আদালতের নির্দেশেও ডিএনএ রিপোর্ট পৌঁছেনি
নিউজ ডেস্ক ::
কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ইতিহাস বিভাগের ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনুর ডিএনএ প্রতিবেদন নিয়ে সিআইডি আর ফরেনসিক বিভাগের লড়াই চলছেই। তনুকে ধর্ষণের আলামত সংবলিত আলোচিত ডিএনএ প্রতিবেদনটি কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগে সরবরাহ করতে আদালত থেকে মামলার তদন্ত সংস্থা সিআইডিকে নির্দেশ দিলেও তা বুধবার পর্যন্ত সরবরাহ করা হয়নি।
গত রোববার কুমিল্লার আদালত থেকে তনুর ডিএনএ প্রতিবেদন ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক বোর্ডকে সরবরাহ করতে সিআইডিকে নির্দেশ দেয়া হয়। এদিকে জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির দেয়া লিগ্যাল নোটিশের জবাব গতকাল বুধবার প্রেরণ করা হয়েছে।
জানা যায়, গত ২০শে মার্চ কুমিল্লা সেনানিবাসের একটি জঙ্গল থেকে তনুর মরদেহ উদ্ধারের পর গত ৪ এপ্রিল ১৫ দিনের মাথায় প্রথম ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন প্রস্তুত করেন কুমিল্লা মেডিক্যাল কলেজের ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক ডা. শারমিন সুলতানা। ওই প্রথম ময়নাতদন্তে তনুর মৃত্যুর কারণ বা ধর্ষণের আলামত উল্লেখ ছিল না। ফরেনসিক বিভাগের এ প্রতিবেদন বেশ সমালোচনার মুখে পড়ে। তবে এর আগে তনুর দাঁত, কাপড় ও ভেজাইনাল সোয়াবের ডিএনএ আলামত সংগ্রহ করতে গত ৩০ মার্চ দ্বিতীয় দফায় ময়নাতদন্তের জন্য তনুর লাশ কবর থেকে উত্তোলন করা হয়। গত ১৪ই মে কুমিল্লার আদালতে এসে পৌঁছায় নিহত তনুর কাপড় ও শরীরের ৭টি বিষয়ের ডিএনএ প্রতিবেদন।
গত ১৬ মে তনুর ভেজাইনাল সোয়াবে ৩ পুরুষের শুক্রানু পাওয়া যাওয়ার খবর সিআইডি থেকে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশের পর তনুর মৃত্যু নিয়ে আবারো আলোচনার ঝড় উঠে। এতে তনুর মত্যুর কারণ খুঁজতে থাকা ২য় ময়নাতদন্তকারী মেডিকেল বোর্ড ডিএনএ প্রতিবেদনটি পেতে আরও তৎপর হয়ে উঠে। এ নিয়ে ফরেনসিক বিভাগ-সিআইডি’র মাঝে চলে দফায় দফায় চিঠি চালাচালি।
এ বিষয়ে বুধবার বিকালে ২য় ময়নাতদন্ত বোর্ডের প্রধান ডা. কামদা প্রসাদ সাহা (কেপি সাহা) জানান, ডিএনএ প্রতিবেদন আমাদেরকে সরবরাহ করতে আদালত থেকে সিআইডি কার্যালয়ে আদেশ যাওয়ার ৪ দিন পেরিয়ে গেলেও মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও সিআইডি’র ডিএনএ ল্যাবে প্রস্তুত থাকা প্রতিবেদন সরবরাহ করা হয়নি, কখন সরবরাহ করবে তা সিআইডিই বলতে পারবে, তাদেরকে জিজ্ঞেস করুন, আমরা কিছুই জানি না। কেপি সাহা আরও জানান, বুধবার আইনজীবীর মাধ্যমে ঢাকার জাতীয় মহিলা আইনজীবী সমিতির দেয়া লিগ্যাল নোটিশের জবাব ডাকযোগে পাঠানো হয়েছে।
তবে জবাবে কি লেখা আছে এ বিষয়ে ডা. কেপি সাহা মন্তব্য করতে রাজি হননি। এদিকে ডিএনএ প্রতিবেদন ফরেনসিক বিভাগে সরবরাহে বিলম্ব কেন? এমনই প্রশ্নের জবাবে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি’র পরিদর্শক গাজী মোহাম্মদ ইব্রাহিম বুধবার বিকালে সাংবাদিকদের জানান, আদালতের নির্দেশনা মোতাবেক কিছু আইনগত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে যে কোনো সময় ডিএনএ প্রতিবেদন ফরেনসিক বিভাগে হস্তান্তর করা হবে।