জুড়ীতে রেলসেতু ঘেঁষে মাটি কেটে অবৈধ স্থাপনা নির্মাণ

কুলাউড়া প্রতিনিধি : মৌলভীবাজারের কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথের জুড়ী উপজেলা সদরের ডাকঘর সড়ক এলাকায় অবৈধভাবে রেলসেতু ঘেঁষে মাটি কেটে বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, ১০-১৫ দিন আগে উপজেলার সদর জায়ফরনগর ইউনিয়নের জাঙ্গিরাই গ্রামের উমেদ আলী শ্রমিকদের দিয়ে রেলসেতুর এক পাশের মাটি কাটান। পরে সেখানে টিনের দুটি দোকান নির্মাণ করা হয়। এ সময় এলাকার লোকজন বিষয়টি উপজেলা প্রশাসন ও পুলিশ কর্মকর্তাদের জানান। পরে কুলাউড়া রেলওয়ে (জিআরপি) থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। কিন্তু স্থাপনা অপসারণ করা হয়নি। গত শুক্রবার বেলা ১০টার দিকে সরেজমিনে দেখা গেছে, রেলসেতুর পাড় ঘেঁষে তিন-চার ফুট গভীর করে মাটি কাটা হয়েছে। এ কারণে সেতুতে লাগানো পুরোনো ইট বেরিয়ে পড়েছে। নবনির্মিত দোকানগুলো তালাবদ্ধ। কুলাউড়া জিআরপি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) স্বপন কান্তি বড়ুয়া বলেন, ‘উমেদ আলী ইজারার কাগজপত্র দেখানোয় আমাদের করার কিছু ছিল না।’ রেলওয়ের ভূসম্পত্তি বিভাগ ঢাকা কার্যালয়ের প্রধান সহকারী লুৎফুর রহমান বলেন, ‘রেলসেতু বা রেলপথের পাশে মাটি কেটে স্থাপনা নির্মাণ অবৈধ। রেলপথের ঢাল থেকে ১০ ফুট দূরত্বের জমি লোকজনকে কৃষিকাজের জন্য ইজারা দেওয়া হয়। বাণিজ্যিক স্থাপনা নির্মাণের জন্য কোনো জমি ইজারা দেওয়া হয় না।’ এ ব্যাপারে তিনি কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথের জমি দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা তাঁদের কার্যালয়ের জরিপকারকের (সার্ভেয়ার) সঙ্গে কথা বলতে অনুরোধ করেন। মুঠোফোনে জরিপকারক আমিন উদ্দিন বলেন, ‘আমি খোঁজ নিয়ে জেনেছি, স্থাপনাগুলো অবৈধ। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চিঠি দেওয়া হবে।’ তবে উমেদ আলী দাবি করেন, ২০ বাই ৩০ ফুটের কিছু জায়গা রেলওয়ের সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে ইজারা নিয়ে তিনি দোকান নির্মাণ করেছেন। ইজারার কাগজপত্রে জায়গাটি কৃষি, না বাণিজ্যিক উল্লেখ করা হয়েছে, সেটা তিনি বলতে পারেননি। ভুলে মাটি বেশি কেটে ফেলে পরে জায়গাটি ভরাট করে দেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, কুলাউড়া-শাহবাজপুর রেলপথের দৈর্ঘ্য প্রায় ৪২ কিলোমিটার। ১৯৮৮ সালে রেলওয়ের সংশিষ্ট প্রকৌশলীরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে রেলপথটি ট্রেন চলাচলের অনুপযোগী বলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন দেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২০০২ সালের দিকে এ পথে ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। বর্তমান সরকার রেলপথটি সংস্কার এবং আবার ট্রেন চলাচল চালু করতে ১১৭ কোটি টাকার একটি প্রকল্প গ্রহণ করেছে। অর্থ বরাদ্দ পাওয়া গেলে চলতি অর্থবছরেই কাজটি শুরুর সম্ভাবনা আছে।