বেগম জিয়ার কাঁধে জামায়াত-শিবির নামের দু’শয়তান ভর করে আছে–সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এমপি

সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা : দপ্তরবিহীন মন্ত্রী সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এমপি বলেছেন, বিরোধীদলীয় নেত্রীর উস্কানি দেশে আজ নৈরাজ্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। এভাবে তাদের উস্কানীতে আস্কারা পাচ্ছে জামায়াত-শিবিরচক্র। জামায়াত-শিবিরের কাঁধে ভর করে তিনি ক্ষমতার মসনদে বসার স্বপ্নে বিভোর। দেশের গণতান্ত্রিক সরকারকে অগণতান্ত্রিক পন্থায় হঠিয়ে ক্ষমতায় বসার স্বপ্ন খালেদা জিয়ার কখনো পূরণ হবে না। সিঙ্গাপুর থেকে আসার পর বেগম জিয়ার কাঁধে দু’শয়তান ভর করে আছে, একটি জামায়াত ও অপরটি শিবির। বিরোধীদলীয় নেত্রীর প্রতি ইঙ্গিত করে তিনি আরো বলেন, নৈরাজ্যের সৃষ্টির মাধ্যমে কোন গণতান্ত্রিক সরকারকে ক্ষমতা চ্যুত করা যায়না- এ কথা বিরোধীদলীয় নেত্রীর জানা নেই। আর জানবেনই বা কিভাবে। বেগম জিয়াতো দু’ক্লাস কম মেট্রিক পাশ করেছেন। তিনি আরো বলেন, জিয়াউর রহমান সরকার আইন করে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিচারকার্যের পথ বন্ধ করে দিয়েছিলেন। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় এসে সব বাঁধা অতিক্রম করে খুনিদের ফাঁসি কার্যকর করে দেশকে কলংকমুক্ত করেছেন। তিনি হুসিয়ার করে বলেন, তরুন প্রজন্ম জেগেছে নতুন চেতনায়। যুদ্ধাপরাধিদের বিচার ঠেকানো কারো পক্ষে সম্ভব নয়। এরা ৭১’এ পরাজিত হয়েছে এবারো পরাজিত হবে। মনে রাখবেন বাঘে ধরলে বাঘে ছাড়ে শেখ হাসিনা ধরলে আর ছাড়েনা। গতকাল রোববার দুপুরে ছাতক-দোয়ারা আ’লীগ ও অঙ্গ-সংগঠনের উদ্যোগে ছাতক হাইস্কুল মাঠে যুদ্ধাপরাধিদের ফাঁসি ও জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধের দাবীতে গণমিছিল পূর্ব গণসমাবেশে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখছিলেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মতিউর রহমান এমপি বলেন, জামায়াতের সাথে ইসলাম শব্দটি যুক্ত করতে আমার খুব কষ্ট হয়। ইসলাম হলো বিশ্বে প্রতিষ্ঠিত শান্তির ধর্ম। জামায়াত-শিবিরের সাথে ইসলামের কোন সম্পর্ক নেই। তারা ইসলামের পরম শত্রু। মুহিবুর রহমান মানিক এমপি বলেন, ছাতক-দোয়ারার মানুষ ৭১’র চেতনায় বিশ্বাসী। মুক্তিযুদ্ধের সাথে এ অঞ্চলের মানুষের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। ৭১’র পরাজিত প্রেতাত্মারা আবারো আমাদের প্রিয় জাতীয় পতাকা পুড়িয়েছে ও শহীদ মিনার ভাংচুরসহ দেশে নৈরাজ্যের সৃষ্টি করে যাচ্ছে। তারা এ দেশকে পাকিস্তান বানাতে চায়। এ সকল নৈরাজ্যকর কর্মকান্ড প্রতিহত করতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে ছাতক-দোয়ারাসহ দেশবাসী আজ ঐক্যবদ্ধ। ব্যারিষ্টার এনামুল কবির ইমন তার বক্তব্যে বলেন, এ দেশের যুব শক্তি ৫২’তে বিজয়ী হয়েছে। ৬৯’র গণঅভূত্থান, ৭০’র নির্বাচন ও ৭১’র স্বাধীনতায় বিজয় লাভ করেছে। এবারো জামায়াত-শিবিরকে পরাভূত করে দেশে শান্তি ফিরিয়ে আনবে। এ জন্য দেশের সকল যুব সমাজকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে রাজাকারমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার শপথ নিতে হবে। উপজেলা আ’লীগের আহবায়ক লুৎফুর রহমান সরকুমের সভাপতিত্বে ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফজলুর রহমানের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, দিরাই পৌরসভার চেয়ারম্যান আজিজুর রহমান বুলবুল, দোয়ারা উপজেলা আ’লীগের আহবায়ক ইদ্রিস আলী বীর প্রতিক, সিলেট জেলা যুবলীগের সভাপতি, সিটি কাউন্সিলর জগদীশ দাস, আ’লীগ নেতা এডভোকেট রাজ উদ্দিন, দিরাই উপজেলা আ’লীগের সভাপতি আলতাব উদ্দিন, আ’লীগ নেতা অধ্যক্ষ সুজাত আলী রফিক, ছাতক উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আনোয়ার রহমান তোতা মিয়া, আ’লীগ নেতা আবরু মিয়া তালুকদার প্রমুখ। এ সময় দোয়ারা উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হারুন মিয়া, সাবেক পৌর চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবদুল ওয়াহিদ মজনু, আ’লীগ নেতা ছানাউর রহমান ছানা, সৈয়দ আহমদ, ইউপি চেয়ারম্যান আফজাল আবেদীন আবুল, বিল্লাল আহমদ, মাস্টার আওলাদ হোসেন, হাবিবুর রহমান, আ’লীগ নেতা সামছুজ্জামান রাজা, যুবলীগ নেতা আবু সাদত লাহিন, সাব্বির আহমদ, বাবুল রায়, ছাত্রলীগ নেতা এডভোকেট ছায়াদুর রহমান ছায়াদ, হাজী জয়নাল আবেদীনসহ আ’লীগ ও অঙ্গ-সংগঠনের কয়েক হাজার নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। এর আগে গণমিছিলে যোগদিতে ছাতক-দোয়ারার প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে নেতাকর্মীরা মিছিল সহকারে ছাতক হাইস্কুল মাঠে আসতে থাকে। বেলা বাড়ার সাথে-সাথে গোটা পৌর শহর মিছিলে-মিছিলে মুখরিত হয়ে উঠে। বিভিন্ন সাজে, ব্যানার-ফেস্টুন, প্লে-কার্ড হাতে নিয়ে নেতাকর্মীরা বাদ্যযন্ত্র বাজিয়ে গণমিছিল যোগ দেয়। বিকেল ৩টায় গণমিছিল পূর্ব সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয় ছাতক হাইস্কুল মাঠে। সমাবেশ শেষে সুরঞ্জিত সেনগুপ্ত এমপি, মতিউর রহমান এমপি, মুহিবুর রহমান মানিক এমপির নেতৃত্বে গণমিছিল শহর প্রদক্ষিণ শেষে সভাস্থলে এসে শেষ হয়।