আগুনের সূত্রপাত, প্রতিকার ও এর থেকে বাঁচতে করণীয়
নজরুল ইসলামঃ
বেশ কিছুদিন ধরে যে বিষয়টি নিয়ে একটু লিখবো ভাবছিলাম আজ তা লিখার চেস্টা করেছি। অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত পরিসরে আলোচনার চেষ্টা করবো।
বিষয়টির সাথে গত ১৪ বছর ধরে আমি professionally পরিচিত অর্থাৎ বিষয়টি লন্ডনে পার্ট অফ মাই জব। আমার কর্ম পরিমন্ডলে প্রতিদিনই onduty আমাকে লন্ডন ফায়ার বিগ্রেড অফিসারদের সাথে কাজ করতে হয় when fire incident happen লন্ডনে অামি যে হাসপাতালে কাজ করি সেখানে প্রায় ই true অর false দুই একটা ‘ফায়ার ইনসিডেন্ট’ হয় আর আমাদেরকে সমান act করতে হয় until its confirm by লন্ডন ফায়ার বিগ্রেড it’s ‘true অর false ফায়ার এলার্ট’। ফায়ার এলার্ম কি? উদাহরণ স্বরূপ বলি আমার কর্ম পরিমন্ডলে কোনো এক জায়গায় ফায়ার এলার্ম শুরু হয়েছে তা Instantly চলে যায় মেইন ফায়ার প্যানেলে আর সেখান থেকে bleeping সিস্টেমের মাধ্যমে As a ইনসিডেন্ট অফিসার হিসেবে চলে আসে আমাদের কাছে, আসে the location of the fire incident, এরপর মেইন রিসেপশন ইনফর্ম করে লন্ডন ফায়ার বিগ্রেডকে। ৫ থেকে ১০ মিনিটের মধ্যে লন্ডন ফায়ার বিগ্রেড চলে আসে। ফায়ার বিগ্রেড চলে আসার পূর্বেই আমাদেরকে identify করতে হয় location অফ the ফায়ার।
Ensure করতে হয় রোগী ছাড়া সকল staff building থেকে বের হয়ে একটি নিরাপদ দূরত্বে অবস্থান নিয়েছে এবং তদেরকে বাইরে অবস্থান করতে হবে। কোনো ভিজিটর এই সময়ে বিল্ডিং এ প্রবেশ করতে পারবে না until লন্ডন fire বিগ্রেড অফিসার্স confirm us the বিল্ডিং ইজ safe ফর staff visitor coming ইন। প্রতি বছরই আমাকে ট্রেনিং করতে হয় ফর রিফ্রেশমেন্ট of any latest update of fire ইনসিডেন্ট যা অত্যন্ত interesting. আমি আপনাদের একটু ব্রীফ idea দিলাম লন্ডনে ফায়ার ইনসিডেন্ট হলে সাধারণত কি হয়, কি করতে হয়। লন্ডন ফায়ার বিগ্রেড অফিসার্স তা পরিচালনা করেন- its completely up to fire officer how he operate the fair operation to save life and প্রপার্টি। পাঠক, আমাদের দেশের প্রেক্ষাপট একটু ভিন্ন, লন্ডনের সাথে বাংলাদেশকে তুলনা করা ঠিক হবে না। কিন্তু অ্যাকশন এবং movment একি হওয়া বাঞ্ছণীয়- যা অত্যন্ত হতাশাব্যঞ্জক বাংলাদেশে। যাই হোক আসুন ফায়ার সতর্কতা নিয়ে একটু সংক্ষিপ্ত একটু আলোচনা করি।
