জুড়ীতে টমেটো ও করলা চাষ করে লাভবান কলেজ ছাত্র রুবেল

মৌলভীবাজার জেলা প্রতিনিধি : মৌলভীবাজারের জুড়ীতে টমেটো ও করলা চাষ করে লাভবান হয়েছে কলেজ ছাত্র জহিরুল ইসলাম রুবেল। রোববার সকালে উপজেলার জায়ফরনগর ইউনিয়নের দক্ষিণ জাঙ্গীরাই গ্রামে গেলে চোখে পড়ে রুবেলের সবজি বাগানের দৃশ্য। ওই সবজি বাগান পরিদর্শনকালে ওই গ্রামের আবুল কাসেমের ছেলে জুড়ী টিএন খানম একাডেমী ডিগ্রি কলেজের বিএ ১ম বর্ষের ছাত্র রুবেল জানায়, তার পিতা নিজ উদ্যোগে প্রায় ১৫ বছর পূর্বে বাড়ি সংলগ্ন ১ কেদার জমিতে ধান চাষ করতেন। ধান চাষ করে তেমন লাভবান হতেন না তিনি। হঠাৎ একদিন তার পিতার মাথায় বুদ্ধি আসে ওই জমিতে তিনি টমেটোসহ অন্যান্য সবজি চাষ করবেন। যে কথা সে কাজ, তিনি ১৯৯৮ সাল থেকে ধানী জমিতে টমেটো, করলা ও মরিচ চাষ শুরু করেন। এরপর তাতে উন্নত পরিচর্যার মাধ্যমে ভালো ফলন পেয়ে আয়ের পথ বাড়াতে থাকেন। যার ফলে, কাসেমের পরিবার সুখে শানিত্মতে জীবন-যাপন করতে থাকে। তার এ সবজি চাষের খবর জানাজানি হলে উদ্বুদ্ধ হয়ে জাঙ্গীরাই গ্রামসহ আশপাশের অনেক কৃষক সবজি চাষে নিজেদের মনোনিবেশ করে ভাগ্য বদলাতে চেষ্টা চালান। বিগত কয়েক বছর আগে আবুল কাসেম কিছুটা অসুস্থ হয়ে পড়লে তার কলেজ পড়ুয়া ছেলে রুবেল পিতার পরিবর্তে ২০০৯ সাল থেকে অদ্যাবধি ওই জমিতে ইপক, রাজা জাতের টমেটো ও লালতীরের টিয়া পাখি মার্কা হাইব্রীড জাতের করলা চাষে নিজের শ্রমকে কাজে লাগায়। রুবেল কলেজ থেকে বাড়ি এসে ওই সবজি জমিতে নিজেকে মনোনিবেশসহ অক্লানত্ম শ্রম দিতে থাকে। যার ফলে প্রতি বছরই পর্যাপ্ত পরিমাণ টাকা আয় হয় তাদের। গত বছর ওই জমি থেকে খরচ বাদে প্রায় লক্ষাধিক টাকা আয় হয়েছে। সরেজমিন গিয়ে একানত্ম আলাপচারিতায় রুবেল তার পিতাকে অনুসরণ করে বাণিজ্যিকভাবে এ পথ বেছে নেয় বলে সে অকপটে জানায়। এ কাজে লেখাপড়ার কোন ক্ষতি হয় কি না জানতে চাইলে সে জানায়, ক্ষতি হওয়ার কোন কারণ নেই বরং আমাদের পরিবার বেশ লাভবান হচ্ছে। রুটিন মাফিক সবকিছু করি। পড়ার সময় পড়া আর অবসর হলে সবজি জমিতে সময় দিই। অভিভাবকের কাছে শিক্ষার খরচের জন্য ধর্ণা দিতে হয় না। এটাই আমার জন্য স্বার্থক। সে আরো জানায়, উৎপাদিত সবজি স্থানীয় বাজারের পাইকারসহ দূর-দূরানেত্মর পাইকাররা জমি থেকে ক্রয় করে নিয়ে যান। এ বছর ২০ হাজার টাকা খরচ বাদে রুবেল ওই জমি থেকে দেড় লাখ টাকা সবজি বিক্রি করেছে। বর্তমানে জমিতে অবশিষ্ট যে টমেটো ও করলা আছে তা আরো ২০ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারবে। এ ব্যাপারে জুড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মীর বজলুর রশীদ ও উপ-সহকারী মীর হোসেন বলেন, রুবেলের সবজি জমি কয়েকবার পরিদর্শন করে উন্নত ফলনে পরামর্শ দিয়েছি। তার সৃজিত সবজি জমি অন্য চাষীদের জন্য অনুসরণীয় দৃষ্টানত্ম হয়ে থাকবে বলে আমরা মনে করি।