মসজিদে নববীর ইমাম আইয়ুব ছিলেন বাংলাদেশি নাগরিক
প্রবাস ডেস্ক :: মসজিদে নববীর সদ্য প্রয়াত ইমাম শায়খ মোহাম্মদ আইয়ুব ছিলেন বাংলাদেশি নাগরিক। বাবা-মা মিয়ানমারের নাগরিক হলেও তিনি ছিলেন বাংলাদেশি পাসপোর্টধারী।
পরবর্তীতে তিনি সৌদি আরবের নাগরিত্ব লাভ করেন। তবে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি বাংলাদেশিদের সঙ্গে চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলতেন।
শায়খ আইয়ুব ছিলেন মসজিদে নববীর একজন সিনিয়র ইমাম। অসংখ্য ছাত্রের অবিভাবক, পিত্যৃসমতূল্য ও প্রানের স্পন্দন। ছিলেন একজন কুরানিক লিজেন্ড।
তিনি ১৩৭২ হিজরিতে মক্কা নগরীতে জন্মগ্রহন করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স ছিলো ৬৪ বছর। তার বাবার নাম মোহাম্মদ ইউসুফ।
মাত্র ১২ বছর বয়সে আব্দুর রহমান আল ক্বারীর কাছ থেকে ১৪৮৫ হিজরিতে কোরআন হেফজ করেন তিনি।
তার দুই স্ত্রী, পাঁচ ছেলে ও মেয়ে সবাই কোরআনের হাফেজ।
কোরআনিক সায়েন্সের উপর ১৩৯৬ হিজরিতে মাস্টার্স এবং ১৪০৮ সালে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন আইয়ুব।
মাস্টার্স শেষ করে ১৪৯৭ হিজরিতে একই বিশ্ববিদ্যালয়ে (মদীনা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়) একই বিষয়ে শিক্ষকতা শুরু করেন তিনি।
১৪১০ হিজরীতে মদীনায় মসজিদে নববীর ইমাম হিসাবে নিয়োগ পান। মাঝখানে বেশ কয়েক বছর ইমামতি না করলেও সবশেষ গত বছর ১৪৩৬ হিজরী (২০১৫ সাল) পুনরায় তারাবিহ নামাজের জন্য নিয়োগ পান তিনি।
তিনি মদীনা মসজিদে নববীর পাশাপাশি মসজিদে কোবার ইমাম ছিলেন। মদীনা আল আনাবিয়া মসজিদে (১৩৯৬ থেকে ১৪০৪) হিজরি পর্যন্ত ইমামতি করেন। ১৪০৩ থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মসজিদে আব্দুল্লাহ আল হোসাইনি মসজিদে ইমামের দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি কোরআন ছাপাখানা মদীনা কিং ফাহাদ কোরআন প্রিন্টিং কমপ্লেক্সের একজন সদস্য ছিলেন।
প্রতি বছর তিনি মসজিদে হারামে তারাবির নামাজের ইমামতি করতেন। গত রমজানে তিনি তারারি পড়াতে গিয়ে স্মরণ শক্তি হারিয়ে ফেলেন। দীর্ঘদিন তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
সম্প্রতি এক টিভি সাক্ষাতকারে শেষ ইচ্ছার কথা জানতে চাইলে সঞ্চালকের এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, আমার একটাই শেষ ইচ্ছা, মহান আল্লাহ তা’আলা আমাকে উঠিয়ে নেয়ার আগে একবারের জন্য মসজিদে নববীতে এক ওয়াক্ত নামাজ পড়াতে চাই।
১৫ এপ্রিল শুক্রবার এশার নামাজে তিনি শেষ বারের মতো ইমামতি করেন। শনিবার (১৬ এপ্রিল) ফজরের নামাজের পর শেষ নি:শ্বাস ত্যাগ করেন।