বিদ্যুৎ সমস্যা : আশার আলো সৌর বিদ্যুৎ

নাজমুল হক : বর্তমানে আমাদের দেশে বিদ্যুৎ সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করেছে। দিনের বেশিরভাগ সময় বিদ্যুৎ এর লুকোচুরি খেলায় অতিষ্ট হচ্ছে সাধারণ মানুষ। শহর ও গ্রামের বিদ্যুতের বৈষম্য চরম আকার ধারণ করেছে। শহরের মানুষ যেখানে বিদ্যুতে এসি চালাচ্ছে তখন গ্রামের সাধারণ মানুষ বাতি জ্বালাতে পারছে না। এমনি বাসত্মবতায় বিকল্প উৎস হিসাবে আর্বিভাব হয়েছে সৌর বিদ্যুৎ। নবায়নযোগ্য অফুরনত্ম শক্তির উৎস সূর্য শক্তিকে কাজে লাগিয়ে বিদ্যুত সমস্যা এ শক্তির মাধ্যমে মোকাবেলা করা সম্ভব। সৌর শক্তিকে পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজে লাগিয়ে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব। দেশের আমদানি নির্ভর জ্বালানি তেল অনেক কমিয়ে আনা সম্ভব।
মধ্য প্রাচ্যের অস্ত্র জ্বালানি তেল সংকটের কারণে বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান বিশ্বব্যাপী আজ এক বিরাট চ্যালেঞ্জ। তেল, গ্যাস, কয়লা ও ইউরেনিয়াম মজুদের ওপর নির্ভর করছে বিদ্যুৎ সমস্যার সমাধান। আমাদের দেশের বিদ্যুৎ শক্তি আজ কুইক রেন্টালের মাধ্যমে জ্বালানি তেলের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। অথচ এসব প্রচলিত জ্বালানি আগামী একশ-দেড়শ বছরের মধ্যে প্রায় শেষ হয়ে যাবে বলে আশাঙ্কা করা হচ্ছে। এ কারণে সারা দুনিয়ার মানুষ হন্যে হয়ে খুঁজছে বিকল্প জ্বালানির উৎস ও তার সর্বোত্তম ব্যবহার। নবায়নযোগ্য শক্তি সৌর, বায়ু, বায়োগ্যাস ব্যবহারে প্রযুক্তি থাকলেও উচ্চ মূল্যের কারণে উন্নয়নশীল দেশের জন্য সহজলভ্য নয়। তেমনি প্রযুক্তিবিদ্যার অভাবে ও প্রচার প্রচারণার অভাবে এগুলোর তেমন প্রসার ঘটছে না। সহজলভ্য প্রযুক্তি আবিষ্কার না হওয়া পর্যন্ত অফুরন্ত শক্তির উৎস নবায়নযোগ্য শক্তির ব্যবহার তেমন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে না।
তেল ও গ্যাস স্বল্পতায় ভোগা দেশগুলো তো বটেই, সব জ্বালানির পর্যাপ্ত মজুদ থাকা দেশগুলোও জ্বালানি নিরাপত্তার স্বার্থে বিকল্প শক্তি হিসেবে সৌর কিংবা বায়ু শক্তির সর্বোত্তম ব্যবহারে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনানুযায়ী বিভিন্ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। তারা এ জন্য বিভিন্ন পরীড়্গার মাধ্যমে অর্থ ব্যায়ও শুরম্ন করেছে। কিন্তু আমাদের দেশে আজো তা পুরোপুরি বাসত্মবায়ন হচ্ছে না। বিদ্যুৎ সমস্যায় বিকল্প শক্তি হিসাবে সৌর বিদ্যুৎ উপকুলীয় জেলায় যেখানে বিদ্যুতের আলো পৌছায় নি সেখানে জনপ্রিয় হলেও অন্যত্র হচ্ছে না। অবকাঠামো আর প্রচারের অভাবের ফলে আমরা ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছি।
