মানব কল্যাণই হোক আমাদের একমাত্র ব্রত ।। মকিস মনসুর
মকিস মনসুর::
কুল কায়েনাতের জন্য রহমত, নূরে মুজ্জাচ্ছাম, শাফায়াতের কান্ডারী সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ট নবী হযরত মোহাম্মদ মোস্তফা (সাঃ) (আঃ) এর জন্মদিন হচ্ছে ১২ই রবিউল আউয়াল; ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে আরবের মরু প্রান্তরে মা আমিনার কোল আলো করে জন্মগ্রহণ করেন মানব জাতির মুক্তির দূত আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ মোস্তফা (সাঃ)। ধর্মপ্রাণ মুসলমান সহ বিশ্বের শান্তিকামী মানুষের নিকট এই দিনটি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ন।
ঈদ-এ-মিলাদুন্নবী (আরবি: مَوْلِدُ النَبِيِّ মাওলিদু এন-নাবীয়ী, আরবি: مولد النبي মাওলিদ আন-নাবী, কখনো কখনো সহজভাবে বলা হয় مولد মাওলিদ, মেভলিদ, মেভলিট, মুলুদ আরো অসংখ্য উচ্চারণ; কখনো কখনো: ميلاد মিলাদ) হচ্ছে শেষ নবীর জন্মদিন হিসেবে মুসলমানদের মাঝে পালিত একটি উৎসব। আবার ৬৩২ খ্রিস্টাব্দের এই দিনে মাত্র ৬৩ বছর বয়সে আমাদের প্রিয় শেষ নবী, নবীকুলের শিরোমণি, বিশ্বমানবতার আশীর্বাদ হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) মৃত্যু বরণ করেন। ১২ রবিউল আউয়ালকে মুসলিম বিশ্ব মহানবীর জন্ম ও ওফাতের দিবস হিসেবে পালন করে থাকেন। এ দিবসটি একই সঙ্গে আনন্দের এবং দুঃখের। একটা সময় পুরো আরবজাহান ঘোর অন্ধকারে নিমজ্জিত ছিল।
মানুষ হয়ে পড়েছিল বেদীন। তারা আল্লাহকে ভুলে গিয়ে নানা অপকর্মে লিপ্ত হয়ে পড়ে। সর্বত্র দেখা দিয়েছিল অরাজকতা ও বিশৃঙ্খলা। মারামারি আর হানাহানিতে লিপ্ত ছিল মানুষ। মূর্তি পূজা করত। এ যুগকে বলা হয় ‘আইয়ামে জাহেলিয়াত’। এ থেকে মানুষকে মুক্তি দিতে, তাদের আলোর পথ দেখাতে মহান আল্লাহতায়ালা হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে এ ধরাধামে পাঠান।মহানবী অতি অল্প বয়সেই আল্লাহর প্রেমে অনুরক্ত হয়ে পড়েন। প্রায়ই তিনি হেরা পর্বতের গুহায় ধ্যানমগ্ন থাকতেন। পঁচিশ বছর বয়সে মহানবী (সা.) বিবি খাদিজার (রা.) সঙ্গে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন।
৪০ বছর বয়সে তিনি নবুয়ত লাভ করে আল্লাহতায়ালার নৈকট্য লাভ করেন। পবিত্র কোরআন শরিফে বর্ণিত আছে- ‘মহানবীকে সৃষ্টি না করলে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন পৃথিবী সৃষ্টি করতেন না।’ এ কারণে এবং তৎকালীন আরবজাহানের বাস্তবতায় এ দিনের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনেক বেশি। মুসলিম বিশ্ব সহ বাংলাদেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ও বিভিন্ন সংগঠন ও আশেকে রাসূলগণ যথাযথ মর্যাদা ও ধর্মীয় ভাবগম্বীর পরিবেশে বিভিন্ন কর্মসূচীর মধ্য দিয়ে উদ্যাপন করেন পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সাঃ)।
এসব অনুষ্টানে মানব জাতির মুক্তির দূত হয়রত মোহাম্মদ মোস্তফা (সাঃ) এর জন্মবৃত্তান্ত ও জীবনীর উপর আলোকপাত করে আলোচনা সভা, কোরআন তেলাওয়াত, নফল নামাজ আদায়, নফল রোজা রাখা, মোবারক র্যালী, ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্টিত হয় এবং দেশ, জাতি ও বিশ্বের শান্তি কামনায় দোয়া করা হয়। ১২ই রবিউল আউয়াল উদযাপনে আমাদের হোক দীপ্ত শপথ মহানবীর (সা.) এর প্রেমে সিক্ত হোক, আলোকিত হোক আমাদের অন্তর, মানবকল্যাণই হোক আমাদের একমাত্র ব্রত।
লেখক::
সাংবাদিক ও লেখক।
সম্পাদক,
দৈনিক মৌলভীবাজার ডট কম।