অবশেষে রায়হান হত্যার প্রধান আসামী এস,আই আকবর গ্রেপ্তার।
মকিস মনসুর.
সত্য চিরন্তন সত্য সত্যকে মিথ্যা দিয়ে ঢেকে রাখা যায় না। অপরাধ করে কেউ পার পায় না একদিন না একদিন ধরা পরতেই হবে। অবশেষে রায়হান হত্যার প্রধান আসামী নরপশু এস,আই আকবর ধরা পরেছে শুনে মনে খুউবই শান্তি লেগেছে। এখন অপেক্ষার পালা খুনি আকবর সহ সকল আসামিদের ফাঁসি কবে হচ্ছে। সিলেট নগরের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে নিহত রায়হান আহমদ হত্যার প্রধান আসামী বহুল আলোচিত পুলিশের বরকাস্তকৃত নরপশু এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে আজ ৮ নভেম্বর রোববার রাতে কানাইঘাট সীমান্ত নামক স্থান থেকে খাসিয়া জনগোষ্টি আটক করে পরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) মাধ্যমে তাকে সিলেট জেলা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সিলেটে জেলা পুলিশের সহকারি মিডিয়া কর্মকর্তা ও ডিবির পরিদর্শক সাইফুল আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। একটি ভিডিও ফোটেজ থেকে দেখা যায় আকবরকে আটক করে খাসিয়ারা তাকে বেধে রেখে রায়হান হত্যা সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্নবানে জর্জরিত করে। তারা জানতে চায় মাত্র ১০ হাজার টাকার জন্য কিভাবে সে মেরে ফেললো একজন মানুষকে, সে পালালোই বা কিভাবে। আকবর জানায় সে হত্যা করেনি রায়হানকে, ছিনতাইকালে গণপিঠুনিতে আহত অবস্থায় তারা ধরে নিয়ে পরে হাসপাতালে দেয়। সিনিয়রদের পরামর্শেই সে পালিয়েছিলো বলেও আকবর জানায় খাসিয়াদের।
উল্লেখ্য, গত ১১ অক্টোবর বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতন করে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় সকাল ৭টা ৫০ মিনিটে রায়হানের মৃত্যু হয়।রায়হান সিলেট নগরের আখালিয়ার নেহারিপাড়ার বিডিআরের হাবিলদার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে। তিনি নগরের রিকাবিবাজার স্টেডিয়াম মার্কেটে এক চিকিৎসকের চেম্বারে চাকরি করতেন।এ ঘটনায় ১২ অক্টোবর রাতে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু আইনে এসএমপির কোতোয়ালি মডেল থানায় মামলা করেন রায়হানের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্নি।
এর পর ১৪ অক্টোবর মামলাটি পুলিশ সদর দফতরের নির্দেশ পিবিআইতে স্থানান্তর হয়। তদন্তভার পাওয়ার পর পিবিআইর টিম ঘটনাস্থল বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ি, নগরের কাস্টঘর, নিহতের বাড়ি পরিদর্শন করে। সর্বোপরি মরদেহ কবর থেকে তোলার পর পুনরায় ময়নাতদন্ত করা হয়।
নিহত রায়হানের মরদেহে ১১১টি আঘাতের চিহ্ন উঠে এসেছে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে। এসব আঘাতের ৯৭টি ফোলা আঘাত ও ১৪টি ছিল গুরুতর জখমের চিহ্ন। এসব আঘাতগুলো লাঠি দ্বারাই করা হয়েছে। অসংখ্য আঘাতের কারণে হাইপোভলিউমিক শক ও নিউরোজেনিক শকে মস্তিষ্ক, হৃৎপিণ্ড, ফুসফুস, কিডনিসহ গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলো কর্মক্ষমতা হারানোর কারণে রায়হানের মৃত্যু হয়েছে।
এ ঘটনায় গত ২০ অক্টোবর দুপুরে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনে রায়হান আহমদ হত্যা মামলায় ওই ফাঁড়ির কনস্টেবল টিটু চন্দ্র দাসকে ও ২৩ অক্টোবর কনস্টেবল হারুনুর রশিদকে গ্রেফতারের পর পাঁচদিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। রোববার (২৫ অক্টোবর) কনস্টেবল টিটুকে ফের তিনদিনের রিমান্ডে নেয় পিবিআই।
ঘটনার দিন বিকেলে মহানগর পুলিশের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হলে রায়হানকে ফাঁড়িতে এনে নির্যাতনের প্রাথমিক প্রমাণ পায় কমিটি। তদন্ত কমিটির সুপারিশে বন্দরবাজার ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই আকবর হোসেন ভূইয়া, কনস্টেবল হারুনুর রশিদ, তৌহিদ মিয়া ও টিটু চন্দ্র দাসকে সাময়িক বরখাস্ত এবং এএসআই আশেক এলাহী, এএসআই কুতুব আলী ও কনস্টেবল সজিব হোসেনকে প্রত্যাহার করে তাদের পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয়।
এছাড়া গত ২১ অক্টোবর এ ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়াকে ফাঁড়ি হতে পালাতে সহায়তা করা ও তথ্য গোপনের অপরাধে বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়ির টু আইসি এসআই হাসান উদ্দিনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।