ছাতকে সহপাঠীর ছুরিকাঘাতে কলেজছাত্র খুন
ছাতকে সহপাঠীর ছুরিকাঘাতে কলেজ ছাত্র আল-আমিন(১৮) নিহত হয়েছে। আরো ৩ ছাত্র আহত হয়েছে। গুরুতর আহত দু’জনকে ভর্তিকরা হয়েছে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। হামলাকারীসহ দু’জনকে আটক করেছে পুলিশ।
সোমবার দুপুরে জাউয়াবাজার ইউনিয়নের দক্ষিন বড়কাপন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে এ ঘটনা ঘটে। নিহত আল-আমিন দোয়ারাবাজার উপজেলার পান্ডারগাঁও ইউনিয়নের পলিরচর গ্রামের কাঁচা মিয়ার পুত্র ও জাউয়া ডিগ্রী কলেজের ২য় বর্ষের ছাত্র। হত্যাকারী আক্কাছ আলী(১৯) একই কলেজের ২য় বর্ষের ছাত্র ও ছাতক উপজেলার চরমহল্লা ইউনিয়নের ছনুয়া গ্রামের রহিম আলীর পুত্র।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, জাউয়া ডিগ্রী কলেজের বিজ্ঞান বিভাগের ২য় বর্ষের ছাত্র আল-আমিন ও আক্কাছ আলী জাউয়াবাজার ইউনিয়নের দেবেরগাঁও গ্রামে পাশাপশি বাড়িতে লজিং থেকে লেখাপড়া করে আসছে। রোববার রাতে নারী ঘটিত একটি বিষয় নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। বিষয়টি রাতেই স্থানীয়ভাবে নিস্পত্তি করে দেয়া হয়। সোমবার দুপুরে কলেজে একই বিষয় নিয়ে আল-আমিন ও আক্কাছ আলীর মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। মারামারি ঘটনায় আহত হয়ে কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুল গাফফারের কাছে বিচার প্রার্থী হয় আক্কাছ আলী। বিষয়টির উপযুক্ত বিচার করার কথা বলে আক্কাছ আলীকে প্রাথমিক চিকিৎসা নেয়ার পরামর্শ দেন অধ্যক্ষ। কিন্তু চিকিৎসা না নিয়ে পাল্টা আঘাত করার জন্য আল-আমিনকে খুঁজতে থাকে আক্কাছ আলী ও তার সহযোগিরা। এক পর্যায়ে আল-আমিন কলেজ থেকে নিজ গ্রামের সহপাঠীদের নিয়ে গ্রামের বাড়ি শ্রীপুরে যাওয়ার পথে বড়কাপন পয়েন্টে একটি হোটেলে চা-নাস্তা করে। হোটেল থেকে বেড়িয়ে আসার এসময় আগে থেকে ওঁৎ পেতে থাকা আক্কাছ আলীসহ ৬-৭ জন লোক দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আল-আমিন ও তার সহপাঠীদের উপর হামলা চালায়। এক পর্যায়ে আক্কাছ আলীর হাতে থাকা ছুরি দিয়ে উপর্যপুরি ছুরিকাঘাত করে আল-আমিনকে গুরুতর আহত করে। পরে হামলাকারী আক্কাছ আলী নিজেই একটি সিএনজি যোগে কৈতক হাসপাতালে নিয়ে আসে আল-আমিনকে।
হাসপাতালে আনার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় আল-আমিনের মৃত্যু ঘটে। এসময় পালিয়ে যাবার পথে কৈতক পয়েন্ট থেকে জনতা আক্কাছ আলীকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। হামলায় গুরুতর আহত একই কলেজের ২য় বর্ষের ছাত্র ও দোয়ারার পান্ডারগাঁও ইউনিয়নের শ্রীপুর-নতুন কৃষ্ণনগর গ্রামের ছুরাব আলীর পুত্র বিলাল আহমদ(১৮) ও শ্রীপুর আফসরনগর গ্রামের আব্দুল মতিনের পুত্র জুয়েল আহমদকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত অপর সহপাঠী একই গ্রামের জমির আলীর পুত্র নাজমুল ইসলামকে হাসপাতাল থেকে আটক করেছে পুলিশ। জাউয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই কামরুল হোসেন ঘটনাস্থল থেকে হামলায় ব্যবহৃত রক্তমাখা ছুরি উদ্ধার করেছেন। খবর পেয়ে সুনামগঞ্জের সহকারী পুলিশ সুপার তাপস রঞ্জন ঘোষ ও ছাতক থানার ওসি আশেক সুজা মামুন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। এসময় উপজেলা চেয়ারম্যান অলিউর রহমান চৌধুরী বকুল, ভাইস চেয়ারম্যান আবু সাদাত লাহিন, দোয়ারা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান সালেহা বেগম, জাউয়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ এসআই শফিকুল ইসলাম, ইউপি চেয়ারম্যান মুরাদ হোসেন, সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল ওয়াহিদ ও আখলুছ মিয়া উপস্থিত ছিলেন।