স্থগিত করা জুড়ী ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ!
স্পেশাল রিপোর্টার::
সম্মেলনের ১৯ মাস পর মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। কমিটি দেয়ার ৩ দিনের মাথায় সাংগঠনিক কার্যক্রম স্থগিত করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। নবগঠিত জুড়ী উপজেলা ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রাথমিক প্রমাণিত হয়েছে জানিয়ে গত ১৫ নভেম্বর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। স্থগিতাদেশ দেয়া ওই কমিটির বিরুদ্ধে রয়েছে পাহাড় সমান অভিযোগ।
সেই সাথে অভিযোগ তদন্ত করতে দুই সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। আগামী সাত দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন কেন্দ্রে জমা করতে বলা হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। ইতিমধ্যে অভিযোগ প্রমাণিত হয়ে তদন্ত শেষ হয়েছে বলে জানা গেছে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ছাত্রলীগের ওই কমিটির বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। রয়েছে পাহাড় সমান অভিযোগ। স্থগিতাদেশ দেয়া কমিটির বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়েছে কেন্দ্রে।
অভিযোগ পত্র সূত্রে জানা যায়, জুড়ি উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়ছল আহমদ এর বাবা ডাকাতি মামলায় কারাবন্দি। এমনকি তার ছাত্রলীগের পদায়ীত বয়স সীমাও শেষ হয়েছে। সাধারণ সম্পাদক সাহাব উদ্দিন সাবেল ও সহ-সভাপতি সাহাব উদ্দিন সামছু এর বিরুদ্ধে রয়েছে মাদক ও ডাকাতির মামলা । যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বিবাহিত ও মাদক ব্যবসায় জড়িত। সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মালিক জুড়ি কলেজে ছাত্রশিবিরের সক্রিয় কর্মী ছিলেন। আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক এস এইচ মুন্নার পরিবার বিএনপি ও জামায়াতের রাজনীতির সাথে যুক্ত। সিনিয়র সদস্য হুমায়ুন রশিদের বিরুদ্ধে মাদক সেবন ও ডাকাতি মামলার অভিযোগ রয়েছে। আরেক সদস্য সোহান রসিদের বিরুদ্ধে অনুপ্রবেশের অভিযোগ রয়েছে।
এত অভিযোগর মধ্যেও জুড়ি উপজেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনের দীর্ঘ ১৯মাস পর ১৩ নভেম্বর জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আমীরুল হোসেন চৌধুরী আমীন ও সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলমের স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে এক বছরের জন্য ১৬ সদস্য বিশিষ্ট কমিটির নাম ঘোষণা করা হয়। এরপরেই পদপ্রাপ্ত নেতাদের বিরুদ্ধে অভিযোগের বিস্ফোরণ হয়। এমনকি কমিটি ঘোষণার পর থেকেই স্থানীয় সংসদ সদস্য পরিবেশ বন ও জলবায়ু মন্ত্রী শাহাব উদ্দিন আহমদের বিপত্তি বাদে। মন্ত্রী, স্থানীয় আ.লীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পাঠানো তালিকা ডিঙ্গিয়ে কমিটি ঘোষণা করে জেলা ছাত্রলীগ। যা গড়ায় কেন্দ্র পর্যন্ত।
এবিষয়ে মৌলভীবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম গণমাধ্যমকে বলেন কোন কারণে কমিটি স্থগিত করা হয়েছে আমরা জানি না, তবে স্থগিতের বিষয়টি আমরা জেনেছি। মন্ত্রীর দেওয়া তালিকায় জামায়াত ও চাঁদাবাজির সম্পৃক্ততা রয়েছে। সেজন্য তাকে বাদ দিয়েছি। তবে মন্ত্রী মহোদয়ের পাঠানো তালিকার ভেতর থেকেই কমিটি দেওয়া হয়েছে।
স্থগিতাদেশ কমিটির তদন্তের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের হায়দার মোহাম্মদ জিতু বলেন, তদন্ত শেষ হয়েছে। অভিযোগও প্রমাণিত হয়েছে। আমরা তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছি। পরবর্তী নির্দেশনা আপনাদের জানানো হবে।
কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) লেখক ভট্টাচার্য গণমাধ্যমকে বলেন, কমিটি অনুমোদনের আগে আমাদের অবগত করা হয়নি। এমন কি কমিটিতে যাদের দেওয়া হয়েছে তাদের কয়েকজনের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক, পারিবারিক এবং ব্যক্তিগত অনৈতিক সম্পৃক্ততার অভিযোগ প্রমাণসহ আমাদের কাছে এসেছে। সেই আলোকেই স্থগিত করা হয়েছে এবং তদন্ত হয়েছে।
দৈনিক মৌলভীবাজার/ কাফি