সাভারে ৮ তলা ভবন ধস: ৩০ লাশ উদ্ধার

সাভারে শপিং কমপ্লেক্স ‘রানা প্লাজা’ ধসে পড়েছে। এতে ব্যাপক হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ পর্যন্ত ৩০টি লাশ উদ্ধার করা হয়েছে এবং তাৎক্ষণিকভাবে নিহতদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।
ভবন ধসে অর্ধশতাধিক আহত ব্যক্তিকে উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে পাঠানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে সেনাবাহিনীর ৪টি ইউনিটকে উদ্ধারকাজে নিয়োজিত করা হয়েছে।
ভবনটির মালিক পৌর যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহব্বায়ক মো. সোহেল রানা। ভবনটিতে ফাটল দেখা দেয়ার পর তিনি মঙ্গলবার সবাইকে আশ্বস্ত করে বলেছিলেন, এতে কোন সমস্যা হবে না, সামান্য একটু প্লাস্টার খসে পড়েছে মাত্র।
বুধবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে সাভার বাজার বাসস্ট্যান্ডের কাছে জামতলায় অবস্থিত ৮ তলা শপিং কমপ্লেঙ রানা প্লাজা ধসে পড়ার সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা উদ্ধার কাজ শুরু করে। পরে সেনাবাহিনী যোগ দেয়।
সকাল সোয়া ৯টার থেকে সেনাবাহিনী উদ্ধার কাজে নামেন।
এদিকে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় জড়ো হওয়ায় ঢাকা-আরিচা সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।
৮ তলা ভবনের ৩ তলা থেকে ৮ তলা পর্যন্ত মোট ৫টি গার্মেন্টসসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের কার্যালয় রয়েছে।
ভবনটির ভেতরে এখনো অনেক শ্রমিক আটকা রয়েছেন আশংকা করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার এই ভবনটিতে ফাটল দেখা দেয়ার পর মঙ্গলবার দপুরে ভবনটি ঘুরে দেখেন স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
স্থানীয় প্রকৌশলী আব্দুর রাজ্জাক মঙ্গলবার ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে বলেন, ভবনটির নিরাপত্তার স্বার্থে বুয়েট থেকে প্রকৌশলী এনে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা প্রয়োজন। তা না হলে বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।
সাভার থানা পুলিশ জানিয়েছেন, অল্প সময়ের মধ্যে মূল খুঁটি ও সামনের দেয়ালের অংশবিশেষ ছাড়া পুরো কাঠামোটিই ভেঙে পড়েছে। এ সময় আশেপাশে ছড়িয়ে পড়ে আতঙ্ক।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স কর্মীরা ছাড়াও বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও র্যাব ঘটনাস্থলে পৌঁছে উদ্ধার অভিযান শুরু করেছেন। এতে অংশ নিচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারাও।
মঙ্গলবার সকালে ফাটল দেখা দেয়ার পরপরই ওই ভবনে থাকা চারটি গার্মেন্ট কারখানা ও ব্যাংক বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। তবে বুধবার সকালে শ্রমিকরা আবারো কারখানায় গিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
ঘটনার এক প্রত্যক্ষদর্শী, জানান, আমি দোকানে বসেছিলাম। হঠাৎ বিকট শব্দ পেয়ে পেছনে তাকিয়ে দেখি ধুলার ঝড়ের মতো উঠল। আর চোখের পলকে ভবনটি ধসে পড়ল।
ভবনটির প্রথম ও দ্বিতীয় তলায় ইলেকট্রনিক, কম্পিউটার, প্রসাধন সামগ্রী ও কাপড়ের মাকের্ট এবং ব্র্যাক ব্যাংকের একটি শাখা ছিল।
আর তৃতীয় তলার নিউ ওয়েভ বটমস লিমিটেড, চতুর্থ তলার প্যান্টম এ্যাপারেলস লিমিটেড, পঞ্চম তলার প্যান্টম ট্যাক লিমিটেড ও ষষ্ঠ তলার ঈথার টেঙটাইল লিমিটেডে পাঁচ থেকে ছয় হাজার শ্রমিক কাজ করতেন বলে স্থানীয়রা জানান।