আষাঢ়ের প্রথম দিন আজ
নিউজ ডেস্ক: কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কালজয়ী গান ‘বাদল দিনের প্রথম কদম ফুল করেছ দান/আমি দিতে এসেছি শ্রাবণের গান’; কিংবা মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের সেই ধ্রুপদী পঙক্তি ‘গভীর গর্জন করে সদা জলধর/উথলিল নদ-নদী ধরনীর উপর’—অথবা জাতীয় কবি নজরুলের ‘গগনে সঘনও চমকিছে দামিনী, মেঘ ঘন রসে, রিমিঝিমি বরষে একেলা ভূবনে বসি বাতায়নে, পথ চাহি বিরহিনী আমি…’ মনে করিয়ে দিল আবারও সবুজ সমারোহে হাজির হয়েছে বর্ষা। আজ আষাঢ়ের প্রথম দিন।
ষড়ঋতুর এই দেশে আষাঢ়কে বলা হয় ঋতুর রানী। রবীন্দ্রনাথের ভাষায় ‘ঐ আসে ঐ ঘন গৌরবে নব যৌবন বরষা, শ্যাম গম্ভীর সরসা…’। রবীন্দ্রনাথের মতো বর্ষার রূপ-ঐশ্বর্যে মোহিত অনেক কবিই বাংলা সাহিত্য ঋদ্ধ করেছেন। বর্ষা ঋতু তার বৈশিষ্ট্যের কারণেই স্বতন্ত্র। বর্ষা কাব্যময়, প্রেমময়। বর্ষার প্রবল বর্ষণে নির্জনে ভালোবাসার সাধ জাগে, চিত্তচাঞ্চল্য বেড়ে যায়। শত ঘটনার ভিড়েও কোথায় যেন মেলে এক চিলতে বিশুদ্ধ সুখ।
বাংলাদেশের আবহাওয়াবিদরা বর্ষাকে অভিহিত করেন `সেকেন্ড সামার` হিসেবে। অর্থাৎ গরম থেকে জনজীবনের রেহাই নেই। বৃষ্টি হলেও ভাপসা গরমের অস্বস্তি মানুষকে ঠিকই ভোগায়। আবার মৌসুমি বায়ু প্রবাহের কারণে চলে বৃষ্টিপাত, এ সময় প্রকৃতি অন্য রকম এক আদলে আমাদের সামনে উপস্থিত হয়। তবুও বর্ষাই ঋতুর রানী।
বৃষ্টি হচ্ছে কদিন ধরেই। গ্রীষ্মের ধুলোমলিন জীর্ণতাকে ধুয়ে ফেলে গাঢ় সবুজের সমারোহে প্রকৃতি সেজেছে পূর্ণতায়। নদীতে উপচে পড়া জল, আকাশেও ঘন মেঘের ঘনঘটা। কেউ কারো চেয়ে পিছিয়ে নেই। গ্রীষ্মের দাবদাহে মানুষ যখন পুড়ছে তখন ব্যাপক আয়োজনে বর্ষার এই ঝুম ঝুম বৃষ্টির বরণডালা মাঝে মাঝেই মনে করিয়ে দিচ্ছে বর্ষা তো এসেই গেছে। বর্ষার সতেজ বাতাসে জুঁই, কামিনী, বেলি, রজনীগন্ধা, দোলনচাঁপা আরো কত ফুলের সুবাস।
অন্যান্য বারের মতো এবারো রাজধানীতে নানা আয়োজনের মধ্যদিয়ে বর্ষাকে বরণ করে নেয়া হবে। বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন এবং গানের দল আয়োজন করছে বর্ষাবরণের।