কুলাউড়ায় দু’দফা ঘূর্ণিঝড়ে দুই শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত আহত ১৫ : প্রায় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি

জালাল আহমদ : মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার তিনটি ইউনিয়ন ও পৌরসভার ওপর দিয়ে সোমবার বিকেল ও মঙ্গলবার ভোরে দু’দফা প্রবল বেগে ঘূর্ণিঝড় বয়ে গেছে। এতে দুই শতাধিক ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উপড়ে পড়েছে গাছপালা ও বিদ্যুতের লাইনের খুঁটি। আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন। এমনকি রেহাই পায়নি পাখিও। ঘূর্ণিঝড়ের সাথে শিলাবৃষ্টিতে পাকা-আধাপাকা বোরো ধান ও সবজি ড়্গেতের ব্যাপক ড়্গতি সাধন হয়েছে। সবমিলিয়ে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ প্রায় কোটি টাকা ছাড়িয়ে যাবে। সোমবার বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে মঙ্গলবার রাত পর্যন্ত কুলাউড়ার মানুষ অন্ধকারের মধ্যে রয়েছেন। কখন তাদের অন্ধকার ঘরে আলো জ্বলবে তার সঠিক সময় জানাতে পারেনি পিডিবি কর্তৃপক্ষ। পৌর এলাকায় মঙ্গলবার সকালে ঘন্টাখানেকের জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হলেও গ্রামাঞ্চলের মানুষের ঘরে এখন পর্যন্ত বিদ্যুতের আলো জ্বলেনি। ঝড়ে বিপর্যস্ত বিদ্যুৎ লাইন মেরামত করে লাইন সচল করা হবে এ কথা জানিয়েছেন পিডিবির উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী স্বাগত সরকার। তবে কখন বিদ্যুৎ লাইন সচল হবে সঠিক সময় জানাতে পারেননি তিনি।
এলাকাবাসী সূত্র জানায়, সোমবার বিকেল ৪টা ও মঙ্গলবার ভোরে প্রবল বেগে ঘূর্ণিঝড় বয়ে যায়। এতে কুলাউড়া উপজেলার জয়চন্ডী, ব্রাহ্মণবাজার, রাউৎগাঁও এবং কুলাউড়া পৌর এলাকার অন্তত ৩০টি গ্রামের দুই শতাধিক ঘরবাড়ির ঘরের চালা উড়ে গেছে ও ধ্বসে পড়েছে কাঁচাঘরের বেড়া। শত শত গাছ ও বেশ কিছু বিদ্যুতের খুঁটি উপড়ে পড়ে পৌর এলাকাসহ বিভিন্ন এলাকার রাস্তাাঘাটে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। সওজ ও বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন রাস্তা থেকে দ্রুত গাছপালা ও খুঁটি সরালে যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল হয়। ঘূর্ণিঝড়ে আহতরা হলেন রাউৎগাঁও গ্রামের সমছিয়া বেগম (২৭), মিনা বেগম (২৫), আফসানা বেগম (১৮), ইমন (১৬), মুকুন্দপুর গ্রামের হোসেন আলী (৩২), অনন্ত মালাকার (৩২), বাদল মিয়া (২৮), শুকুর আলী (৩০), সেজু মিয়া (৩৫), কবিরাজি গ্রামের আব্দুল মতলিব ধলা মিয়া (৪০) এবং একাদত্তপুর গ্রামের আব্দুল খালিক মাস্টার (৩২)। আহতরা স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও ক্লিনিকে চিকিৎসা নিয়েছেন। ঝড়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে রাউতগাঁও ও জয়চন্ডী ইউনিয়ন দু’টি। এ দু’টি ইউনিয়নে ব্যাপক ঘরবাড়ির ক্ষতি হয়েছে বলে জানান চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল জামাল ও কামরম্নউদ্দিন কমরম্ন। তারা আরও জানান, সোমবার বিকেলে ঘূর্ণিঝড়ে আক্রান্ত হওয়ার সাথে সাথে উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানানোর পরও মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত সরকারিভাবে ড়্গতিগ্রস্তরা কোনো অনুদান পাননি। তবে তাদের ব্যক্তিগত সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামসুল হক জানান, ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিসংখ্যান চেয়ারম্যানদের নিকট থেকে নিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ত্রান বরাদ্দ করা হবে এবং তিনি মঙ্গলবার বিকেল ৩টায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক কামরম্নল হাসান জানান, উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে ঘটনাস্থল পরির্দশন শেষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।