বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান,মিছবাহুর রহমান চৌধুরীর আহবান।
আমরা গভীর ক্ষোভ ও দুঃখের সহিত লক্ষ্য করছি হেফাজত ইসলামের প্রধান, হাটহাজারীর হযরত আল্লামা আহমদ শফি (রঃ) এর ইন্তেকালের
পর একশ্রেণীর আলেম সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে
একে অন্যকে জঘন্য ভাযায় আক্রমণ চালিয়ে যাচ্ছেন। দেশের মানুষের কাছে শুধু আক্রমণকারী–
দের ভাবমূর্তি বিনষ্ট হচ্ছে না বরঞ্চ এই আক্রমণ সমস্ত কওমীর ওলামায়ে কেরামদের তথা হকপন্থি
ইসলামী আন্দোলনের নেতা কর্মীদের সম্মান বিনষ্ট
হচ্ছে।
গত ৪৫ বছরে ইসলামী রাজনীতির একজন সক্রিয়
কর্মী হিসাবে বিখ্যাত আলেমদের অনেক বিভক্তি আমি দেখেছি কিন্তু তারা কখনও একে অপরকে অসম্মান করে একটি শব্দ ও উচ্চারণ করেননি।
হাফেজ্জী হুজুর (রঃ) এবং শায়খুল হাদীস (রঃ) -এর মধ্যে রাজনৈতিক বিভক্তি, মহিউদ্দিন খান সাহেব (রঃ) আমিনুল ইসলাম (রঃ) হাফেজ্জী হুজুরের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের কয়কদিন পূর্বে তাকে
ত্যাগ করে বিচারপতি সাত্তার সাহেবকে সমর্থন দিতে দেখেছি। ইসলামী ঐক্যজোট বিভক্ত করে মুফতি আমিনী (রঃ) শায়খুল হাদিস (রঃ) কে ত্যাগ করতে দেখেছি। চরমোনাইর মরহুম পীর সাহেব
হযরত সৈয়দ ফজলুল করিম (রঃ)সাহেব এবং ইসলামী ঐক্যজোটের প্রতিষ্টাতা আশরাফ আলী ধরমন্ডলী (রঃ) মত পার্থক্য দেখেছি , খতমে নবুওয়াতের আন্দোলনের কর্মসূচি নিয়ে হযরত শায়খুল হাদিস (রঃ) এবং বায়তুল মোকাররমে মরহুম খতিব সাহেব (রঃ) এর মতপার্থক্য দেখেছি। হযরত আহমদউল্লাহ (রঃ) সাহেব ও আতাউল্লাহ (রঃ) সাহেব দুই ভাই এর বিরোধ দেখেছি। কিন্তু তারা একে অন্যের প্রতি সম্নান, মর্যাদা প্রদর্শন করতে কখনও কুন্ঠিত হননি, বাতিলের বিরুদ্ধে যে কোন আন্দোলনে তারা ছিলেন সব সময় ঐক্যবদ্ধ। তাদের মধ্যে ছিল একে অন্যের প্রতি আমৃত্যু সম্নান,শ্রদ্ধাবোধ ও ভালোবাসা। আজকে তাদের অনুসারী হয়ে একে অন্যের প্রতি নির্লজ্জ আক্রমণ, অশালীন গালিগালাজ আমাকে হতবাক করেছে।
গত মার্চ মাসে হাটহাজারীর হযরত আল্লামা শফি সাহেব (রঃ) তার কনিষ্টতম খলিফা মাওলানা সালমান ( হযরত মাওলানা বুরহান উদ্দিন (রঃ) এর সন্তান ) কে আমাকে ফোন করতে বলেন।মাওলানা সালমান আমাকে ফোন করে হযরত কথা বলবেন বলে তাকে ফোন ধরিয়ে দেন। হাটহাজারীর হযরত তার স্নেহের কন্ঠে আমাকে বলেন, মিছবা সাহেব আমার মৃত্যুর পূর্বে একটি কাজ বাকী আছে, সেই কাজটি হলো কাদিয়ানী
সম্প্রদায়কে রাষ্টীয় ভাবে অমুসলিম ঘোষণা করা।
তিনি বলেন আমার বিশ্বাস একমাত্র প্রধানমন্ত্রী
হাসিনা একাজ করতে পারবেন। এ ব্যাপারে আপনার সহযোগিতা চাই। ত্রছাড়া বাতিল একটি ফেরকার বিতর্কিত বই পুস্তক নিষিদ্ধ চাই। তাকে আমি কথা দেই, আমার জীবনের শেষ রক্ত বিন্দু দিয়ে হলেও এই ব্যাপারে আমি আপনার পাশে থাকব।
আজ আমি যাদের নাম উচ্চারণ করেছি তাদের সকলের সুযোগ্য সন্তানেরা বিখ্যাত আলেম হিসাবে
সু-পরিচিত। তাদের শ্রদ্ধেয় পিতারা এই আকাংখা
নিয়ে দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়েছেন। সেই মহান ব্যাক্তিদের সুযোগ্য সন্তানদের প্রতি আমার
আবেদন, অন্তত একটি বিষয়ে অর্থাৎ কাদিয়ানীদের অমুসলিম ঘোষণা করতে ঐক্যবদ্ধ
ভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট দাবীটি উথাপন
করে দাবীটি আদায় করুন।আমি জানি প্রধানমন্ত্রী হকপন্থি ওলামা মাশায়েখদের প্রতি দূর্বল, কাদিয়ানীদের স্বরূপ সম্বন্ধে তিনি সব কিছু জানেন।
শেয কথাঃ কবি নজরুলের ভাষায়
মহান খলিফা ওমর (রাঃ) কে উদ্দেশ্যে করে বলেছিলেন,
এত যে কোমল প্রাণ,করুনার বশে
তবুগো ন্যায়ের করণি ক’ অপমান।
মদ্যপানের অপরাধে প্রিয় পুত্রেরে নিজ করে
মেরেছ দোর্রা, মরেছ পুত্র তোমার চোখের পরে।
ক্ষমা চাহিয়াছে পুত্র, বলেছ পাষাণে বক্ষ বাঁধি
“অপরাধ করে তোরি মত স্বরে কাঁদিয়াছে অপরাধী।”
আবু শামার গোরে কাঁদিতে যাইয়া ফিরিয়া আসিগো তোমারে সালাম করে।
মহান ছাহাবীদের স্বার্থক উওরসুরী ও অনুসারী
আল্লামা আহমদ শফির শেয সিদ্ধান্ত ছিল রহমতে
ভরপুর যে কারণে ভাইয়ে ভাইয়ে দাঙ্গায় হাটহাজারী
রক্তাক্ত হয় নাই বরঞ্চ এক কাতারে দাঁড়িয়ে হুজুরের জানাযা,দাফন ও জিয়ারত করেছেন।
এমন ঘটনা দেখে সমগ্র দেশের মানুষ মুগ্ধ হয়েছে।
আমার বিশ্বাস এখন ভাই ভাই একে অন্যকে ক্ষমা করে হযরতের মৃত্যু শোককে শক্তিতে পরিণত করে
মহান ইসলামের মশাল হাতে এগিয়ে যাবেন।
আল্লাহ্ আমাদের সহায় হউন।