কুলাউড়ায় শিক্ষিকার কাপড় খুলে নেওয়ার হুমকি : প্রতিবাদে পরীক্ষা বর্জন
মৌলভীবাজারের কুলাউড়ার রাউৎগাঁও উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের ম্যানেজিং কমিটির এক সদস্য কর্তৃক সহ-প্রধান শিক্ষিকাকে মোবাইল ফোনে কল দিয়ে কাপড় খুলে নেওয়া এবং কান ধরে ওঠবস করানোর হুমকি দেয়া হয়েছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার (১৯ অক্টোবর) শিক্ষার্থীরা দশম শ্রেণীর টেস্ট পরীক্ষা বর্জন, ২ ঘণ্টা বিক্ষোভ প্রদর্শন ও শিক্ষকদের রুমে তালা লাগিয়ে দেয়। সহ-প্রধান শিক্ষিকাকে গত ১৬ অক্টোবর ফোনে গালিগালাজ ও হুমকি প্রদর্শন করার ৩ দিন অতিবাহিত হলেও বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বিষয়টি সুরাহার কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীরা কমিটির সদস্য আব্দুল মতিন মতি’র দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করে বুধবার দুপুর ১টায় বিদ্যালয়ের প্রধান ফটকে তালা মেরে শিক্ষকদের ২ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে ও বিক্ষোভ প্রদর্শন করতে থাকে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে আন্দোলনকারীদের কবল থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উদ্ধার করে।
পুলিশ এ সময় আন্দোলনকারীদের দাবির বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিলে বিকেলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। বিদ্যালয়ের সহ-প্রধান শিক্ষিকা বিলকিছ বানু অভিযোগ করেন, গত ১৬ অক্টোবর রাত ১১টায় ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আব্দুল মতিন মতি আমার মোবাইল ফোনে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করে আমাকে হুমকি প্রদর্শন করেন। এমনকি বিদ্যালয়ে গেলে আমার পরনের কাপড় খুলে ফেলা এবং কান ধরে ওঠবস করানোর হুমকি দেন। আমি বিষয়টি অধ্যক্ষের কাছে অভিযোগ দিলে ৩ দিন অতিবাহিত হলেও কোনো প্রতিকার না হওয়ায় বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে আন্দোলন করে। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত কমিটির সদস্য আব্দুল মতিন মতি তার বিরুদ্ধে উত্থাপিত অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, সহকারী প্রধান শিক্ষিকা বিলকিছ বেগম গত ১৬ অক্টোবর এসএসসি’র টেস্ট পরীক্ষার ১ম দিনে তার নিকট প্রাইভেট পড়ুয়া জনৈক কয়েকজন শিক্ষার্থীকে প্রশ্নের উত্তর বলে দেওয়ার বিষয়ে আমি ফোনে জানতে চাইলে তিনি সদুত্তর না দিয়ে উত্তেজিত হয়ে যান। এর প্রেক্ষিতে আমার সাথে তার ফোনে বাকবিতণ্ডা হয়।
এ ব্যাপারে রাউৎগাঁও স্কুল এণ্ড কলেজের অধ্যক্ষ হেলাল আহমদ জানান, সহকারী প্রধান শিক্ষিকা লিখিতভাবে বিষয়টি আমি কিংবা কমিটির সভাপতিকে জানাননি। উল্টো বুধবার বহিরাগত যুবকরা এসে কলেজে বিশৃঙ্ক্ষলা সৃষ্টি করে বাংলা ২য় পত্রের পরীক্ষা বাতিল করতে বাধ্য করে। পরে পুলিশকে খবর দিলে তরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। থানা পুলিশের এসআই কানাই লাল চক্রবর্ত্তী জানান, উত্তেজিত পরিস্থিতির খবর পেয়ে অবরুদ্ধ করে রাখা শিক্ষকদের উদ্ধার করি। এ সময় শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করে এবং ঘটনার বিচারের আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করা হয়।