বিভক্তির বেড়াজালে বাংলাদেশ

মাহমুদুর রহমান দিলাওয়ার : প্রিয় দেশ এক মহাসংকটের পথে। দিন যত যাচ্ছে, সংকট ঘনীভূত হচ্ছে। জনমনে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা কমছে না। অচিরেই সমস্যা সমাধানের কোনো আলামতও দেখা যাচ্ছে না। ২ এপ্রিল পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডা. দীপু মনির কাছে চিঠি লিখেছেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ ব্যারোনেস অ্যাস্টন। তিনি লিখেছেন, বাংলাদেশের সামপ্রতিক সহিংসতায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এই সহিংসতা বন্ধে রাজনৈতিক দলগুলোকে তাদের প্রভাব কাজে লাগানোর আহবান জানাই। তিনি আরও লিখেছেন, সংঘাতের পথ পরিহার করে আগামীতে একটি বিশ্বাসযোগ্য ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে গঠনমূলক সংলাপের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোকে আমরা আবারও আহবান জানাচ্ছি।
সমপ্রতি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুৃহিত কিছু আশার বাণী শুনিয়েছেন। তবে তার কথার উপর আস্থা রাখা কঠিন ব্যাপার। তার ইতিবাচক আশ্বাসের ব্যাপারে টিভি সাক্ষাৎকারে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. হোসেন জিল্লুর রহমান ভিন্নমত পোষণ করেছেন। তিনি বলেছেন, অর্থমন্ত্রীর কথায় আশ্বস্ত হওয়া যায় না। কেননা একেক সময় একেক মন্তব্য করে তিনি আপামর জনতার কাছে বিশ্বস্ততা হারিয়েছেন। তার মন্তব্য কখনো কখনো হাসির খোরাক হয়েছে। তাই তার মন্তব্যে আশ্বস্থ হওয়া দুরূহ ব্যাপার।
দেশে আজ বিভক্তি সুস্পষ্ট। দু’ভাগে বিভক্তির পথে প্রিয় মাতৃভূমি! যা প্রতি মুহুর্তে দেশপ্রেমিক বিবেকবান জনসাধারণকে মর্মাহত করছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ও যুদ্ধাপরাধ বিষয়ে বিভক্তি দেখা যাচ্ছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা নিয়ে সরকার ও বিরোধীদলের বিরোধ পরিলক্ষিত হচ্ছে। সমপ্রতি আরেকটি বিষয় বিভক্তির মাত্রা বৃদ্ধি করছে। আর তা হলো আস্তিক ও নাস্তিক প্রসঙ্গ।
১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধের মামলায় জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সাবেক আমীর অধ্যাপক গোলাম আজম, নায়েবে আমীর আল্লামা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী সহ আরও কয়েকজন শীর্ষ নেতাকে আটক করা হয়েছে। আটক আছেন বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও সাবেক মন্ত্রী আব্দুল আলিম। বর্তমানে তাদের বিচার কার্যক্রম চলছে। সরকার এ বিচার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ট্রাইব্যুনাল গঠন করেছে। সরকারের দাবী দেশীয় হলেও আন্তর্জাতিক মানের একটি ট্রাইব্যুনাল তারা গঠন করেছেন। তাদের দাবী, ট্রাইব্যুনাল অত্যন্ত শক্তিশালী ও নিরপেক্ষ। কিন্তু তাদের এ দাবী প্রত্যাখ্যান করেছে বিরোধী দল, অভিযুক্ত নেতৃবৃন্দ, তাদের আইনজীবি এবং পরিবার পরিজন।
