জুড়ীতে প্রাকৃতিক বন ধ্বংস করে সামাজিক বনায়ন করা হচ্ছে!
এম. মছব্বির আলী : মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় প্রাকৃতিক বন ধ্বংস করে সামাজিক বনায়ন করা হচ্ছে। এতে বন্য প্রাণীদের আবাসস্থল বিপন্ন হয়ে উঠেছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের সমাজভিত্তিক জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন প্রকল্পের কুলাউড়া কার্যালয়ের প্রাকৃতিক সম্পদ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা বশির আহমেদ বলেন, ‘সামাজিক বনায়নের মাধ্যমে একটি বনের পরিবেশ পাল্টে যায়। এতে বড় ক্ষতি হয় বন্য প্রাণীর। তাদের নিজস্ব পরিবেশ নষ্ট হয়ে যায়। স্বাভাবিকভাবেই তাদের আবাসস্থল বিপন্ন হয়ে ওঠে। তাই বন্য প্রাণী রক্ষায় প্রাকৃতিক বন সংরক্ষণ করা দরকার।’ বন বিভাগ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরে জুড়ী-১ রেঞ্জের সাগরনাল বিটের হিংরাছড়া এলাকায় সরকারি টাকায় ৪০ হেক্টর জায়গায় বাঁশবাগান এবং ২০ হেক্টরে বেতবাগান করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। চারা গাছ রোপণের পর নির্দিষ্টসংখ্যক স্থানীয় লোককে উপকারভোগী হিসেবে নিয়োগ করা হবে। প্রত্যেক উপকারভোগী এক একর করে জায়গা পাবেন। তাঁরা অংশীদারির ভিত্তিতে বাগান দেখভাল করবেন। সমপ্রতি বন বিভাগের নিয়োজিত শ্রমিকেরা বনায়নের জন্য নির্ধারিত স্থানের ঝোপঝাড় পরিষ্কারের কাজ শুরু করেন। বন বিভাগের একটি সূত্র জানায়, নিয়ম অনুযায়ী সংরক্ষিত বনের শুধু ফাঁকা জায়গায় সামাজিক বনায়ন করা যাবে। সরেজমিনে দেখা গেছে, হিংরাছড়ায় ছোট-বড় কয়েকটি টিলার নিচের প্রাকৃতিক বনের বাঁশ-বেতসহ বিভিন্ন ধরনের গাছপালা কেটে আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। এর ফাঁকে ফাঁকে গর্জন, চাপালিশসহ বিভিন্ন জাতের বড় কিছু বনজ গাছও আছে। পাশেই সাগরনাল সংরক্ষিত বাঁশমহাল। হিংরাছড়া থেকে ফেরার পথে দেখা হলে পথচারী পাশের দক্ষিণ বড়ডহর গ্রামের মোঃ শাহজাহান (৪০) জানান, হিংরাছড়ার সংরক্ষিত বনে কাঠবিড়ালি, বনমোরগ, গন্ধগোকুল, বানর, মায়া হরিণ, মেছো বাঘসহ বিভিন্ন জাতের বন্য প্রাণী আছে। খাবারের খোঁজে এসব প্রাণী মাঝেমধ্যে লোকালয়ে ঢুকে পড়ে।