কমলগঞ্জে বিদ্যালয়ের দেয়ালে ফাঁটল : ক্লাস না করেই ফিরেছে শিক্ষার্থীরা
এম. মছব্বির আলী : মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের চারটি কক্ষের দেয়ালে অসংখ্য স্থানে বড় ধরনের ফাঁটল দেখা দিয়েছে। তাই ক্লাস না করেই আতঙ্কিত ছাত্র/ছাত্রী ফিরে গেলেন বাড়িতে। দীর্ঘ দিন ধরে টিন শেডের পাকা দেয়ালযুক্ত বিদ্যালয় ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ হলেও উচ্চ পর্যায়ের কয়েক দফা পরিদর্শণ হলেও আজও ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভেঙ্গে নতুন ভবন নির্মাণ করা হয়নি বলে অভিযোগ শিক্ষক ও অভিভাবকদের। গতকাল ২৭ এপ্রিল শনিবার সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সকালে বিদ্যালয়ের শিশু ছাত্র/ছাত্রীদের নিয়ে অভিভাবকরা বিদ্যালয়ে আসার পর শ্রেণি কক্ষের দেয়ালের ফাঁটল দেখে আতঙ্ক মনে করে অভিভাবকরা ছাত্র/ছাত্রীদেরকে বাড়িতে ফিরিয়ে নিলেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সিরাজুল ইসলাম জানান, ১৯৩৬ সনে বিদ্যালয়টি স্থাপিত হওয়ার পর থেকে উপরে টিন শেড ও চারদিকে পাকা দেয়ালে ভবন নির্মিত হয়। বর্তমানে শিশু শ্রেণি থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত প্রায় ৭শ’ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। দীর্ঘ দিনের পুরাতন ভবন বলে উপরের টিনের চালা অধিকাংশই বিনষ্ট হয়ে গেছে। ফলে বারান্দাসহ শ্রেণি কক্ষে বৃষ্টির পানি পড়ে। প্রায় ৬ বছর ধরে একে একে এ ভবনটির অফিসসহ ৬টি কক্ষের ৪টির পাকা দেয়ালে অসংখ্য স্থানে বড় ধরনের ফাঁটল সৃষ্টি হয়। ফলে ভয় হয় ভূমি কম্প বা বড় ধরনের ঝড় বা টর্নেডো হলো এ পুরাতন ভবনটি ভেঙ্গে পড়তে পারে। জাতীয় সংসদের চিফ হুইপ উপাধ্যক্ষ মো: আব্দুস শহীদ এমপি ও সাবেক জেলা প্রশাসক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমানসহ প্রশাসনিক উর্দ্ধতন অনেক কর্মকর্তা সরেজমিন পরিদর্শণ করে ভভনটি ঝুঁকিপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন। অচরেই এ ঝুকিপূর্ণ টিন শেড ভবন ভেঙ্গে সেখানে একটি নতুন দ্বিতল ভবন নির্মাণের জন্য স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)-এর প্রকৌশলীকে নির্দেশও দিয়েছিলেন বলে প্রধান শিক্ষক জানান। তারপরও শমশেরনগর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ঝুঁকিপূর্ণ ভবন ভেঙ্গে নতুন ভবন নির্মাণের কোন উদ্যোগ গ্রহন করা হয়নি। এ বিদ্যালয়ের অভিভাবক মুর্শেদ আহমদ ও রোকশানা আক্তার বলেন, বিদ্যালয়ের ছেলে মেয়েদের পাঠিয়ে আতঙ্কে থাকতে হয় কখন দূর্ঘটনা ঘটে এই ভেবে। সমপ্রতি আবারও সাভারের পাকা বহুতল ভবন ধ্বসের চিত্র দেখে তারা এখন রীতিমত আতঙ্কিত বলেই বিদ্যালয়ে ছেলে মেয়েদের এনে ক্লাস না করিয়ে আবার বাড়িতে ফিরিয়ে নিলেন। কমলগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা কিশলয় চক্রবর্তী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তাঁকে বিষয়টি জানিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সাথে ও কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে কথা বলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলীকে নিয়ে সরেজমিন তদন্তক্রমে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহন করা হবে। উপজেলা প্রশাসন এ দিকে সজাগ দৃষ্টি রাখছে। সুতরাং আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই।