সংসদীয় আসন পুনর্বিন্যাসে কমলগঞ্জ উপজেলাকে বিভক্ত না করার জোর দাবী
কমলগঞ্জ প্রতিনিধি : নির্বাচন কমিশন কর্তৃক সংসদীয় আসন পূর্ণবিন্যাসে মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ উপজেলাকে বিভক্তি না করার জোর দাবী জানিয়েছেন স্থানীয় রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, জনপ্রতিনিধি, সুশীল সমাজসহ সর্বস্তরের জনতা। তারা কমলগঞ্জের শমশেরনগর, আলীনগর, ইসলামপুর ও আদমপুর ইউনিয়নেক ২৩৮ মৌলভীবাজার-৪ কমলগঞ্জ-শ্রীমঙ্গলের সাথে পুনরায় সম্পৃক্ত করে নির্বাচন কমিশন যে প্রস্তাবিত তালিকা করেছে সেভাবেই চুড়ান্ত গেজেট করার দাবী জানিয়েছেন। স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পুর্বে তৎকালীন নির্বাচন কমিশন কমলগঞ্জ উপজেলার ভারত সীমান্তবর্তী ইসলামপুর, আদমপুর, আলীনগর ও শমশেরনগর ইউনিয়নকে ২৩৮ মৌলভীবাজার-৪ কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল নির্বাচনী এলাকা থেকে পৃথক করে ২৩৬ মৌলভীবাজার-২ কুলাউড়ার সাথে সম্পৃক্ত করে। সে সময় ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী প্রতিবাদ করলেও আমলে নেয়নি নির্বাচন কমিশন। ফলে কমলগঞ্জ উপজেলা প্রশাসনিক ভাবে নামমাত্র এক থাকলেও এম.পি নিয়ে বিভক্ত হয়ে যায়। কমলগঞ্জ উপজেলা কমিটির অধীনে সকল রাজনৈতিক দলের কার্যক্রম পরিচালিত হলেও চার ইউনিয়নের দলীয় নেতাকর্মীরা রাজনৈতিক ভাবে অনেকটা কোনঠাসা হয়ে পড়েন। কাঙ্গিত উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত হয় চার ইউনিয়নবাসী। আলাপকালে এলাকাবাসী জানান, ইসলামপুর ইউনিয়ন থেকে কুলাউড়া উপজেলা সদরের দুরত্ন প্রায় ৮০ কিঃ মিঃ। চার ইউনিয়নের নির্বাচনী প্রচারনার সময় মৌলভীবাজার-৪ আসন ব্যবহার করতে হয়। এমতাবস্থায় নির্বাচন কমিশন ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারী মাসে পুনরায় কমলগঞ্জের চার ইউনিয়নকে মৌলভীবাজার-৪ আসনের সাথে সম্পৃক্ত করে খসড়া তালিকা প্রকাশ করে। কমিশনের এই সিদ্ধান্তে আনন্দিত হয় এলাকাবাসী। বিতরন করা হয় মিষ্টি। আশায় বুক বাধে মানুষ। কিন্তু আবারও তাদের সেই স্বপ্নকে ধুলিসাৎ করার জন্য একটি সুবিধাভোগী চক্র জোরেসুরে মাঠে নামে। গত ২৮ এপ্রিল নির্বাচন কমিশনের শুনানীতে কমলগঞ্জ উপজেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি দূরুদ আলী মৌলভীবাজার-২ আসনের সাথে চার ইউনিয়নকে সম্পৃক্ত রাখার দাবী জানিয়ে শুনানীতে অংশ নেন। এতে হতবাক হয়েছেন সাধারন মানুষ। অতীতের রেকর্ড থেকে জানা যায় ২০০১ সালের পুর্বে জাতীয় পার্টি মোটামুটি ভোট পেলেও কোন সময় ইউনিয়ন ভিত্তিক পাস করতে পারেনি। আর ২০০১ সাল থেকে জাতীয় পার্টি নামমাত্র পরিচালিত হচ্ছে। ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কমলগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগ অর্থ সম্পাদক সুলেমান মিয়া ও আদমপুর ইউপি চেয়ারম্যান সাব্বির আহমেদ ভুঞা বলেন, প্রশাসনিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ও উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডের স্বার্থে চার ইউনিয়নকে মৌলভীবাজার-৪ আসনের সাথে সম্পৃক্ত রাখা উচিত। কমলগঞ্জবাসী একসাথে থাকতে চায়। উপজেলা বিভক্তি না হলে এলাকায় প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসার পাশাপাশি উন্নয়নের জন্য গনজোয়ার সৃষ্টি হবে। সার্বজনীন ভাবে সবাই উপকৃত হবে। বর্তমান সংসদ সদস্য আলী আব্বস তাঁর নিজস্ব স্বার্থে চার ইউনিয়নকে মৌলভীবাজার-২ আসনের সাথে সম্পৃক্ত রাখার চেষ্টা করছেন। আলীনগর ইউপি চেয়ারম্যান উপজেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি ফজলুল হক বাদশা ও শমশেরনগর ইউপি চেয়ারম্যান তরুন আওয়ামীলীগ নেতা জুয়েল আহমেদ বলেন, কমলগঞ্জের চার ইউনিয়নকে মৌলভীবাজার-৪ আসনের সাথে সম্পৃক্ত করে নির্বাচন কমিশন যে খসড়া তালিকা প্রকাশ করেছে সেটিকে চুড়ান্ত গেজেট আকারে প্রকাশ করে মানুষের দাবীর প্রতি সম্মান দেখাবে।