‘নিষেধাজ্ঞায় পড়তে পারে যুক্তরাজ্যগামী বাংলাদেশের যাত্রীবাহী ফ্লাইট’
নিউজ ডেস্ক ::
৩১শে মার্চের মধ্যে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা জোরদারের উদ্যোগ না নিলে যুক্তরাজ্যগামী বাংলাদেশের সরাসরি (যাত্রীবাহী) ফ্লাইট নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়তে পারে। গত মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেয়া এক চিঠিতে এমনই আভাস দিয়েছেন বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন।
চিঠিতে ডেভিড ক্যামেরন বলেছেন, গত বছরের নভেম্বর থেকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা জোরদার করতে যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তারা কয়েক দফা সফর করেন। প্রাথমিক মূল্যায়নের পর নিরাপত্তা ঘাটতি চিহ্নিত করে তা দূর করার জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা হয়েছে।
চিঠিতে তিনি আরও বলেছেন, সন্ত্রাসের ব্যাপারে ন্যূনতম ছাড় না দেয়ার নীতির ধারাবাহিকতায় যুক্তরাজ্যের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে এটা স্পষ্ট ে য, বিমানবন্দরের নিরাপত্তার সমস্যা দূর করতে শেখ হাসিনা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। সর্বশেষ মূল্যায়নে যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তারা বিমানবন্দরের নিরাপত্তায় ধারাবাহিকভাবে বড় ধরনের ঘাটতি থাকার বিষয়টি উল্লেখ করেছেন। সম্প্রতি মিসর ও সোমালিয়ায় বিমানে হামলার পর এটি যুক্তরাজ্যের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়। বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বলেন, শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তাজনিত সমস্যার মূলে আছে প্রশিক্ষিত নিরাপত্তাকর্মী এবং যথাযথ নজরদারির ঘাটতি।
তাই আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা পূরণের লক্ষ্যে বিমানবন্দরের নিরাপত্তা কার্যক্রমে প্রয়োজনীয় দক্ষতা অর্জনের জন্য আপনাকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানাই। বিমানবন্দরের নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি দূর করার লক্ষ্যে দ্রুততার সঙ্গে একটি কর্মপরিকল্পনা তৈরির জন্য বাংলাদেশের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কাজ করতে যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তাদের বলা হয়েছে। আগামী ৩১শে মার্চের মধ্যে এই কর্মপরিকল্পনার বাস্তবায়ন শুরু করতে বলা হয়েছে। ৩১শে মার্চের মধ্যে এটি হলে তা নতুন করে আর কোন পদক্ষেপ নেয়া এড়াতে সহায়তা করবে। এ ধরনের পদক্ষেপের মধ্যে থাকতে পারে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের সরাসরি যুক্তরাজ্যে ফ্লাইট চলাচলের ওপর নিষেধাজ্ঞা। চিঠিতে তিনি লিখেছেন, এই পরিকল্পনা কার্যকর হওয়ার আগে আমাদের অবশ্যই নিরাপত্তার সম্ভাব্য ঝুঁকিগুলো কমাতে হবে।
তাই বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাজ্যের সরাসরি পণ্য পরিবহন সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা নিশ্চিত করতে আমাদের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছি। যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তারা পণ্য নিরাপত্তায়ও ঘাটতি খুঁজে পেয়েছেন। পণ্য পরিবহনে নিষেধাজ্ঞার ফলে যুক্তরাজ্যগামী সরাসরি ফ্লাইটের অন্যান্য নিরাপত্তার ব্যাপারে বিমানবন্দরের কর্মীদের মনোযোগের সঙ্গে কাজ করতে সহায়ক হবে। চিঠিতে আরও বলা হয়, বিভিন্ন দ্বিপক্ষীয় ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে যুক্তরাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ এবং মূল্যবান অংশীদার বাংলাদেশের ওপর এই সিদ্ধান্তের সম্ভাব্য প্রভাবের ব্যাপারে বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী সচেতন আছেন।
বিমানবন্দরে যুক্তরাজ্যের কর্মকর্তাদের চলমান সহযোগিতার অংশ হিসেবে, আগামী সপ্তাহ থেকে স্ক্যানার অপারেটরদের প্রশিক্ষণ দেয়া শুরু হবে। এ মাসের শেষে বাড়তি আরও কী ধরনের সহযোগিতা প্রয়োজন, তা খুঁজে বের করে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিতে তাঁদের কর্মকর্তারা তৈরি আছেন। তিনি বলেন, আমি আশা করি, দ্রুততার সঙ্গে চূড়ান্ত পদক্ষেপ নেয়ার প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারটি আপনি বুঝতে পারছেন। আকাশপথে সত্যিকারের ঝুঁকি আছে এবং আমাদের নাগরিকদের সুরক্ষা দেয়া প্রয়োজন। আকাশপথে একটি নিñিদ্র নিরাপত্তাকাঠামো গড়ে তুলতে বিশ্বের সব দেশের অবশ্যই আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা পূরণ করা উচিত।
এক্ষেত্রে আপনাকে সহযোগিতার জন্য যুক্তরাজ্য সরকার তৈরি আছে। এদিকে যুক্তরাজ্যের সরকারি ওয়েবসাইটে গত মঙ্গলবার এক বিজ্ঞপ্তিতে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সরাসরি পণ্য পরিবহনে নিষেধাজ্ঞার খবরটি প্রচার করা হয়।