
রাদ সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলার বহেরা গ্রামে সম্প্রতি হত্যার শিকার শাহানা রেজা কেয়ার ছোট ছেলে।
রোববার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সুষ্ঠু বিচার দাবিতে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন নিহত শাহানা রেজা কেয়ার স্বজনরা।
সংবাদ সম্মেলনে পরিবারের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নিহত শাহানার বড় ভাই সেলিম রেজা সবুজ।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমার বোনের প্রথমে ভারতে বিয়ে হয়েছিল। পারিবারিক দ্বন্দ্বের কারণে তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। প্রায় ছয় বছর আগে আমার বোন দুই ছেলেকে নিয়ে দেশে চলে আসেন। এরপর থেকে তিনি কুলিয়া এলাকায় ব্যবসা করে জীবনযাপন করছিলেন। তার ধন-সম্পত্তি আত্মসাতের উদ্দেশ্য নিয়ে ছয় মাস আগে দেবহাটার পারুলিয়া ইউনিয়নের খেজুরবাড়িয়া গ্রামের মৃত খলিল মিস্ত্রির ছেলে আনারুল ইসলাম তাকে নানাভাবে প্রভাবিত করে বিয়ে করেন। এরপর থেকে সম্পত্তির বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া হতো। এর সূত্র ধরে তাকে হত্যা করে আনারুল ইসলাম পালিয়ে গেছে।
তিনি আরো জানান, ব্যবসায়িক কাজে তার বোনের ৮৫ লাখ টাকা বাজারে বিনিয়োগ করা রয়েছে। হত্যার আগে আনারুল শাহানার অবর্তমানে ওই টাকা আদায়ের দায়িত্ব নিজ নামে লিখে নেন।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, হত্যাকারী আনারুল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুনসুর আহমেদের ভাগ্নে হওয়ায় পুলিশ তার বিরুদ্ধে মামলা নিতে গড়িমসি করছে। আমরা দ্বারে দ্বারে ঘুরেও ময়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্ট হাতে পাচ্ছি না।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি তার বোনকে হত্যার ঘটনায় হত্যাকারী আনারুলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
এ সময় নিহত শাহানার বড় ছেলে সাদ, ছোট ছেলে রাদ ও প্রতিবেশীরা উপস্থিত ছিলেন।