হল-মার্কের সঙ্গে সমঝোতার অভিযোগ ভিত্তিহীন

ডেস্ক রিপোর্ট : হল-মার্কের কারখানা চালু নিয়ে অর্থমন্ত্রীর মন্তব্য নিয়ে সংবাদমাধ্যমে যে নানা প্রশ্ন উঠেছে এবং হল-মার্কের সঙ্গে সমঝোতা বা সরকার হল-মার্কের বিষয়ে নমনীয় হচ্ছে বলে যে অভিযোগ উঠেছে তা সত্য নয়। শনিবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয় এমন দাবি করেছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, হলমার্কের পক্ষ থেকে ‘৪০ হাজার শ্রমিক পরিবার রক্ষা ও পাঁচশ’ কোটি টাকার মূল্যবান যন্ত্রপাতিসহ পাঁচ হাজার ছয়শ’ কোটি টাকার সম্পদ সুরক্ষা ও বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের পথ উন্মুক্ত রেখে গার্মেন্টস শিল্পকে ধ্বংসের হাত থেকে বাঁচান’ সংক্রান্ত একটি আবেদন প্রধানমন্ত্রী ও অর্থমন্ত্রী বরাবরে পেশ করা হয়। এই আবেদনের প্রেক্ষিতে অর্থ মন্ত্রণালয় ১৯ মার্চ, ২০১৩ তারিখে সোনালী ব্যাংক-কে নিম্নোক্ত স্মারক প্রেরণ করে।
‘হল-মার্ক গ্রুপের যাবতীয় সম্পদ ও আয়-ব্যয়ের একটি বিবরণী এবং হল-মার্ক গ্রুপের সম্পদ হতে কিভাবে সোনালী ব্যাংক লি. এর সকল দায়-দেনা নিয়মিত করে ব্যাংকিং কার্যক্রম চালুসহ হল-মার্ক গ্রুপের ব্যবসায়িক কার্যক্রম পুনরায় চালু করা যায়, সে বিষয়ে স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি প্রতিবেদন জরুরিভিত্তিতে এ বিভাগে প্রেরণের জন্য অনুরোধ করা হলো।’
হল-মার্ক ব্যাপক জালিয়াতি ও অর্থপাচার করেছে এ জন্য এ বিষয়ে দুদক মামলা করেছে। হল-মার্কের বিভিন্ন কর্মকর্তা এমনকি মহাব্যবস্থাপক পর্যায়ের কর্মকর্তাকে শাস্তি দেয়া হয়েছে, অনেকে জেলে আছে। হল-মার্ক পরিচালনার সঙ্গেও জড়িত অনেকে জেলে আছে। ব্যাংকের কর্মকর্তা যারা প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে এ কেলেঙ্কাকারিকে সহায়তা করেছে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, হল-মার্ক কেলেঙ্কাকারিতে সংশ্লিষ্ট কাউকে রক্ষা করার কোনো উদ্দেশ্য সরকারের নেই। অর্থ মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে যে নির্দেশনা দিয়েছে সেদিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হচ্ছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, হল-মার্কের যেসব পণ্য উৎপাদনের কারখানা রয়েছে সেগুলোকে চালু করার বিষয়টি বিবেচনা করা হোক। চালু এসব কারখানায় পণ্য উৎপাদন করলে হল-মার্কের যেমন আয় হবে তেমনি অনেক শ্রমিকের কর্মসংস্থান হবে এবং পাশাপাশি সোনালী ব্যাংকেরও পাওনা আদায়ের ব্যবস্থা হবে। এ বিষয়ে অর্থমন্ত্রী গত ১২ মার্চ ২০১৩ তারিখে হল-মার্কের বিষয়ে আবেদনের ওপর মন্তব্যে বলেছেন, ‘এতবড় জালিয়াত দস্যুর সম্পদ বিবরণী বা আয়-ব্যয়ের হিসাব কি কেউ প্রস্তুত করেছেন। সোনালী ব্যাংকেরই তো মূল দায়িত্ব। সেখানে কি করে সনাক্তকৃত সম্পদের সদ্বব্যবহার হতে পারে তা দেখা দরকার। সেজন্য প্রয়োজনে প্রশাসক দিয়ে কারখানা চালু করার চিন্তা করতে হবে। এ বিষয়ে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ প্রতিবেদন সোনালী ব্যাংক হতে চাওয়া যেতে পারে।’ সংবাদমাধ্যমের ‘অর্থ মন্ত্রণালয় হল-মার্কের বিষয়ে নমনীয় হচ্ছে’ এ ধরনের অভিযোগের কোনো ভিত্তি নেই দাবি করে বিবৃতিতে বলা হয়, হল-মার্কের কারখানা কিভাবে চালু করা হবে সে বিষয়ে সোনালী ব্যাংকের সুপারিশ এখনও মন্ত্রণালয়ে আসেনি এবং এ সুপারিশ পাওয়ার পরেই মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারে।
এতে বলা হয়, হল-মার্ক বিষয়ে মন্ত্রণালয়ের নীতি হচ্ছে হল-মার্ক হোতাদের জালিয়াতি ও দুর্নীতির শাস্তি দিতে হবে। এ জালিয়াতির সঙ্গে যারা সম্পৃক্ত অর্থাৎ হল-মার্কের পরিচালনা পর্ষদ থেকে ব্যবস্থাপনা পর্যন্ত এবং ব্যাংকের বিভিন্ন স্তরের যেসব কর্মকর্তা জড়িত তাদেরও শাস্তি দিতে হবে।
‘হল-মার্কের যেসব কর্মকাণ্ড কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করে এবং আয়ের পথ তৈরি করে সেবিষয়ে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিতে হবে এবং প্রয়োজনে সেজন্য প্রশাসক নিয়োগ করা হতে পারে’ বিবৃতিতে বলা হয়।