স্কাইপি কথোপকথন জনসমক্ষে প্রকাশিত হওয়ায় বিচার কার্যক্রম নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ট্রাইব্যুনাল নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপিত হয়েছে, আস্থা ও বিশ্বাস হারিয়েছে। ট্রাইব্যুনাল প্রধানের পদত্যাগ ট্রাইব্যুনালের স্বচ্ছতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। যদিও সরকার অস্বচ্ছতার প্রশ্ন উড়িয়ে দিয়েছেন। দৃঢ়তার পরিচয় দিয়ে আইন সংশোধন পর্যন্ত করেছেন। দেশে-বিদেশে এ বিচার নিয়ে হট্টগোল চলছে। এ বিচারকে প্রহসনের বিচার হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়েছে। বলা হচ্ছে, এ বিচার পক্ষপাত দুষ্ট, এ বিচার রাজনৈতিক উদ্দেশ্য প্রণোদিত।
মানবতা বিরোধী অপরাধের বিচার কার্যক্রমে নতুন মাত্রা যোগ করেছে শাহবাগের আন্দোলন। জামায়াত নেতা আব্দুল কাদের মোল্লার রায়ের পর পরই শাহবাগে জড়ো হয়ে আন্দোলন শুরু করে কথিত গণ জাগরণ মঞ্চ। আন্দোলনের সূচনাতেই তারা বলে, রায়ে সরকার ও জামায়াতের মাঝে সমঝোতা হয়েছে। তাই তারা যাবজ্জীবন শাস্তির রায়কে প্রত্যাখ্যান করে ফাঁসির দাবীতে আন্দোলন শুরু করে। বলা হচ্ছে, তাদের আন্দোলনই পরবর্তী রায় তথা আল্লামা সাঈদীর রায়কে প্রভাবিত করেছে।
স্বাধীনতার চেতনা বুকে লালন করে, সেই শ্লোগান দিয়েই তারা তাদের আন্দোলন শুরু করে। শুরুতে কিছু জনপ্রিয়তা পেলেও দিনে দিনে তাদের সেই তথাকথিত গণজাগরণ মঞ্চ জনপ্রিয়তা শূন্য হয়ে পড়েছে। কেননা কিছুদিন যেতে না যেতেই তাদের স্বরূপ উন্মোচিত হয়ে যায়। তাদের লক্ষ্য-উদ্দেশ্য, মূল চেতনা ও দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশ পেয়ে যায়। কাদের পৃষ্ঠপোষকতায় তাদের এই আন্দোলন, তা বুঝতে এখন আর গভীর জ্ঞান বা সুক্ষ্ম পর্যবেক্ষণ শক্তির প্রয়োজন হবে না।
সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় ফুলে ফেঁপে ওঠেছে শাহবাগী আন্দোলন। তাদের আন্দোলন বিস্মৃতি লাভ করতে না করতেই, তাদের ভেতর থেকে ছড়িয়ে পড়লো নাস্তিকতার দুর্গন্ধ। ইন্টারনেট নির্ভর আন্দোলন করতে গিয়ে তারা বিপাকে পড়ে গেলো। থলের বিড়াল বেরিয়ে আসলো। জানা গেলো আন্দোলনকারীদের একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কর্মী ব্লগে নাস্তিকতার মানসিকতা প্রকাশে মত্ত। এমনকি প্রকাশিত হলো, তারা আল্লাহ তায়ালা, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা:), মানবতার মুক্তির ধর্ম ইসলাম ও কোরআন নিয়ে ধারাবাহিকভাবে কটুক্তি করে চলছে। তাদের ব্লগগুলোতে এমন কুরুচীপূর্ণ, অশ্লীল ও আপত্তিকর মন্তব্য করা হয়েছে, যা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না!
