কুলাউড়ার নয়টি গ্রামে এক সপ্তাহ ধরে বিদ্যুৎ নেই

এম. মছব্বির আলী : মৌলভীবাজার জেলার কুলাউড়া উপজেলার কর্মধা ও কুলাউড়া সদর ইউনিয়নের নয়টি গ্রামে এক সপ্তাহ ধরে বিদ্যুৎ নেই। এতে এলাকার প্রায় এক হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহক অন্ধকারে আছেন। ঝড়ে বিদ্যুৎ লাইন তছনছ হওয়ায় এই বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এদিকে কর্মধা ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর থেকে গত ২১ এপ্রিল রোববার ভোর রাতে একটি ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। এতে এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ আরো অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এলাকাবাসী ও বিদ্যুৎ বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ এপ্রিল বিকালে কুলাউড়া উপজেলার উপর দিয়ে কালবৈশাখি ঝড় বয়ে যায়। এতে প্রচুর কাঁচা ঘরবাড়ি, গাছপালা সহ বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন তছনছ হয়ে যায়। এলাকায় বিদ্যুতের পাঁচটি খুঁটি ভেঙে পড়ে। পরবর্তী সময়ে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বিভিন্ন এলাকার বিদ্যুৎ লাইন মেরামত করে বিদ্যুৎ সরবরাহ করেছে। কিন্তু উপজেলার কর্মধা ইউনিয়নের রাঙ্গিছড়া, বনগাঁও-২, লক্ষ্মীপুর, লক্ষ্মীপুর মিশন, কালিটি চা-বাগান, রাঙ্গিছড়া চা-বাগান, কালিটি চা-বাগনের ১২ নম্বর এলাকা এবং কুলাউড়া সদর ইউনিয়নের প্রতাবি ও গাজীপুরের একাংশে এখনো বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়নি। এতে এই এলাকার প্রায় এক হাজার বিদ্যুৎ গ্রাহক এক সপ্তাহের উপরে অন্ধকারে আছেন। এদিকে গত ২১ এপ্রিল ভোর রাতে কর্মধা ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর এলাকা থেকে বিদ্যুৎ না থাকার সুযোগে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ২৫০ কিলোভোল্টের একটি ট্রান্সফরমার চুরি হয়েছে। ফলে এই এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহ আরো অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। কর্মধা ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামের বিদ্যুৎ গ্রাহক মোঃ আসলম বলেন, ‘গত এপ্রিল থেকে আমাদের কারেন্ট নাই। বিদ্যুৎ বিভাগের লোকজন গত রোববার এসে দেখে গেছেন। এখনো কিছু বলেননি। এখন দেখি তারা কি করেন। এছাড়া বিদ্যুৎ না থাকার সুযোগে এলাকার একটি ট্রান্সফরমার চুরি হয়ে গেছে।’ এদিকে বিদ্যুৎ পুনঃসংযোগের দাবিতে গতকাল ২৩ এপ্রিল মঙ্গলবার বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড কুলাউড়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে লিখিত আবেদন করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, এলাকায় লক্ষ্মীপুর মিশনের অধীনে একটি হাসপাতাল, একটি ডিসপেনসারি, একটি উচ্চ বিদ্যালয় ও বিদ্যালয়ের দুইটি ছাত্রাবাস আছে। বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন হওয়ার পর থেকে এলাকার দরিদ্র জনগোষ্ঠী চিকিৎসা গ্রহণের ক্ষেত্রে অনেক অসুবিধার সম্মুখীন হচ্ছেন। এলাকার একমাত্র উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রাবাসে বসবাসরত পরীক্ষার্থীদের পড়ালেখা ভীষণভাবে বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড কুলাউড়া আঞ্চলিক কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী স্বাগত সরকার বলেন, ‘লাইনটা অনেক পুরোনো। লাইনে বাঁশ-গাছের খুঁটি ছিলো। গ্রাহকরাই নিজ উদ্যোগে সংযোগ নিয়েছিলেন। আর ঝড়-তুফানে কর্মধা এলাকায়ই বেশি তছনছ হয়েছে। গ্রাহকদের বলেছি নিজেরাই সংস্কার করতে।’ নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, স্থায়ীভাবে সংস্কারের জন্য উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে লেখা হয়েছে। উপর থেকে অর্থ বরাদ্দ না এলে স্থানীয়ভাবে লাইন সংস্কার করা যাবেনা। অপরদিকে লক্ষ্মীপুর থেকে বিদ্যুতের ট্রান্সফরমার চুরির ঘটনায় কুলাউড়া থানায় একটি মামলা হয়েছে বলে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে।