‘নাকের কাছে হাত দিয়ে দেখি, পুলিশ ভাবির নিঃশ্বাস নাই’
নিউজ ডেস্ক : জিইসি মোড়ের ইকুইটি সেন্ট্রিয়াম ভবনের সদর দরজায় দাঁড়িয়ে নিজ দায়িত্বটা পালন করছিলেন ঠিকই। পরিচিতজনের চেনা সেই লিকলিকে শরীরটাও ঠিকই আছে তার। কিন্তু সেটা আজ যেনো বড় জরাজীর্ণ, ভেঙে পড়েছে। কোথায় যেনো ছন্দপতন।
তিনি আবদুস ছাত্তার। ইকুইটি সেন্ট্রিয়াম ভবনের নিরাপত্তাকর্মী। এই ভবনের ‘সেভেন ডি’ অ্যাপার্টমেন্টটাতে পুলিশ সুপার বাবুল আকতারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু থাকতেন দুই সন্তানকে নিয়ে। থাকতেন বলতে হচ্ছে কেননা রোববার সকালে দুর্বত্তের হাতে নিহত হয়েছেন মিতু।
ঘটনার স্বাক্ষী নিরাপত্তাকর্মী আবদুস ছাত্তারও। গত একবছর ধরে এই ভবনে নিরাপত্তাকর্মীর দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে বাবুল আকতারের সাহচর্য পেয়েছেন তিনিও। সেই সূত্র ধরে বাবুল আকতারের পরিবারকে বেশ ভালোভাবেই চিনতেন তিনি। বাবুল আকতারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে সম্বোধন করতেন ‘পুলিশ ভাবি’ বলে।
আবদুস ছাত্তারও বলেন, ‘আমাদের ভবনে ঢুকার সড়কের মোড়ে মাহিরকে কাঁদতে দেখে দৌঁড়ে গিয়ে তাকে বললাম ‘‘বাবা কি হয়েছে’’। সে তখন উত্তর দিল ‘‘মাকে মেরে ফেলেছে তিনজন মানুষ’’। তখন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখলাম পুলিশ ভাবি (মিতু) পড়ে আছেন। এসময় আমি তার নাকের কাছে হাত নিয়ে দেখলাম তার নিঃশ্বাস বন্ধ। পরে দ্রুত মাহিকে তার অ্যাপার্টমেন্টে নিয়ে আসি, এবং একটা চাদর নিয়ে আবার ঘটনাস্থলে গিয়ে পুলিশ ভাবির শরীর ঢেকে দিই। এরপর সবাইকে খবর দিই।’
‘পুলিশ ভাবি অনেক ভালো মানুষ ছিলেন। সকালে ছেলেকে নিয়ে বের হওয়ার সময়ও ভালো আছি কিনা জানতে চাইলেন। সবসময় খবর নিতেন আমাদের।’
বলতে বলতে ফুপিয়ে ফুপিয়ে কাঁদতে থাকেন আবদুস ছাত্তার।
তিনি বলেন ‘কারা মেরেছে আমি দেখিনি। তবে মাহিরের কাছ থেকে শুনেছি তিনজন মানুষ মোটরসাইকেলে করে এসে প্রথমে পুলিশ ভাবিকে ধাক্কা মারে। পরে পেটে ছুরিকাঘাত করে তাকে মাটিতে ফেলে দেন এবং মাথায় তিনটা গুলি করেন।’