আমাদের দেশে বিদ্যুৎ সংকটের কথা নতুন করে বলার কিছু নেই। এখনও উৎপাদনের সঙ্গে চাহিদার পার্থক্য প্রায় সরকারি হিসাবে ১,৫০০-২,০০০ মেগাওয়াট। কিন্তু বাসত্মবে লোডশেডিং এ দেখা যায় আরো অনেক। বাংলাদেশের মোট জনসংখ্যার মাত্র ৪৫ ভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে। মানুষের চাহিদার কারণে সরকার এক সময় বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া বন্ধ করে দেয়। ফলে সাধারণ বিদ্যুৎ প্রত্যাশী মানুষ চরম হতাশায় ভোগে। তাদের চাহিদার কারণে পার্থক্য পাগলা ঘোড়ার মতো প্রতিনিয়ত বেড়েই চলেছে। সরকার তাই বিদ্যুৎ সংকট মোকাবেলায় আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে বিদ্যুৎ আমদানি, পারমাণবিক বিদ্যুৎ, সৌরবিদ্যুৎ ইত্যাদির দিকে এগোচ্ছে। পণ্যের মতো পার্শবর্তী দেশ থেকে বিদ্যুৎ আমদানী করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রসারে ২০০৮ সালে নবায়নযোগ্য জ্বালানি নীতিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে ২০১৫ সালের মধ্যে মোট স্থাপিত বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার ৫ ভাগ (৬০০ মেগাওয়াট) এবং ২০২০ সালের মধ্যে ১০ ভাগ (২৪০০ মেগাওয়াট) নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে উৎপাদনের আকাঙ্খা ব্যক্ত করা হয়েছে।
সরকার বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে সৌরপ্যানেল, সোলার বাল্ব, সৌরপ্যানেল প্রস্তুতকারী যন্ত্রপাতির ওপর আমদানি শুল্ক মওকুফ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, কেন্দ্রীয় ব্যাংক, পরমাণু ভবনে সৌরবিদ্যুতের সংযোজন করা হয়েছে। ফলে দিনে দিনে সরকার বিকল্প উৎস হিসাবে সৌর বিদ্যুতের উপর নির্ভর হয়ে পড়ছে। জাতীয় গ্রিডের ওপর চাপ কমাতে সব সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, বেসরকারি শিল্প প্রতিষ্ঠান কিংবা বাসাবাড়িতে সৌরবিদ্যুতের সংযোজন বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। বেসরকারি পর্যায়ে জানামতে ১০ লাখের বেশি বাড়িতে সোলারহোম সিস্টেম স্থাপনের ফলে ৩৫ মেগাওয়াটের মতো বিদ্যুৎ সৌরশক্তি থেকে আসছে। সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত পর্যায়েও সংযোজিত হয়েছে আরও কয়েক মেগাওয়াট বিদ্যুৎ। পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণে অনেক সময়ের প্রয়োজন, কিন্তু সৌরবিদ্যুৎ প্লান্ট খুবই অল্প সময়ে নির্মাণ করা যায়।
সোলারহোম সিস্টেম ছাড়া সৌরশক্তির উৎকৃষ্ট ও সাশ্রয়ী ব্যবহার হচ্ছে কৃষিক্ষেত্রে। সারাদেশে সেচ কাজের জন্য অনত্মত ১৩ লাখ ৩০ হাজার গভীর-অগভীর নলকূপ রয়েছে। এসব নলকূপের ৮০ ভাগ ডিজেলচালিত। এজন্য সরকারকে ডিজেলের ওপর বাধ্য হয়েই ভর্তুকি দিতে হয়। কাজেই সেচ কাজে ব্যবহূত সব ধরনের নলকূপ সৌরশক্তিতে চালনার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া জরম্নরি।
