গোয়াইনঘাটে ছাত্রী ধর্ষণ মামলায় ভাই-বোনসহ ৩ জনের যাবজ্জীবন কারাদন্ড

ডেস্ক রিপোর্ট : গোয়াইঘাটে ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্রীকে ধর্ষনের মামলায় ভাই-বোনসহ ৩ জনকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে সিলেটের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিজ্ঞ বিচারক আবুল কাশেম মোঃ মোস্তফা এ রায় ঘোষনা করেন। রায়ের সাথে প্রত্যেক সাজাপ্রাপ্ত আসামীকে ১ লক্ষ টাকা করে জরিমানাও করা হয়েছে। জরিমানা দিতে না পারলে প্রত্যেক সাজাপ্রাপ্ত আসামী আরো ২ বছর করে কারাভোগ করতে হবে। সাজাপ্রাপ্ত আসামীরা হচ্ছে- গোয়াইঘাট থানার জুগইলকান্দি গ্রামের আব্দুল হান্নানের পুত্র ছালেহ আহমদ, একই এলাকার হারিছ আলীর পুত্র শরফ উদ্দিন তার বোন রাবিয়া বেগম। রায় ঘোষনার সময় ছালেহ আহমদ ও শরফ উদ্দিন আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত থাকলেও আসামী রাবিয়া বেগম এ সময় পলাতক ছিলেন।
মামলা সুত্রে জানা গেছে, গোয়াইঘাট থানার জুগইলকান্দি গ্রামের সামছুল হকের মেয়ে ৪র্থ শ্রেণীর ছাত্রী মোচ্ছাঃ সূর্য্যবান বিবি স্থানীয় প্রাইমারী স্কুলে যাওয়া আসার পথে ছালেহ আহমদ উত্ত্যক্ত করে আসছিল। তার ভয়ে মোচ্ছাঃ সূর্য্যবান বিবির পরিবার তার স্কুলে যাওয়া ও লেখা-পড়া বন্ধ করে দেন। মোচ্ছাঃ সূর্য্যবান বিবি স্কুলে যেতে না দেখে ছালেহ আহমদ তার পাশ্ববর্তী বাড়ির শরফ উদ্দিনের বাড়িতে আসা যাওয়া করে এবং তাকে বাহিরে পেলে বিভিন্ন সময় কুপ্রস্তাব দিতে থাকে। এ ধরণের কুপ্রস্তাবে সে রাজি না হলে পরিকল্পিতভাবে ও কৌশলে গত ২০০৩ সালের ১৪ এপ্রিল সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে ছালেহ আহমদ ও শরফ উদ্দিন রাবিয়াকে দিয়ে তার পাশের বাড়ি শরফ উদ্দিনের ঘরে সূর্য্যবান বিবিকে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে ঘরে রেখে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দেয় শরফ উদ্দিন। এ সময় ঘাটের নিচে লুকানো ছালেহ আহমদ বের হয়ে তাকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। এ ঘটনায় মোচ্ছাঃ সূর্য্যবান বিবি বাদি হয়ে ছালেহ আহমদ, শরফ উদ্দিন ও তার বোন রাবিয়া বেগমকে আসামী করে গোয়াইঘাট থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। নং- ১৫ (৩০-৪-০৩)। দীর্ঘ তদন্ত শেষে গোয়াইঘাট থানার এসআই কামাল উদ্দিন চৌধুরী আসামী ছালেহ আহমদ, শরফ উদ্দিন ও তার বোন রাবিয়া বেগমকে অভিযুক্ত করে আদালতে এ মামলার চার্জশিট দাখিল করেন। এরপর বছর অভিযোগপত্র গঠন করে আদালত এ মামলার বিচার কাজ শুরু করেন। দীর্ঘ শুনানী ও ১২ সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত আসামী ছালেহ আহমদ, শরফ উদ্দিন ও তার বোন রাবিয়া বেগমকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন/২০০০ সনের ৯ (১)’র ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাদেরকে উলে¬খিত দন্ডাদেশ প্রদান করেন। রাষ্ট্রপক্ষে বিশেষ পিপি এডভোকেট আব্দুল মালেক ও আসামীপক্ষে এডভোকেট শাহ মোঃ মশাহিদ আলী মামলাটি পরিচালনা করেন।