মৎস্য ভান্ডার হাকালুকি থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে ১৬ প্রজাতির ছোট ও দেশীয় মাছ

নিজস্ব প্রতিবেদক : এশিয়ার বৃহত্তম হাকালুকি হাওরপাড়ে সিলেটের প্রায় দেড় কোটি মানুষের বসবাস। এই হাওরপাড়ের চারপাশে গ্রামাঞ্চলের চির পরিচিত নানা প্রজাতির দেশীয় প্রাকৃতিক মাছের আকাল চলছে। মৌলভীবাজারের কুলাউড়া, জুড়ী, বড়লেখা, ফেঞ্চুগঞ্জসহ আশপাশ অঞ্চলের খাল-বিল, হাওর-বাওড় ও হাকালুকিতে দেশীয় মাছ শূন্য হয়ে পড়ার আশংকা দেখা দিয়েছে। কারণ মাছের বংশবিসত্মার এবং বেড়ে ওঠার প্রাকৃতিক পরিবেশ দিনে দিনে বিনষ্ট হচ্ছে। পানি শূন্যতা ও মাছের অভয়ারণ্যগুলো শুকিয়ে অবাধে মাছ নিধন করার ফলে মাছ উপযোগী প্রাকৃতিক পরিবেশ ক্রমাগত ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ছে। এরই মধ্যে প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে খয়রা লালসন্দা, পাবদা, সরপুঁটি, তিতপুঁটি, ডানাকুনো, মলা, শিং, মাগুর মাছসহ প্রায় ১৬ প্রজাতির ছোট মাছ।
এছাড়াও অসিত্মত্ব সংকটে রয়েছে পুঁটি, টেংরা, ভেদা, কৈ, মহাশৈল, বাইম মাছসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। জেলার সাত উপজেলার বিভিন্ন বাজারে এসব প্রজাতির মাছ এখন আর খুব একটা চোখে পড়েনা। পরিচিত এসব মাছ হয়ে পড়েছে খুবই অপরিচিত। বিদেশি আগ্রাসী বা রাক্ষুসী মাছের চাষ, প্রাকৃতিক বিপর্যয় পরিস্থিতিতে দেশীয় প্রাকৃতিক মাছ বিলুপ্তির অন্যতম প্রধান কারণ বলে জানিয়েছেন জেলা মৎস্য কর্মবকর্তা কফিল উদ্দিন কাইয়া। বিশেষজ্ঞদের মতে, মানুষের দেহ গঠনে গুরম্নত্বপূর্ণ উপাদান ভিটামিন-এ ক্যালসিয়াম ও আয়রন ছোট মাছ থেকে পাওয়া যায়। মানুষের শরীরের প্রয়োজনীয় আমিষের শতকরা প্রায় ৮০ ভাগ আসে দেশীয় প্রজাতির মাছ থেকে। এ খাদ্য সংস্কৃতিকে ঘিরেই রচিত হয় বিখ্যাত প্রবাদ ‘মাছে-ভাতে বাঙ্গালি’।
এদিকে বাজারগুলোতে প্রাকৃতিক মাছের আমদানি একেবারে কমে গেলেও যা কিছু আমদানি হয় তাও চলে যায় ভাগ্যবান বা বিত্তশালীদের ঘরে। সাধারণ ক্রেতাদের কপালে এসব মাছ আর খুব একটা ঝুটছেনা। স্থান দখল করে নিচ্ছে বিদেশি বিভিন্ন প্রজাতির মাছ। এ অবস্থা চলতে থাকলে আগামী ১০-১৫ বছরের মধ্যে প্রাকৃতিক পরিবেশ না পেয়ে মৎস্য ভা-ার খ্যাত হাকালুকি মাছ শূন্য হওয়ার আশংকা করছেন স্থানীয়রা।