জুড়ীর ভোগতেরা কমিউনিটি ক্লিনিক এখন গরিবের হাসপাতাল

জালাল আহমদ, মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি : মৌলভীবাজারের জুড়ীতে সরকারি হাসপাতাল নেই। নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের অনত্ম:স্বত্তা নারীদের প্রসবব্যথা শুরু হলে ভরসা পাড়াগাঁয়ের ভোগতেরা কমিউনিটি ক্লিনিক। এটি জুড়ী উপজেলার সদর জায়ফরনগর ইউনিয়নের ভোগতেরা গ্রামে অবস্থিত। এ ক্লিনিকে প্রায় ১৩ মাসে ২০৭ জন নবজাতকের জন্ম হয়েছে। ক্লিনিকে অস্ত্রোপচারের ব্যবস্থা না থাকলেও সেখানে নিয়োজিত চিকিৎসক ও কর্মীদের স্বাভাবিক প্রসবের ওপর দক্ষতা আছে। ক্লিনিকটির খ্যাতি এখন আর শুধু এলাকায় সীমাবদ্ধ নেই। আশপাশের এলাকাতেও ছড়িয়ে পড়েছে। এলাকাবাসী ও কমিউনিটি ক্লিনিক সূত্র জানায়, ২০০৮ সালে জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিলের (ইউএনএফপিএ) অর্থায়নে ঠাকুরগাঁও, নড়াইল, জামালপুর ও মৌলভীবাজারের বিভিন্ন সদর হাসপাতাল, মাতৃমঙ্গল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপেস্নক্স এবং কমিউনিটি ক্লিনিকে মা ও নবজাতকের স্বাস্থ্য সেবা বিষয়ক কর্মসূচি শুরু হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে ভোগতেরা কমিউনিটি ক্লিনিকেও কার্যক্রমটি শুরু হয়। ২০১২ সালের ১২ জানুয়ারি উপজেলার কালিনগর গ্রামের কুদ্দুস আলীর স্ত্রী পিয়ারা বেগম প্রথম ওই ক্লিনিকে একটি সনত্মান জন্ম দেন। সর্বশেষ ১০ মার্চ কুলাউড়া উপজেলার কাদিপুর গ্রামের আসুক মিয়ার স্ত্রী সুমি বেগম এখানে একটি সনত্মান জন্ম দেন। ভোগতেরা কমিউনিটি ক্লিনিকে দায়িত্বে থাকা চিকিৎসা কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম জানান, শুরুতে কমিউনিটি ক্লিনিকের কার্যক্রম সম্পর্কে স্থানীয় লোকজনের তেমন একটা ধারণা ছিল না। উঠান বৈঠকসহ সচেতনতামূলক কার্যক্রমের মাধ্যমে স্থানীয় লোকজনকে এ ব্যাপারে সচেতন করা হয়। ধীরে ধীরে লোকজনের আগ্রহও বাড়তে থাকে। তাঁর দেওয়া পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১২ সালে ক্লিনিকে ৮৪ জন ছেলে ও ৭৯ জন মেয়ে এবং চলতি বছর ১ জানুয়ারি থেকে ২২ মার্চ পর্যনত্ম ২৫ জন ছেলে ও ২২ জন মেয়ের স্বাভাবিক প্রসব হয়েছে। ওই ক্লিনিকে প্রথম জন্ম দেওয়া সনত্মানের মা পিয়ারা বেগম বলেন, এইটা তো গরিবর আসপাতাল (হাসপাতাল)। পেরাইভেট (বেসরকারি) আসপাতালে গিয়া ডেলিভারি (প্রসব) করাইতে ডাক্তারদের অনেক টেখা (টাকা) দিতে অয় (হয়)। আমরার মতো মানুষে অতো টেখা পাইমু কই? উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা সারোয়ার হোসেন বলেন, এই ক্লিনিককে আমরা সারা দেশে একটি মডেল হিসেবে উপস্থাপন করতে চাচ্ছি।