শহর-নগর ছাড়য়িে এসব তথ্য পৌঁছে গিয়েছে গ্রামে-গঞ্জে। সর্বত্র ক্ষোভ বিস্মৃতি লাভ করেছে। সরকার এ নিয়ে মহা বেকায়দায় পড়েছে। শাহবাগী আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক রাজীব হত্যার পর সরকার যে ভূমিকা পালন করেছে, তা আপামর জনতা মেনে নিতে পারেনি। সরকার দলীয় সাংসদরা আবেগাপ্লুত হয়ে রাজীবের পক্ষে অনবদ্য বক্তৃতা করেছেন। তারা সংসদে বক্তৃতার মাধ্যমে আপামর জনতাকে জানিয়ে দিলেন ব্লগার রাজীব দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের প্রথম শহীদ। কিন্তু সময়ের ব্যবধানে রাজীবের ‘থাক বাবা’ নামক ব্লগের লিখনী নিয়ে তোলপাড় শুরু হলো। তার কুরুচীপূর্ণ লিখনীতে বিক্ষোভে ফেটে পড়লো দেশের তৌহিদী জনতা। সরকারের কর্তা ব্যক্তিরা আত্মপক্ষ সমর্থন করে নানা যুক্তি উপস্থাপন করে বাঁচার চেষ্টায় আছেন, যদিও তা আজ প্রশ্নবিদ্ধ।
সাধারণ মানুষ পর্যন্ত বিস্ময় প্রকাশ করে বলছেন, খোদ প্রধানমন্ত্রী রাজীবের বাড়িতে গিয়ে সহমর্মিতা জানালেন, স্বাধীনতা বিরোধীদের উপর দোষ চাপালেন, বিচারের বাণী শুনালেন, কঠোর পদক্ষেপের আশ্বাস দিলেন। তিনি বললেন, স্বাধীনতা বিরোধীদের এদেশে রাজনীতি করার অধিকার নেই। বিরোধী দলের অনেক নেতাই বলেছেন, আমাদের আফসোস থাকতো না, যদি প্রধানমন্ত্রী বিশ্বজিত হত্যার পর বলতেন-ছাত্রলীগের রাজনীতি করার অধিকার নেই।
সমপ্রতি দেশে আস্তিক-নাস্তিক শব্দের ব্যবহার বেড়ে গিয়েছে। ব্লগে কটুক্তির বিরুদ্ধে সারাদেশে তৌহিদী ইসলাম প্রিয় জনতা জেগে উঠেছে। বিশেষ করে এ আন্দোলনের নতুন মাত্রা যোগ করেছে ‘হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ’। তৌহিদী জনতার নেতৃত্বে তারা সুপার পাওয়ার হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। ৬ এপ্রিলের জনসমুদ্রই তার বাস্তব প্রমাণ। হেফাজতের আমীর আল্লামা শাহ আহমদ শফীর নেতৃত্বে নাস্তিকদের বিরুদ্ধে তৌহিদী জনতার গণজাগরণ সৃষ্টি হয়েছে।
ব্লগে কটুক্তিকারী নাস্তিকদের বিচারের দাবী সহ ১৩ দফা দাবীতে ৬ এপ্রিল ঢাকা অভিমুখে লংমার্চের আহবান জানায় হেফাজতে ইসলাম। সরকার হেফাজতে ইসলামকে লংমার্চ করার অনুমতি প্রদান করে। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য লংমার্চকে ব্যাহত করার জন্য সরকারেরই অংশ কিছু নাম সর্বস্ব রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জোট হরতাল আহবান করে। ৫ এপ্রিল, শুক্রবার সন্ধ্যা ৬ টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত হরতালের ডাক দেয় তারা। সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় রাজধানী ঢাকাকে কার্যত সারাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়। এরপরও লাখো লাখো তৌহিদী ইসলামপ্রিয় জনতার উপস্থিতিতে স্মরণকালের সবচেয়ে বড় মহাসমাবেশ করে হেফাজতে ইসলাম। কেউ বলছেন, তাদের সমাবেশে উপস্থিতি ২৫/৩০ লাখ, কেউ কেউ বলেছেন, ২০ লাখের কম হবে না। যদিও এসব তথ্যের সাথে দ্বিমত করেছে সরকার। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর হিসেবে উপস্থিতি ছিল ১ লক্ষ। একটি বেসরকারী টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে তিনি এ তথ্য জানান।