সৌরকোষ আমদানি করে সৌরপ্যানেল তৈরি করলে যে সাশ্রয় হবে, কাঁচামাল এনে স’ানীয়ভাবে সৌরকোষ তৈরি করে সৌরপ্যানেল তৈরির প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নিলে তার চেয়ে বেশি সাশ্রয় হবে। দেশে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের এনার্জি ইন্সটিটিউটে কাঁচামাল থেকে বাণিজ্যিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি ব্যবহার করে সৌরকোষ উৎপাদন এবং গবেষণার মাধ্যমে আরো উন্নত করতে বছরে ১ মেগাওয়াট পিক উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন সোলার সেল ফেব্রিকেশন ল্যাবরেটরি নির্মাণাধীন রয়েছে। বছরে ১ মেগাওয়াট পিক উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন সৌরকোষ থেকে সৌরপ্যানেল তৈরি করতে (ভৌত অবকাঠামো তৈরিসহ যন্ত্রপাতি সংগ্রহ, জনবল প্রশিক্ষণ ইত্যাদি) আনুমানিক ৭ কোটি টাকা ব্যয় করতে হয়। ১ মেগাওয়াট পিক সৌরপ্যানেলের বর্তমান বাজারদর ন্যূনতম ১৫ কোটি টাকা। কাঁচামাল থেকে স্থানীয়ভাবে সৌরকোষ ও সৌরপ্যানেল উৎপাদন করতে পারলে দেশ সৌর প্রযুক্তিতে হবে স্বয়ংসম্পূর্ণ। ফলে বিদ্যুতের নিরাপত্তার বিষয়টি হবে অধিকতর শক্তিশালী। এক বছর তেল আমদানি করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে যে পরিমাণ অর্থ ব্যয় হয়, সে পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগে প্রযুক্তি আমদানি করে নবায়নযোগ্য শক্তি থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করলে বিদ্যুৎ সংকট থেকে দেশ সহসাই রেহাই পাবে এবং এক্ষেত্রে প্রচুর কর্মসংস্থানও সৃষ্টি হবে। এ ড়্গেত্রে সরকারি উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
তেল উৎপাদনের শীর্ষ দেশ সৌদি আরব দিনে সর্বোচ্চ তেল উত্তোলন করার কথা, সেখানে তার উৎপাদন এখন সর্বনিম্ন অবস্থা বিরাজ করছে। অন্যদিকে হরমুজ প্রণালি বন্ধ হলে তেল সংকট আরো নাজুক দশায় উপনীত হবে। হরমুজ প্রণালি দিয়ে যে তেল সরবরাহ করা হয় তা বিশ্বে তেল সরবরাহের ২০ ভাগ। আমাদের এখন সে পরিস্থিতি উত্তরণের সময় এসেছে। সিলেটের পুরনো তেলক্ষেত্র কৈলাশটিলায় তিনটি নতুন তেলের স্তর চিহ্নিত করা সম্ভব হয়েছে। সে সঙ্গে হরিপুরেও তেলের মজুদ আগের চেয়ে বেড়েছে বলে জানা গেছে। যদিও আবিষ্কারের ২৬ বছর পর আবার নতুন তেল খনি আবিষ্কার হয়েছে বলে ঘোষণা দেয় পেট্রোবাংলা। আগামী এক বছরের মধ্যে এ তেল উত্তোলন করা হবে। দুটি তেলক্ষেত্রের মধ্যে কৈলাশটিলা থেকে ৪৪ মিলিয়ন ব্যারেল তেল উত্তোলনের আশা করা হচ্ছে। অপর ক্ষেত্র হরিপুর থেকে ১১ মিলিয়ন ব্যারেল তেল ওঠানো সম্ভব হবে। উত্তোলিত তেলের দাম ৪২ থেকে ৪৫ হাজার কোটি টাকা, যা দেশের জন্য শুভ সংবাদই বটে। এর মধ্যে কৈলাশটিলায় ৮০ শতাংশ রিকভারি ফ্যাক্টর বিবেচনায় ৪৪ মিলিয়ন ব্যারেল তেল উৎপাদন করা সম্ভব। আর সিলেটের হরিপুর ক্ষেত্র থেকে একই প্লান্ট ফ্যাক্টর বিবেচনায় ১১ মিলিয়ন ব্যারেল তেল ওঠানো যাবে। কৈলাশটিলায় ১২টি প্রধান স্তর বিশেষণ করে সাতটি স্তরে গ্যাস, চারটি স্তরে তেল ও একটি স্তরে গ্যাস ও তেলের মজুদ যৌথভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে।
অন্যদিকে হরিপুরে ছয়টি প্রধান স্তর বিশেষণ করে চারটি স্তরে গ্যাস ও একটি স্তরে তেলের মজুদ নিশ্চিত করা হয়। তবে এ ক্ষেত্রে আরো একটি স্তরে তেল থাকতে পারে বলে জরিপ পরিচালনাকারীরা জানান। এ দুটি ক্ষেত্রের মধ্যে কৈলাশটিলায় একটি মূল্যায়ন কূপ ও তিনটি উন্নয়ন কূপ এবং হরিপুরে একটি মূল্যায়ন কূপ ও দুটি উন্নয়ন কূপ খননের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