আগুন হলো সাধারণত বাতাসের অক্সিজেনের সাথে জ্বালানির কার্বন ও হাইড্রোজেনের মিলনে সৃষ্ট এক বিশেষ রাসায়নিক বিক্রিয়া। আলোর মাধ্যমে এ রাসায়নিক বিক্রিয়া শক্তিতে প্রকাশ পায়। যতক্ষণ পর্যন্ত আগুন আমাদের নিয়ন্ত্রণে থাকে, ততক্ষণ পর্যন্ত তা আমাদের বন্ধু। আবার একটু অবহেলার কারণে তা আবার শত্রু হতে বিন্দুমাত্র দেরি করে না। সতর্কতার অভাবে মুহূর্তেই অগ্নিকাণ্ড ভস্মিভূত করতে পারে আপনার প্রিয় সাজানো সংসার, বসতবাড়ি, অফিস কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠাকে। তাই আপনাকে অবশ্যই তিনটি প্রধান বিষয় মাথায় রাখতে হবে – প্রথমত ,অগ্নিকান্ডের কারণ। দ্বিতীয়ত, এ থেকে সতর্ক থাকার নিয়ম কানুন আর তৃতীয়ত, অগ্নিকাণ্ডের পর করণীয়। বাংলাদেশে সাধারণত দেখা যায় গ্রীষ্মকালেই আগুন লাগার খবর বেশি পাওয়া যায়, অক্সিডেন্টের কোন সময় কাল নেই , যে কোনো সময়েই ঘটতে পারে।
বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে গ্রীষ্মকালে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ও শুষ্ক থাকে। তাই কোনো কিছু আগুনের সংস্পর্শে আসা মাত্রই আগুন লেগে যায়। বাতাসের বেগও এ সময় বেশি থাকে। এতে আগুন এক স্থান থেকে উড়ে অন্য স্থানে সহজেই গিয়ে লাগতে পারে। এ ছাড়া গ্রীষ্মকালে বৈদ্যুতিক তার ঢিলেঢালা হয়ে অন্য তারের সংস্পর্শে এলেও আগুন লেগে যেতে পারে। প্রচণ্ড বাতাসে আগুন সহজেই দ্রুত অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ে।
তাই এ সময় আগুনের ব্যাপারে বেশি সতর্কতা প্রয়োজন। আমরা যদি অগ্নিকাণ্ডের সম্ভাব্য কারণগুলো খুঁজি তাহলে দেখতে পাই:
১. ভালোভাবে গ্যাসের চুলা বন্ধ না করা এবং গ্যাসের লাইন ত্রুটিপূর্ণ বা ছিদ্র থাকা।
২. চুলা জ্বালিয়ে চুলার ওপর কাপড় শুকাতে দেওয়া।
৩. সিগারেটের জ্বলন্ত আগুন।
৪. উত্তপ্ত ছাই।
৫. বৈদ্যুতিক গোলযোগ ও ত্রুটিপূর্ণ বৈদ্যুতিক তার।
৬. উত্তপ্ত তেল থেকে সৃষ্ট কারণে।
৭. আতশবাজি বা পটকা থেকে।
৮. বজ্রপাত।
৯. সাধারণ বিদ্যুতের তার দিয়ে বেশি ভোল্টের বিদ্যুৎ ব্যবহার করলে।
১০. নিম্নমানের বৈদ্যুতিক তার ব্যবহার করলে।
১১. বাচ্চাদের আগুন নিয়ে খেলা করা।
যেভাবে আমরা সতর্ক থাকতে পারি?