হেফাজতে ইসলামের জনস্রোতকে ঠেকাতে সরকার অনেক পদক্ষেপ নিয়েছে। সরকারী পৃষ্ঠপোষকতায় নামধারী অনেক আলেমকে ব্যবহার করে অপপ্রচার চালানোরও চেষ্টা করা হয়। সমপ্রতি একটি টকশো দেখলাম। যেখানে উপস্থিত ছিলেন শোয়ালাকিয়ার ইমাম মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ ও হেফাজত নেতা মাওলানা শাখাওয়াত হোসাইন। হেফাজত নেতা তার বক্তৃতায় স্পষ্ট করে বলেন, ইসলাম ও কুরআন নিয়ে কটুক্তি করে এদেশে তসলিমা নাসরিন যে আসনে আসীন হয়েছিলো, আজ সেই পর্যায়ে আছেন মাওলানা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ। উপস্থাপিকা তাকে প্রশ্ন করলেন, এ কথা বলে আপনি কি বুঝাতে চাচ্ছেন, মাওলানা মাসউদ নাস্তিক? হেফাজত নেতা উত্তরে বললেন, জ্বী না, আমি বুঝাতে চাচ্ছি-নাস্তিক মোরতাদদের পক্ষাবলম্বন করে তিনি ঐ পর্যায়ে উপনীত হয়েছেন।
চারিদিকে অশান্তি আর অস্থিরতা বিরাজমান। শান্তি, নিরাপত্তা কিংবা শৃংখলা যেন গা ঢাকা দিয়েছে। সরকারী দলের নেতৃত্বে যারা আছেন, তারা আজ বেসামাল। মন্ত্রীদের লাগামহীন বক্তৃতা, বিবৃতি যেন সহিংসতা বাড়িয়ে দিয়েছে। যারাই তাদের বিরোধীতা করবেন, তারাই রাজাকার! বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকীকে তারা রাজাকার বলতে কুন্ঠাবোধ করেননি। এরই প্রেক্ষিতে আজ পাল্টাপাল্টি বক্তব্য শুনা যাচ্ছে। কাদের সিদ্দিকী যুক্তি ও প্রমাণ দিয়ে স্পষ্ট বলেছেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী একজন রাজাকার। সরকারের অনেক মন্ত্রী ও সাংসদেরা রাজাকার ছিলেন। আওয়ামীলীগ নেতাদের উদ্দেশ্য করে তিনি আরও বলেছেন, এতো বড় বড় কথা বলেন, কিন্তু আমরা জানি যুদ্ধের সময় অনেক নেতা কে কোথায় ছিলেন।
সমাধানের জন্য সংলাপের কথা বলা হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে সংলাপের কোন আলামত পরিলক্ষিত হচ্ছে না। বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল সহ ডজন খানেক শীর্ষ নেতা আজ কারাগারে। তাদের অনেককেই রিমান্ডে নেয়া হচ্ছে। শীর্ষ নেতৃবৃন্দকে ডান্ডাবেড়ি পরিয়ে আদালতে হাজির করা হয়েছে। চলমান পরিস্থিতি গণতন্ত্রকে বিপন্ন করছে। যার পরিণতি শুভ হতে পারে না।
হরতাল আজ নিয়মিত কর্মসূচীতে পরিণত হয়েছে। সরকারের মন্ত্রীরা বলছেন, হরতাল দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে ফেলছে। দেশের অপূরণীয় ক্ষতি হচ্ছে। যদিও বিরোধী দলে থাকা অবস্থায় তাদের ভূমিকা সবারই জানা। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, চলমান সংকট উত্তরণে সরকারকে আন্তরিক হতে হবে। সহনশীল হতে হবে। অন্যথায় কোনো সমাধান হবে না। বিএনপি নেতারা বলছেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা মেনে নিন, কোন সমস্যা থাকবে না। তারা বলছেন, দাবী মানলে হরতাল হবে না, আমাদের আন্দোলনের প্রয়োজন হবে না।
আমরা জানি না, ভবিষ্যতে কি হতে যাচ্ছে। এতোটুকু উপলব্ধি করছি, অন্ধকার ঘনীভূত হচ্ছে। অজানা গন্তব্যের পথে এগিয়ে চলছে প্রিয় দেশ। অজানা শংকা দূর হচ্ছে না। চোখ বন্ধ করে ভাবলে, গা শিউরে ওঠে। সমাধান কিভাবে হবে, কখন হবে-প্রশ্ন থেকে যাচ্ছে। আমরা আর কিছুই চাই না। চাই শান্তি, স্বস্তি ও নিরাপত্তা। আমরা চাই, হানাহানি, মারামারি ও বিশৃংখলা দূর হোক। চাই বিভেদমুক্ত বাংলাদেশ। চাই ঐক্যবদ্ধ প্রয়াস। আমাদের কামনা, সবাই মিলে দেশকে এগিয়ে নেবো। আমরা হতে চাই, পৃথিবীর বুকে মাথা উঁচু করা একটি সমৃদ্ধ জাতি; গর্বিত এক দেশের নাগরিক।