মৌলভীবাজারে কালবৈশাখী ঝড়ে বিপর্যস্ত রেলপথ সড়কপথ ও বিদ্যুত ব্যবস্থা দু’শতাধিক ঘরবাড়ি বিধ্বস্ত : আহত ২০

জালাল আহমদ : কালবৈশাখী ঝড়ে মৌলভীবাজার জেলায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে রেলপথ, সড়কপথ ও বিদ্যুত ব্যবস্থা এবং বিধ্বস্ত হয়েছে জেলার দু’শতাধিক ঘরবাড়ি। বিভিন্ন স্থানে ঝড়ের কবলে পড়ে নারী, পুরুষ ও শিশুসহ আহত হয়েছেন অন্তত ২০ জন। কমলগঞ্জের লাউয়াছড়ার পাহাড়ি এলাকায় রেললাইনের উপর গাছ ভেঙ্গে পড়ার কারণে চট্টগ্রামমুখী উদয়ন ও ঢাকামুখী উপবন এক্সপ্রেস যাত্রী নিয়ে ভানুগাছ স্টেশনে আটকা পড়ে। বন বিভাগ ও রেলকর্মীদের মিলিত প্রচেষ্টায় সকালে পুনরায় রেল যোগাযোগ চালু হয়।
ভানুগাছ রেল স্টেশন সূত্র জানায়, রাত ১২টার দিকে প্রচ- ঝড়ে লাউয়াছড়ায় রেললাইনের ওপর গাছ উপড়ে পড়ায় সিলেট-ঢাকা-চট্টগ্রাম ট্রেন গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেনি। পরে সকালে রেলওয়ের উদ্ধারকর্মী ও বন বিভাগ রেললাইনের ওপর থেকে গাছ সরিয়ে দিলে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।
এদিকে শহরের মনুনদী ব্রীজের সম্মুখে গ্রীড ও পৌরসভার বিদ্যুত লাইনের খুঁটি ভেঙ্গে পড়ায় জেলা শহরের সাথে রাত থেকে সকাল পর্যন্ত সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল। রাজনগর উপজেলার সাকেরা চা বাগান ও টেংরা ইউনিয়ন, কমলগঞ্জ উপজেলার পতনউষার ইউনিয়নে এবং বড়লেখা উপজেলার দক্ষিণভাগ, রতুলী, সুজানগর ও ডিমাই এলাকার দু’শতাধিক ঘরবাড়ি ও অর্ধশতাধিক দোকানপাট বিধ্বস্ত হয়েছে। শহরের সৈয়ারপুর এলাকায় পৌরসভা জিসাসের মহিলা সম্পাদিকা শ্যামলী সূত্রধর’র বাড়ি ঝড়ের কবলে পড়ে ড়্গতিগ্রস্ত হয়। তাৎক্ষণিক এলাকাবাসীর সহযোগিতায় শ্যামলী সূত্রধর (৩০), জুয়েল সূত্রধর (৪০)ও চয়ন সূত্রধর (৬) কে আহতাবস্থায় উদ্ধার করে মৌলভীবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এছাড়া হাইল হাওরের সিকরাইল এলাকায় ঝড়ের কবলে পড়ে মাছের ফিশারি, গরুর খামার ও খামার কর্মীদের বসতভিটে বিধ্বস্ত হয়। এ সময় ৩ জন খামারকর্মী আহত হন।
অপরদিকে বিদ্যুতের গ্রীড লাইনের খুঁটিসহ পৌরসভা ও এলটি লাইনের খুঁটি ভেঙ্গে পড়ায় সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত জেলা সদরসহ রাজনগর, কমলগঞ্জ, কুলাউড়া, জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলায় বিদ্যুত লাইন চালু করা সম্ভব হয়নি। সন্ধ্যা ১৫ মিনিটে বিদ্যুত সরবরাহ করা হয়।
পিডিবি’র তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী রতন কুমার সাহা ও পলস্নী বিদ্যুতের ডিজিএম হরেন্দ্র নাথ বর্মন জানান, সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১৫ টি পিলার ভাঙ্গায় ও শতাধিক স্থানে তার ছিঁড়ে পড়ায় বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ ছিল। ২০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে আরও ২ দিন সময় লাগবে।
সিলেট বিভাগীয় রেল স্টেশন অফিসার আবুল কালাম আজাদ জানান, বৃহস্পতিবার সকালে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করতে রেলওয়ে কর্মীরা কয়েক ঘণ্টা গাছ সরানোর কাজ করে। পরে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হয়।