১. রান্নার সময় সহজে খুলে ফেলা যায় এমন পোশাক ব্যবহার করুন। কিন্তু ঢিলেঢালা কাপড় নয়। রান্না ঘরে আপনার (মেয়েদের) ওড়না-শাড়ি সাবধানে রাখুন।
২. চুলার কাজ শেষ হওয়ার পর তা বন্ধ করে রাখা। গ্যাসের চুলা হলে ভালোভাবে সুইচ বন্ধ করে পরীক্ষা করা−ঠিকমতো বন্ধ হয়েছে কি না। সাধারণ চুলা বা লাকড়ির চুলা হলে ব্যবহারের পর পানি দিয়ে পরিপূর্ণভাবে নেভানো। ঠাণ্ডা ছাই ঢেলে নিশ্চিত হোন আগুন নিভেছে।
৩. মাটির চুলার তিন পাশে অন্তত আড়াই ফুট দেয়াল তুলে দিন। ঢাকনা বা চিমনিযুক্ত বাতি ব্যবহার করুন। এমনকি মোমবাতি ব্যবহারের সময়ও সতর্ক থাকুন।
৪. চুলার ওপর কখনোই কাপড় শুকাতে না দেওয়া।
৫. গরম তরকারি ও ফুটন্ত পানি নাড়া চাড়ার সময় সতর্ক থাকুন। শিশুদের নাগালের বাইরে রাখবেন।
৬. মশার কয়েল এমন স্থানে রাখুন, যেখান থেকে অন্য কিছুতে আগুন লাগার কোনো ঝুঁকি থাকবে না।
৭. মানসম্পন্ন বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা, ত্রুটিপূর্ণ তার ব্যবহার না করা ও ত্রুটিপূর্ণ তার দ্রুত সারিয়ে নেয়া।
৮. কেউ বিদ্যুতায়িত হলে সম্ভব হলে- মেইন সুইচ বন্ধ করে তারপর তাকে ধরুন।
৯. ধূমপান শেষে বিড়ি-সিগারেটের বাদ দেয়া অংশের আগুন নিভিয়ে ফেলুন। যেখানে-সেখানে তা ফেলবেন না। মশারির ভেতর বা খাটে শুয়ে শুয়ে ধূমপান করবেন না। আমাদের দেশের বেশির ভাগ পুরুষরা বাসায় পরিবারের সকল সদস্যে/ছোট্ট বাচ্ছাদের সামনে সিগারেট খেতে পছন্দ করেন যা অন্যায়ের সামিল।
১০. বাচ্চাদের আগুন নিয়ে খেলা করতে না দেয়া।
১১. অগ্নিকাণ্ড প্রতিরোধের পর্যাপ্ত জ্ঞান এবং এর বিভিন্ন কারণ নিয়ে আলোচনা করে জানা, ইন্টারনেটে অনেক ইনফরমেশন আছে যা পড়ে জেনে আগুন সম্পর্কে সতর্ক থাকা যায়।
যদি আগুন লেগেই যায় তাহলে প্রথমেই খুব দ্রুততার সঙ্গে আপনাকে কাছের ফায়ার সার্ভিস স্টেশনে খবর দিতে হবে। আপনার কাছে কি স্থানীয় লোকাল ফায়ার স্টেশনের ফোন নাম্বার আছে?
না থাকলে তা সংগ্রহ করা অত্যন্ত জরুরী। আগুন নেভানোর জন্য আপনাকে প্রাকৃতিক দুর্যোগে সাহায্যের জন্য তারা সব সময়ই প্রস্তুত থাকে। আপনার,আমার একটু অবেহলা ধ্বংশ করে দিতে পারে জান-মাল স্বপ্নের সাজানো সংসার। তাই প্রাকৃতিক দুর্যোগ নিয়ে আমাদের সচেতন থাকা অত্যন্ত জরুরি।
কেননা ‘বাঁচতে হলে জানতে হবে’ এজন্য আগুনের বিষয়ে আপনাকে অন্তত এই প্রধান তিনটি বিষয় সবসময় মাথায় রাখতে হবে অগ্নিকাণ্ডের কারণ, সতর্ক থাকার নিয়মকানুন, অগ্নিকাণ্ডের পর করণীয়।
লেখকঃ নজরুল ইসলাম,
ফ্রিল্যান্স জার্নালিস্ট,
ওয়ার্কিং ফর ন্যাশনাল হেল্থ সার্ভিস লন্ডন,
মেম্বার, দি ন্যাশনাল অটিষ্টিক সোসাইটি ইউনাটেড কিংডম,
আজীবন সদস্য, বাংলাদেশ মানবাধিকার কমিশন ঢাকা বাংলাদেশ।