সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন চায় জাতিসংঘ

ডেস্ক রিপোর্ট : সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণে দেশে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন দেখতে চায় জাতিসংঘ। সেজন্য ঐক্যমতের ভিত্তিতে দলগুলোকে সমঝোতায় এসে সুষ্ঠু নির্বাচনের একটি পথ তৈরি করতে হবে।
শনিবার সন্ধ্যায় গুলশান কার্যালয়ে বিএনপি চেয়ারপারসন ও বিরোধী দলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠকে সফররত জাতিসংঘের সহকারি মহাসচিব জাতিসংঘ মহাসচিব বান কি মুনের উদ্ধৃতি দিয়ে একথা জানান। বিরোধী দলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়াও তার সঙ্গে একমত পোষণ করেন। ঘন্টাব্যাপী বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বিফ্রিংকালে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী এসব কথা জানান।
জাতিসংঘের রাজনৈতিক শাখার সহকারি মহাসচিব ওসকার ফার্নান্দেজ বাংলাদেশে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতির খোঁজ-খবর নিতে শুক্রবার ঢাকায় আসেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে বিরোধী দলীয় নেতা বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠক করেন। বিরোধী দলীয় নেতার সঙ্গে বৈঠকের সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আব্দুল মঈন খান, ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ড. ওসমান ফারুক, রিয়াজ রহমান, সাবিহউদ্দিন আহমেদ ও বিরোধী দলীয় চীফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন ঢাকায় নিযুক্ত জাতিসংঘের আবাসিক প্রতিনিধি নিল ওয়াকার ।
বৈঠক শেষে শমশের মবিন চৌধুরী প্রেস ব্রিফিংএ বলেন, বৈঠকে বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সামপ্রতিক সময়ে বাংলাদেশে সংঘটিত রাজনৈতিক সহিংসতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে জাতিসংঘ মহাসচিব প্রধানমন্ত্রী ও বিরোধী দলীয় নেতাকে যে চিঠি দিয়েছেন সে ব্যাপারেও কথা হয়েছে।
শমসের মবিন চৌধুরী আরো জানান, বৈঠকে ওসকার ফার্নান্দেজ তারানকো জানান, জাতিসংঘ বাংলাদেশে সবদলের অংশগ্রহণে অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন দেখতে চায়। জবাবে খালেদা জিয়া দলীয় সরকারের অধীনে তা সম্ভব নয় বলে তাকে অবহিত করেন। এসময় ওসকার ফার্নান্দেজ বলেন, আমরা আশাকরি রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সমঝোতার ভিত্তিতে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথ বের করবে।
এদিকে এরআগে বেলা সাড়ে এগারটার দিকে বিএনপির সাত সদস্যের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে সফররত ফার্নান্দেজ তারানকোর সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে দেশব্যাপী বিরোধী দলীয় নেতাকর্মীদের উপর দমন নিপীড়ন, বিশেষ করে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিরোধী দলীয় চীফ হুইপসহ শীর্ষ নেতাদের বারে বারে কারাগারে নেয়া, মিথ্যা মামলা দায়ের, কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে পুলিশের অভিযান ও শাপলাচত্বরে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীদের উপর গভীর রাতে যৌথ বাহিনীর অভিযানসহ বিভিন্ন ঘটনা তুলে ধরেন। বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের উপর নির্যাতনসহ নানা ঘটনার ভিডিও চিত্র, পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনও বিএনপির পক্ষ থেকে পেশ করা হয়।
ওই বৈঠকে উপস্থিত লিেন এমন একজন নেতা জানান, একতরফাভাবে নিদর্লীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করার ফলে আগামী নির্বাচন নিয়ে যে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হয়েছে এ ব্যাপারে জাতিসংঘের সহকারি মহাসচিবকে অবহিত করা হয়। এছাড়াও আগামী নির্বাচনকালীন সরকার পদ্ধতি নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে যেসব প্রস্তাব তুলে ধরা হয়েছে সে ব্যাপারে সরকারের অনাগ্রহের বিষয়টিও তুলে ধরেন বিএনপি নেতারা।
ফার্নান্দেজ তারানকোর নেতৃত্বে চার সদস্যের জাতিসংঘ প্রতিনিধি দলটি শুক্রবার ঢাকায় আসেন এবং ওইদিনই আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও এলজিআরডি মন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এবং প্রধানমন্ত্রীর পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা ড. গওহর রিজভীর সঙ্গে তার বৈঠক হয় ।