বিশ্বনাথ সাব-রেজিষ্টারী ভবন মারাত্নক ঝুঁকিপূর্ণ

মোহাম্মদ আলী শিপন, বিশ্বনাথ : বিশ্বনাথ উপজেলা সাব রেজিষ্ট্রারী অফিসের ভবনটি রয়েছে মারাত্নক ঝুঁকিপূর্ন অবস্থায়। ভবনের দেওয়ালের ও ছাদে বিভিন্ন অংশে প্লাস্টার খসে খসে পড়ছে। অফিসে থাকা উপজেলার প্রায় ১০ হাজার রেকর্ডপত্র নষ্ঠ হওয়ার আশংকা করছেন কর্তৃপক্ষ। ছাদের প্লাস্টার ঘন ঘন খসে পড়ার কারনে অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জীবন রয়েছে নিরাপত্তাহীন। প্লাস্টার কসে পড়ে রড় বেরিয়ে বেংচি কাটছে অনেকটা বিদ্রোপের ভাষায়। অথচ কর্তৃপক্ষ দীর্ঘদিন ধরে এই জরার্জীন ভবনের সংস্কার কিংবা পূর্ন নির্মানের উদ্যোগ গ্রহন করেনি। যে কোন সময় ঘটতে পারে বড় ধরণের দূর্ঘটনা।
প্রতি বছর সরকারকে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব আয় প্রদানকারী এ অফিসের ভবন সংস্কার কিংবা পূর্ননির্মানের উদ্যোগ গ্রহন না থাকায় উপজেলা সাধারন মানুষের মধ্যে বিরাজ করছে চাপা ক্ষোভ। স্থানীয় সাংসদের সুদৃষ্ঠি কামনা করে অনেকেই বলছেন, ভবিষৎ প্রজন্মকে জায়গা-জমি নিয়ে সংঘর্ষ থেকে দূরে রাখতে আমাদেরকে রেকর্ডপত্র সংরক্ষন করা জরুরী। আর এর জন্য সাব রেজিষ্ট্রারী অসিফের রেকর্ডপত্রকে সংরক্ষনের জন্য ভবন নির্মান অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ন একটি কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিশ্বনাথ সাব-রেজিষ্টারী অফিস সূত্রে জানাগেছে, ষাট-এর দশকে ১তলা ভনের ৩ কক্ষ বিশিস্ট উপজেলার সাব-রেজিষ্টারী অফিস ভবনটি নির্মান করা হয়। এর পর থেকে পর্যন্ত ভবনের উল্লেযোগ্য কোন সংস্কার না হওয়ার কারনে আজ এর করুন দশা। যার ফলে ভবনের বিভিন্ন অংশের দেয়ালে দেখা দিয়েছে ফাটল, ছিটকে পড়ছে ছাদের প্লাস্টার, বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টির পানি ছাদের ফাঁটা (ছিদ্র) দিয়ে ভিতরে পড়ার কারনে রেকর্ড রুমে থাকা প্রায় ১০ হাজারেরও বেশী মূল্যবান দলিল নষ্ট হওয়ায় আশংকা দেখা দিয়েছে। তাছাড়া উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের ১১৫টি মৌজার রেকর্ডপত্র খুঁজে না পাওয়ার সম্ভাবনা বেশী বলে জানিয়েছেন অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বলেন, এমনিতেই রয়েছে জায়গা স্বল্পতা। তাই গাদাগাদি করে কাজ করতে হয়। এর উপর ছাদের প্লাস্টার খসে পড়ার কারনে আমাদের জীবন সারাক্ষন থাকে একটি অজানা আতংকের মধ্যে। তাছাড়া অফিসের রেকর্ডপত্র সংরক্ষন নিয়ে সাধারন মানুষের মত আমাদেরকেও দুংশ্চচিন্তার মধ্যে থাকতে হয়।
সরেজমিনে সাব-রেজিষ্টার অফিস ঘুরে দেখাগেছে, ছোট ছোট ৩ টি রুমে চলছে সাবরেজিষ্টার অফিসের কাজ। অফিসের স্টাফ বুকে ভয় নিয়ে কাজ করছেন। পুরাতন ভবনে অনেকটা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অফিসের কাজ করছেন প্রতিনিয়ত। রেজিষ্টারী কাজে আসা মানুষের নেই কোন বসার স্থান। তাছাড়া বর্ষা মৌসুমে রেকর্ড রুমের ছাদ দিয়ে অনবরত বৃষ্টির পানি ফুটা ফুটা হয়ে পড়তে থাকে। অফিসে স্টাফ বসে কাজ করার জন্য নেই প্রয়োজনীয় আসবাব পত্র। সাব রেজিষ্টার অফিসে প্রসাব-পায়খানা ও বিশ্রামাগারের নেই কোন ব্যবস্থা। এছাড়া অফিসের ফার্নিচার গুলো পুরাতন হওয়ায় ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।
সাবরেজিষ্টারী অফিসে দলিল করতে আসা মনির মিয়া বলেন, অফিসের যে অবস্থা দেখলে ভয় লাগে। প্রবাসী অধ্যুষিত বিশ্বনাথে এ সমস্যা আসলে লজ্জাজনক।
এ ব্যাপারে বিশ্বনাথের সাবরেজিষ্টার আবদুস সালাম বলেন, ঝুকিপূর্ণ ভবনে বসে কাজ করতে হচ্ছে। সবাই আতংকের মধ্যে থাকতে হয়। জরুরী ভিত্তিত্বে ভবনটি সংস্কারের প্রয়োজন।
তিনি বলেন, দুই-একদিনের মধ্যে আবারও ভবন নির্মাণের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিতভাবে আবেদন করবেন।