প্রয়াত নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের প্রতিষ্ঠিত স্কুলে জঙ্গি আতঙ্ক
নিউজ ডেস্ক :: বিংশ শতাব্দীর বাঙালি জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিকদের মধ্যে অন্যতম। তাঁকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী শ্রেষ্ঠ লেখক গণ্য করা হয়। তিনি একাধারে ঔপন্যাসিক, ছোট গল্পকার, নাট্যকার এবং গীতিকার। যার কথা বলছি তিনি হলেন হুমায়ূন আহমেদ। আর নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার রোয়াইলবাড়ী ইউনিয়নের কুতুবপুর গ্রামে এ সাহিত্যকের প্রতিষ্ঠিত শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপিঠে কয়েকজন আগন্তুকের সন্দেহমূলক আচরণে আতঙ্কিত হয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন প্রধান শিক্ষক মো. আসাদুজ্জামান। গত ১৩ জুলাই কেন্দুয়া থানায় এ জিডি করেন। যার নম্বর ৪৭৮।
প্রধান শিক্ষক মো. আসাদুজ্জামান জানিয়েছেন, ‘রমজান মাসের শেষের দিকে শহীদ স্মৃতি বিদ্যাপীঠ প্রাঙ্গণে অজ্ঞাত পরিচয়ধারী একজন মধ্য বয়সী পাগল লোক আসে। যাকে তাড়ালেও যেতে চায় না। কারো সাথে কথা বলে না। এরপর পাগল ভেবে কেউ আর কিছু বলেনি। পরে গত ১০ জুলাই অজ্ঞাত পরিচয় হাতে শেকল বাধা দুই যুবক এসে পাগলের সঙ্গে কথা বার্তা বলে। পাগলকে কয়েল কিনে দিয়ে যায়। সেই সঙ্গে গ্রামের বেশ কিছু লোকের কাছে ওই দুই যুবক জানতে চায় হুমায়ূন আহমেদ স্যার নামাজ পড়তেন কি না, মসজিদে দান খয়রাত করতেন কি না, ইসলাম ধর্মীয় কাজে সম্পৃক্ত হতেন কি না।’
এছাড়া এক পর্যায়ে স্কুলের শিক্ষকদের বসার ঘরে গিয়েও এ ব্যাপারে জানতে চায়। আর পরিচয় জানতে চাইলে কৌশলে পরিচয় না দিয়েই তারা চলে যায়। এতে স্কুলের শিক্ষক ও এলাকাবাসীর মাঝে অপরিচিতি দুই যুবকের রহস্যজনক আচরণ সম্পর্কে সন্দেহ দেখা দেয়। তবে দুই যুবকের আসার ঘটনাটি তিনি নিজ চোখে দেখেননি বলেও জানান এ প্রধান শিক্ষক।
তিনি স্কুলের পাশের দোকানের মালিক আলী আকবর ও সালামের কাছে শুনেছেন। পরে ঢাকায় অবহিত করলে থানায় জিডি করার কথা বলা হয়। এ ব্যাপারে কেন্দুয়া থানার ওসি অভিরঞ্জন দেব বলেন, ‘স্কুলে তো প্রতিদিনই লোকজন আসে যায়। আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখছি।’
প্রসঙ্গত ১৯ জুলাই হুমায়ূন আহমেদের চতুর্থ মৃত্যুবাষিকী। আধুনিক বাংলা কল্পবিজ্ঞান সাহিত্যের তিনি পথিকৃৎ। নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালক হিসাবেও তিনি সমাদৃত। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা তিন শতাধিক। বাংলা কথাসাহিত্যে তিনি সংলাপপ্রধান নতুন শৈলীর জনক।
এছাড়া তাঁর বেশ কিছু গ্রন্থ পৃথিবীর নানা ভাষায় অনূদিত হয়েছে, বেশ কিছু গ্রন্থ স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচীর অন্তর্ভুক্ত। সত্তর দশকের শেষভাগে থেকে শুরু করে মৃত্যু অবধি তিনি ছিলেন বাংলা গল্প-উপন্যাসের অপ্রতিদ্বন্দ্বী কারিগর। এই কালপর্বে তাঁর গল্প-উপন্যাসের জনপ্রিয়তা ছিল তুলনারহিত।