পেট্রোবাংলার দাবি অনুযায়ী এখান থেকে ৫৫ মিলিয়ন ব্যারেল তেল উত্তোলন করা সম্ভব। এখন দেশের বার্ষিক জ্বালানি তেলের চাহিদা ৬৮ লাখ টন। এ হিসেবে পুরো তেল তোলা সম্ভব হলে দেশের এক বছরের কিছু বেশি সময়ের চাহিদা পূরণ হবে। বর্তমান বাজারদর হিসেবে এ তেলের অর্থনৈতিক মূল্য ৪২ থেকে ৪৫ হাজার কোটি টাকা। এত সব আশার কথা থাকলেও বছরে বাংলাদেশ বিপুল পরিমাণ জ্বালানি তেল আমদানি করছে। সরকার দফায় দফায় দাম বৃদ্ধি করেও জ্বালানি তেলের ভর্তুকি কমাতে পারছে না। ফলে এ খাতে সরকারের কয়েকশ কোটি টাকা চলে যাচ্ছে। সৌর বিদ্যুৎ বাংলাদেশে প্রেড়্গাপটে একটি সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিতে পারে। সুষ্ঠ পরিকল্পনা, প্রচারই পারে এ খাতে বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ করতে। সমৃদ্ধ হতে পারে দেশের অর্থনীতি। শহরের পাশাপাশি গ্রাম এলাকায় কিছু পদড়্গেপ গ্রহণ করে বিদ্যুৎ সমস্যা মোকাবেলা ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন করা যায়।
প্রথমত, গ্রামের প্রত্যনত্ম এলাকা থেকে শুরম্ন করে শহরে পর্যনত্ম বিদ্যুৎ বিস্তুৃত। দিনে ও রাতে বিদ্যুত না থাকলে ডিজেল চালিত জেনারেটর দিয়ে বিদ্যুতের যোগান দেওয়া হয়। ফলে বিপুল পরিমাণ ডিজেল ব্যবহৃত হয়। কিন্তু সৌর বিদ্যুৎ থাকলে ব্যক্তির অর্থ ও সরকারি ভর্তুকি দুটোই কমবে।
দ্বিতীয়ত, গরমের দিনে মানুষ বেশি লোডশেডিং এ ভোগে। এ সময় দিনে রাতে ১২-১৩ ঘন্টার বেশি বিদ্যুৎ থাকে না। অন্যদিকে এ সময় সূর্য খাড়া ভাবে কিরন দেয় বলে বেশি তাপমাত্রা পড়ে। সে ড়্গেত্রে সৌর বিদ্যুৎ এর সোলার থাকলে বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব। ফলে বিদ্যুতের উপর চাপ কমবে। জ্বালানি তেল সাশ্রয় হবে, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি আসবে।
তৃতীয়ত, শহরের বহতল ভবণ নির্মানে উন্নত বিশ্বের ন্যায় সোলার প্যানেল বসাতে হবে। সোলার প্যানেল বসানো বাধ্যতামূলক করতে হবে। ফলে ভবণের বিদ্যুৎ ব্যবহার কম হবে।
এ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হলে দেশের বিদ্যুতের উপর চাপ অনেকাংশে কমবে। মানুষ বেশি বিদ্যুতের দিকে না ঝুকে অফুরনত্ম সৌর শক্তিকে কাজে লাগিয়ে তাদের দৈন্দন্দিন চাহিদা মেটাতে পারবে। কারণ এ শক্তির কোন শেষ নেই। আবহাওয়া খারাপ থাকলেও সৌর বিদ্যুৎ চলতে পারে। তবে কম বিদ্যুৎ ইৎপাদন হয়। যা উৎপাদন হয় তা দিয়ে কাজ মেটানো সম্ভব। দিনের ১২ ঘন্টা অন্ধাকারে রেখে আর যায় হোক ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠেনের স্বপ্নও দেখা যায় না। দেশকে অর্থনীতিতে এগিয়ে নিতে হলে ও ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠন করতে হলে সৌর শক্তি বিকল্প হিসাবে ব্যবহার করতেই হবে।
(লেখক : সহ-সম্পাদক, অগ্রদূত, বাংলাদেশ স্কাউটস)