অনিদিষ্ট কালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি বাইক্কা বিলের অভয়াশ্রমে ৩ কোটি টাকার মাছ লুট

অনিদিষ্ট কালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি বাইক্কা বিলের অভয়াশ্রমে ৩ কোটি টাকার মাছ লুটএম. মছব্বির আলী : এক সময়ের মৎস্য ভান্ডার বলে খ্যাত মৌলভীবাজার জেলার শ্রীমঙ্গলের হাইল হাওরের বাইক্কা বিলের মাছ লুট হয়ে গেছে। গত দুইদিনে লুটেরারা এখান থেকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে রুই, কাতলা, বোয়ায়, গনিয়া, মৃগেলসহ ছোট বড় দেশীয় মাছ। স্থানীয়রা বলেছেন প্রায় কোটি টাকার মাছ লুট করা হয়েছে। স্থানীয় রিপন মিয়া বলেন, তিন চার দিন ধরে বাইক্কবিলের মাছ ধরা শুরু হয়েছে। হাইল হাওরের সম্পদ ব্যবস্থাপনা কমিটির লোক জন প্রথমে মাছ ধরা শুরু করে। পরে তাদের দেখাদেখি অনন্যরা এই মাছ লুটে অংশ নেয়। গতকাল ১২ এপ্রিল শুক্রবার সকালে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ বাইক্কা বিল থেকে বিভিন্ন জাতের ৭৪ কেজি মাছ জব্দ করেছে।
হাইল হাওরের পূর্ব দিকের প্রায় একশ হেক্টর আয়তনের এই জলাশয়কে (বাইক্কা বিল) সরকারের ভূমি মন্ত্রণালয় ২০০৩ সালের ১ জুলাই মাছের স্থায়ী অভয়াশ্রম হিসাবে ঘোষনা দেয়। সে সময় মাচ প্রকল্প হাওরে মাছের স্থায়ী অভয়াশ্রম গড়ে তোলায় কার্যত্রুম শুরু করে। বর্তমানে হাইল হাওরের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় নিয়োজিত রয়েছে ইন্টিগ্রেটেড প্রটেকটেড এরিয়া কো-ম্যানেজমেন্টের (আইপ্যাক)। এছাড়া স্থানীয় মৎস্যজীবিদের দিয়ে ৪১ সদস্য বিশিষ্ট বড় গাঙিনা সম্পদ ব্যবস্থাপনা কমিটির নামে একটি সেচ্ছাসেবী সংঘটন গঠন করে দেয়া হয়েছে। আর মৎস্যজীবিদের মধ্যে থেকে মাসিক ৭ হাজার টাকা বেতনে বিলে ৭জন পাহাড়াদার রাখা হয়েছে। বাইক্কা বিলের জীব বৈচিত্র রক্ষায় নিয়েজিত স্থানীয় মৎস্যজীবিদের সংগঠন বড় গাঙিনা সম্পদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সম্পাদক মোঃ মিরাশ মিয়া বলেন, বাইক্কা বিলটি আর রক্ষা করা সম্ভব হয়নি। গত ১০ এপ্রিল বুধবার ছয় সাতশ মানুষ এক সাখে বিলে নেমে মাছ ধরে নিয়ে গেছে। গতকাল শুক্রবারও তিন সাড়ে তিনশ মানুষ মাছ ধরেছে। সম্পদ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি আব্দুস সোবহান চৌধুরী বলেন, এলাকাবীর আভিযোগটি মিথ্যা। আমাদের কমিটির সদস্যরা বিলের মরা পচাঁ মাছ বাজারে নিয়ে বিক্রি করেছে। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) মাহবুবুর রহমান খাঁন বলেন, বাইক্কা বিলের অবস্থা এখন কিছুটা ভাল। দুটি নিরাপত্তা চৌকি বসানো হচ্ছে।
শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আব্দুল্যাহ বলেন, হরতালের কারনে ঘটনার সঙ্গে সঙ্গে পর্যাপ্ত পুলিশ পাঠানো সম্ভব হয়নি। তবে এখন বাইক্কাবিলে পুলিশ রয়েছে। এরই মধ্যে ৭৪ কেজি মাছ জব্দ করা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আশফাকুল হক চৌধুরী বলেন, বিলে মাছ মারা বন্ধ আছে। গতকাল থেকে অবস্থা নিয়ন্ত্রনে আনতে ১৪৪ ধারা অনিদিষ্টকালের জন্য জারি করা হয়েছে।