বড়লেখায় ভূমিহীনদের জন্যে বরাদ্দকৃত খাসজমি দখলের মহোৎসব
বড়লেখা প্রতিনিধি : বড়লেখায় সরকারি খাস জমি দখলের মহোৎসব শুরম্ন হয়েছে। প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় উক্ত ভূমি দখল করে ঘর নির্মাণ চলছে। জেলা প্রশাসকসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ দিলেও অবৈধ দখল বন্ধ হয়নি। বরং তা দিন দিন বেড়েই চলেছে। অভিযোগ রয়েছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রভাবশালী কতিপয় নেতা পস্নট আকারে উক্ত খাস ভূমি বিক্রি করছেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, উপজেলার সুজানগর ইউনিয়নের বড়থল এলাকায় হ্যালিপ্যাড সংলগ্ন সরকারি খাসজমিতে ২০০৪ সালে তৎকালীন সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্প-২ এর আওতায় আদর্শ গ্রাম নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয়। তাতে এলাকার ছিন্নমূল ভূমিহীন ৪০ পরিবারকে পুর্নবাসন করা হয়। ভূমিহীন পরিবারগুলোর সুবিধার্থে পৃথক সরকারি ভূমিতে মসজিদ ও কবরস্থান নির্মাণ করা হয়। কমিউিনিটি সেন্টার নির্মাণের জন্য স্থান নির্ধারন করে রাখা হয়। চলতি বছরের ২০ জানুয়ারি রাতের আঁধারে জনৈক লিয়াকত আলী হ্যালিপ্যাডের উত্তর পশ্চিম পাশের খাসজমি দখল করে ঝুপড়ি ঘর তৈরি করলে আদর্শ গ্রামের বাসিন্দারা জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দেন। পরদিন থেকে খাসজমি দখলের মহোৎসব শুরম্ন হয়ে যায়।
গত সোমবার সরেজমিনে গেলে মূল হ্যালিপ্যাডের পশ্চিম পাশের উঁচু মাটি কেটে ১৫ টি ঝুপড়ি ঘরের অবস্থান পাওয়া যায়। দখলকারীদেরও ঘরে কাজ করতে দেখা গেছে। দক্ষিণ পাশে কমিউনিটি সেন্টারের নির্ধারিত স্থান দখল করে ঘর নির্মাণে ব্যসত্ম দেখা যায় ছকিনা বেগম ও নিলুফা বেগম নামের দুই মহিলাকে। তারা জানায়, তাদের ঘরবাড়ি না থাকায় অনেকের মত তারা পতিত জায়গায় ঘর বানাচ্ছেন।
আদর্শ গ্রামের বাসিন্দারা জানান, আছিয়া বেগম, শামীম আহমদ, আবুল লেইছ, হেলাল আহমদ, মাতাব আহমদ, রম্নবি বেগম, শানিত্ম বেগম, তখলিছ আলী প্রমুখ গংরা রাতের আঁধারে সরকারি খাসভূমি দখল করে ঘর নির্মাণ করেন। প্রত্যক্ষদর্শী এলাকাবাসী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ২/৩টি অবৈধ ঘর নির্মাণের খবর পেয়ে জানুয়ারি মাসের শেষ সপ্তাহে বড়লেখা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ আমিনুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে অবৈধ ঘর ভাঙ্গার নির্দেশ দেন। কিন্তু ওই রাতেই আরো কয়েকটি ঘর নির্মাণ করা হয়। দখলের মহোৎসব শুরম্ন হলে এলাকাবাসী গত ১৩ মার্চ ইউএনও বরাবরে পৃথক আরেকটি অভিযোগ দেন। কিন্তু দখল বন্ধ হয়নি। সূত্র জানায়, স্থানীয় দুই আওয়ামীলীগ নেতা বিশ হাজার টাকার বিনিময়ে একেকটি পস্নট অবৈধ দখলদারদের বুঝিয়ে দিয়েছেন। এরা স্থানীয় সংসদ সদস্যের ঘনিষ্ঠজন হওয়ায় প্রশাসনও পড়েছে মহাবিপাকে।
এ ব্যাপারে ইউএনও সৈয়দ আমিনুর রহমান জানান, বারবার নিষেধ করা সত্ত্বেও ওরা ঘরগুলো সরায়নি। উপজেলা প্রশাসন ইতোমধ্যে উচ্ছেদ তালিকা তৈরি করে জেলা প্রশাসনের অনুমোদন নিয়েছে। ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগের পরই এগুলো উচ্ছেদ করা হবে। তবে স্থানীয় সংসদ সদস্য আলহাজ্ব শাহাব উদ্দিন দলের কেউ জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেন।