এমপি’র সামনে দু-পা তুলে বসায় চালক শ্রীঘরে!

বিশ্বনাথ প্রতিনিধি : বিশ্বনাথে স্থানীয় সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরীর সামনে পায়ের ওপর পা তুলে বসায় এক অটোরিক্সা চালককে থানা পুলিশ আটক করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রবিবার রাত ৯টায় উপজেলা সদরের থানার সামনে অটোরিক্সা ষ্ট্যান্ডের বাবুল মিয়ার চায়ের দোকানে এঘটনা ঘটে। আটককৃত অটোরিক্সা চালক হলেন উপজেলা সদরের থানার সামনের অটোরিক্সা ষ্ট্যান্ডের শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ইমরান আহমদ রুণু (২৫)। সোমবার বিকেলে তাকে আদালতে প্রেরণ করে থানা পুলিশ।তবে পুলিশ বলছে, গত বছরের ২৩ এপ্রিল নিখোঁজ বিএনপি নেতা ইলিয়াস আলীর সন্ধান দাবিতে সহিংসতার ঘটনায় দায়েরকৃত একটি মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। দীর্ঘ এক বছর পূর্বের রাজনৈতিক মামলায় অটোরিক্সা চালক কে গ্রেফতার করায় এনিয়ে উপজেলার সবত্রই চলছে আলোচনা-সমালোচনা। এনিয়ে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে দেখা দিয়েছে নানান প্রশ্ন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও গাড়ি চালকরা জানান, স্থানীয় ক্ষমতাশীন দলের সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান চৌধুরী রবিবার রাত ৯টায় উপজেলার মান্দারুকা থেকে সভা শেষে সিলেট শহর যাওয়ার পথে বিশ্বনাথ থানার সামনে এসে তাঁর গাড়িটি থামায়। এসময় সাংসদ গাড়ি থেকে নেমে এলাকার কয়েক জনের সাথে কথা বলছিলেন। থানার সামনে অটোরিক্সা ষ্ট্যান্ডের পাশে ভাসমান বাবুল মিয়ার চায়ের দোকানে চালক ইমরান আহমদ রুণু একটি চেয়ারে বসে পায়ের ওপর পা তুলে মোবাইলে কথা বলছিলেন। শফিকুর রহমান চৌধুরীর গাড়ি চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর থানার উপ-পরিদর্শক শরিফ মিয়া ওই চালক ডেকে থানায় নিয়ে যান। পরে তাকে লকাপে ডুকিয়ে দেওয়া হয়। এনিয়ে অটোরিক্সা চালকদের মধ্যে বিরাজ করছে ক্ষোভ। অটোরিক্সা চালক কে আটকের ফলে এলাকায় ধ্রমজাল সৃষ্টি হয়েছে।
এখবর রাতেই উপজেলার সবত্রই ছড়িয়ে পড়লে এনিয়ে বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ কানাঘোষা করতে খবর পাওয়া গেছে। তবে রাতভর তাকে ছাড়িয়ে নেওয়ার জন্য অটোরিক্সা চালকরা অনেক চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন।
নাম প্রকাশেঅনুচ্ছক কয়েকজন অটোরিক্সা চালক জানান, এমপি’র সামনে পায়ের ওপর পা তুলে বসার অভিযোগে তাকে আটক করা হয়েছে। এমপি’র নির্দেশে পুলিশ তাকে আটক করেছে বলে তারা জানান। এখন থেকে চেয়ারও বসা যাবেনা। আটককৃত চালক সে কোন রাজনীতি দলের নেতাও নয়। তারপরও তাকে রাজনৈতিক মামলায় আসামি করে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। এঘটনায় অটোরিক্সা চালকরা বিভিন্ন কর্মসূচি দিতে পারেন বলেও তারা জানান।
আটক ইমরান আহমদ রুণু বলেন, রবিবার রাতে ষ্ট্যান্ডের সামনে চায়ের দোকানের একটি চেয়ার বসে মোবাইল টিপ ছিলাম। কিন্তু কখন যে এমপি সাহেবের গাড়ি সামনে এসে থামায় তা দেখত পাইনি। হঠাৎ থানার পুলিশ আমাকে থানার ভিতরে নিয়ে যান। পরে আমাকে রাজনৈতিক মামলায় আসামি করা হয়। ফলে রাজনীতি না করেও রাজনৈতিক মামলায় আসামি হয়েছি।
উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক বাবুল আখতার বলেন, এমপি সাহেবের বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সঠিক নয়। তাদের অভিযোগ মিথ্যা বানোয়াট। পুলিশ গাড়ি চালককে কি কারণে আটক করেছে তা জানা নেই। তবে শুণেছি বিশ্বনাথ থানায় সহিংসতার ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বিশ্বনাথ থানার পরিদর্শক আবুল কালাম আজাদ বলেন, গত বছরের ২৩ এপ্রিল সহিংসতার ঘটনায় দায়েরকৃত একটি মামলার তাকে গ্রেফতার করা হয়। সোমবার বিকেলে তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে।