বড়লেখায় প্রতারক ট্রাভেলস ব্যবসায়ী জনতার হাতে আটক
বড়লেখা প্রতিনিধি : মৌলভীবাজারের বড়লেখায় প্রতারক এক ট্রাভেলস ব্যবসায়ী জনতার হাতে আটক হয়েছে। স্থানীয় জনতা তাকে উত্তম-মধ্যম দিয়ে একটি বাড়িতে আটক রেখেছেন।
সরেজমিনে গতকাল শুক্রবার বিকেলে পৌর শহরের মহুবন্দ গ্রামে গিয়ে জানা গেছে, উপজেলার দড়্গিণভাগ ইউনিয়নের দক্ষিণভাগ গ্রামের মৃত আব্দুল হামিদের ছেলে মাও: রফিকুল ইসলাম প্রায় এক বছর আগে পৌর শহরের মধ্যবাজারে রফিকিয়া কম্পিউটার এ- ট্রাভেলস নামে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলেন। আটাবের কোনো ধরণের সদস্যপদ ছাড়াই পৌরসভা থেকে ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে দীর্ঘদিন ধরে তিনি ব্যবসা চালিয়ে আসছেন। শুরু থেকেই বিভিন্ন বিদেশগামী যাত্রীদের সাথে প্রতারণার অভিযোগ ওঠে। বিদেশগামী যাত্রীদের কাছ থেকে টিকেট বাবদ টাকা নিয়ে যাত্রী না পাঠিয়ে এবং অন্য ট্রাভেলস (পাওয়ার অফিস) কর্তৃপক্ষকে ব্ল্যাংক চেক দিয়ে প্রতারণা চালিয়ে আসছেন। প্রায় দু’মাস আগে জুড়ী উপজেলার ফল্লাদপুর গ্রামের মৃত নেছার উদ্দিনের ছেলে কাতার যাত্রী জয়নাল আবেদীন অপর এক যাত্রীসহ ওই ট্রাভেলস মালিককে দু’টি টিকেট বাবদ ৬০ হাজার টাকা দেন। কিন্তু টিকেট ইস্যু না করে জয়নাল আবেদীন ও অপর যাত্রীকে দু’বার ঢাকায় পাঠানো হয়। আজ হচ্ছে কাল হচ্ছে এসব কথা বলে নানাভাবে কালক্ষেপণ করতে থাকেন। এমনকি ওই যাত্রীর পাসপোর্ট ঢাকার ফকিরাপুলস্থ সোমা ইন্টারন্যাশনাল সার্ভিসে আটক রাখেন সেখানকার কর্তৃপক্ষ। তাদের অভিযোগ, বড়লেখার ট্রাভেলস মালিক রফিকুল ইসলামের কাছে তারা টাকা পাবেন। এজন্য তারা বেশ কয়েকটি পাসপোর্ট আটক করেন।
সর্বশেষ প্রতারিত যাত্রী জয়নাল আবেদীন বড়লেখায় তার আত্মীয়-স্বজনদের বিষয়টি জানালে তারা ট্রাভেলস মালিককে এ বিষয়ে কথা বললে ট্রাভেলস বন্ধ করে লাপাত্তা হয়ে যান। গত বৃহস্পতিবার বিকেলে ট্রাভেলস মালিক মাও: রফিকুল ইসলামকে উপজেলার কাঁঠালতলী বাজার থেকে আটক করা হয়। এরপর নিয়ে যাওয়া হয় বড়লেখা পৌর শহরের মহুবন্দ এলাকায়। বিষয়টি সর্বত্র ছড়িয়ে পড়লে পাওনাদার, ভুক্তভোগী এবং প্রতারিত ব্যক্তিরা ভিড় জমান সেখানে। বর্তমানে স্থানীয় মুরব্বিদের জিম্মায় তাকে রাখা হয়েছে। তার আত্মীয়-স্বজনরা না এলে শুক্রবার রাতে পুলিশে সোপর্দ করা হবে।
ভুক্তভোগী সূত্র ও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ভিজিট ভিসায় কাতার গমনের টিকেট বাবদ বড়লেখার দক্ষিণভাগের বাসিন্দা আবুল হাসান তাফাদারের ৯৬ হাজার টাকা, ডিমাই এলাকার স্বপন আহমদের প্রায় ২৫ হাজার টাকা আত্মসাত করেন ট্রাভেলস মালিক রফিকুল ইসলাম। এছাড়া সুড়িকান্দি গ্রামের বাবুল নামের এক ব্যক্তির টাকা আত্মসাত করেন। কাতার যাত্রী পাঠানো বাবদ সিলেটের জনৈক এক ট্রাভেলস ব্যবসায়ীকেও তিনি ব্ল্যাংক চেক দিয়ে প্রতারণা করেন। এসব ছাড়াও বিভিন্ন ব্যক্তির কাছ থেকে টাকা নিয়ে তাদের সাথে প্রতারণা করার অভিযোগ রয়েছে। এ ব্যাপারে রফিকিয়া কম্পিউটার এ- ট্রাভেলস মালিক মাও: রফিকুল ইসলাম এসবের সত্যতা স্বীকার করেন। তবে কিছু কিছু ব্যক্তির টাকা তিনি ফিরিয়ে দিয়েছেন বলে দাবি করেন।
এ বিষয়ে ঢাকার ফকিরাপুলস্থ সোমা ইন্টারন্যাশনাল সার্ভিসের মালিক মোতাহার হোসেন বাবুলের প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক নুুরুল হকের মোবাইল নাম্বার (০১৭১১-৩৪৫৫১৭) রিং হলেও ফোন রিসিভ করেননি।