হাকালুকি হাওরের জীববৈচিত্র সংরক্ষনে পরিবেশ অধিদপ্তরের কার্যক্রমে সফলতা আসছে
এম. মছব্বির আলী : এশিয়ার বৃহত্তম হাকালুকি হাওরের জীব বৈচিত্র যখন চরম হুমকির সম্মুখিন ঠিক তখনই তা সংরক্ষনে পরিবেশ অধিদপ্তরের হাতে নেয়া প্রকল্প সফলতা পেতে শুরু করেছে। হাওরের বিভিন্ন বিলের পারে বেড়ে উঠা জলজ বৃক্ষ মাছ, পাখি ও অন্যান্য বন্যপ্রাণীর আবাসস্থলে পরিণত হচ্ছে। জানা গেছে, হাকালুকি হাওর দেশের বৃহৎ একটি মিঠা পানির জলাভুমি। পশ্চিমে সিলেটের ভাটেরা পাহাড় ও পূর্বে মৌলভীবাজারের পাথারিয়া পাহাড় বেষ্টিত হাকালুকি সিলেট ও মৌলভীবাজার জেলার পাঁচটি উপজেলা নিয়ে বিস্তৃত। এ হাওরে ছোট বড় ২৩৮টি বিল রয়েছে। বর্ষাকালে ২৫ হাজার হেক্টর আয়তন বিশিষ্ট হাওরে পতিত হয়েছে ১০ টি নদী। বিল ও নদীগুলো মাছ ও জীব বৈচিত্রে সমৃদ্ধ ছিল। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে হাওরের জীব বৈচিত্র দারুনভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়। বিলুপ্ত হয় নানা প্রজাতির দেশিয় মাছ ও জলজ বৃক্ষ। ফলে মাছ, পাখিসহ নানা বন্য প্রাণী আবাসস্থল হারায়। হাকালুকি হাওরের জীব বৈচিত্র সংরক্ষনে পরিবেশ অধিদপ্তর সরকারের ক্লাইমেট ট্রাষ্ট ফান্ড ও ইউএনডিপির অর্থায়নে প্রকল্প গ্রহন করে। প্রকল্পের সহযোগি সংস্থা সিএনআরএসের মাঠ ব্যবস্থাপক আশরাফুল ইসলাম জানান, ২৫ মাস মেয়াদের প্রকল্পের কাজ শুরু হয় ২০১১সালের ১৪ মে। হাওর বেষ্টিত পাঁচটি উপজেলার ১১টি স্পটে প্রাকৃতিকভাবে গজে উঠা জলজ বৃক্ষ সংরক্ষন করায় গড়ে উঠা হিজল, করচ, পিচাশ, তুলসি বনে পাখিসহ বন্যপ্রাণীর অভয়ারন্যে পরিণত হয়েছে। জলজ উদ্ভিদ একেবারে বিলিন হওয়া বাইয়া, পোয়ালা ও বেলুয়া বিলের কান্দিকে হিজল করচের বনায়ন করা হয়েছে। সরেজমিনে হাকালুকি হাওরের জলা, বালিজুরি, কানলি, পোয়ালা বিলের কান্দি ঘুরে দেখা গেছে প্রাকৃতিক জলজ বৃক্ষে পাখ পাখালি কলকাকলি করছে। ঘন জঙ্গলে কীট পতঙ্গের সাথে মৌমাছি মধু আহরনে ব্যস্ত। সিএনআরএসের মাঠ কর্মকর্তা মাহমুদুল হাসান জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সম্পর্কে স্থানীয় জনগনকে সচেতন করে তুলায় জীব বৈচিত্র সংরক্ষন কাজে সফলতা আসছে।