কর অবকাশ সুবিধা থাকছে আরো ২ বছর

শিল্পখাতের কর অবকাশ সুবিধার মেয়াদ আরো দুবছর বাড়ানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। একইসঙ্গে আগামী বাজেট থেকে বিভিন্ন প্রণোদনার অর্থ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের পরিবর্তে অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে রাখা হবে বলেও জানান তিনি।
সোমবার অর্থ মন্ত্রণালয়ে ২০১৩-১৪ অর্থবছরের বাজেটে কৃষির জন্য সুপারিশমালা বিষয়ক অনুষ্ঠানে একথা বলেন মন্ত্রী।
মুহিত বলেন, “২০১৩ সালে যাদের কর অবকাশ সুবিধা শেষ হয়ে যাচ্ছে তারা আরো দুবছর কর অবকাশ সুবিধা পাবে।”
মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় পোল্ট্রি শিল্পের প্রণোদনার অর্থ খরচ করতে না পারায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন অর্থমন্ত্রী।
তিনি বলেন, “এবার প্রণোদনার টাকা অর্থ মন্ত্রণালয়ের কাছে রাখা হবে। এ টাকা খরচ করার জন্য একটা নীতিমালা তৈরি করে দেওয়া হবে।”
অর্থমন্ত্রী জানান, কৃষিখাতে ভর্তুকির অর্থ সার আমদানিতে না দিয়ে এখন থেকে সরাসরি কৃষকের হাতে পৌঁছে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে সরকার।
কৃষি ভর্তুকি অব্যাহত থাকবে বলে আশ্বাস দিয়ে অর্থমন্ত্রী বলেন, “কৃষি ভর্তুকি এক ধরনের বিনিয়োগ। এটা অব্যাহত রাখা হবে। আগামী বাজেটে কৃষিখাতের জন্য প্রায় ৯ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ থাকছে।”
অর্থ মন্ত্রণালয় সুত্রে জানা গেছে, চলতি অর্থবছরের সংশোধিত বাজেটে কৃষি ভর্তুকির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১২ হাজার কোটি টাকা। তবে এর মধ্যে প্রায় ৬ হাজার কোটি টাকাই খরচ হচ্ছে আগের বছরের পাওনা পরিশোধে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, “আগামী বছর থেকে বকেয়া পরিশোধ করা লাগবে না। এজন্য ভর্তুকিও কম লাগবে।”
গ্রামীণ অর্থনীতি নিয়ে আশাবাদী মুহিত বলেন, “শহরের চেয়ে গ্রাম অনেক ভালো আছে। গ্রামে একদিনের মজুরি ৩০০ টাকা, যা কয়েকবছর আগেও ১০০ টাকা ছিল। এছাড়া আমরা ১৫০০ প্রাথমিক বিদ্যালয় নির্মাণের যে কাজ শুরু করেছি তা শেষ হলে প্রতি দুকিলোমিটারের মধ্যে প্রাথমিক বিদ্যালয় হবে।
“তবে গ্রামে এখনো বিদ্যুৎ ও রাস্তাঘাটের সমস্যা রয়েছে।”
ধানের মূল্য নির্ধারণ বিষয়ে তিনি বলেন, “ধানের একটা নির্দিষ্ট মূল্য নিশ্চিত আমরা করিও না, পারবোও না। তবে সংগ্রহের জন্য আমরা একটা মূল্য নির্ধারণ করি, এটা বাজার স্থিতিশীলতায় ভূমিকা রাখে।”
কৃষিবিষয়ক বাজেটের ৫৮টি সুপারিশ অর্থমন্ত্রীর কাছে জমা দেন বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল আইয়ের পরিচালক ও বার্তা প্রধান শাইখ সিরাজ। চ্যানেল আইয়ের জনপ্রিয় অনুষ্ঠান হৃদয়ে মাটি ও মানুষ অনুষ্ঠানের পক্ষ থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংলাপ করে এসব সুপারিশ তুলে আনা হয়েছে।
এর মধ্যে কৃষিখাতের ২২টি, পোল্টি শিল্পের ১৩টি, মৎস খাতের ১২টি, এবং প্রাণিসম্পদ ও দুগ্ধ শিল্পের জন্য ১১টি সুপারিশ রয়েছে।
সুপারিশের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো- বিশেষ কৃষি নিরাপত্তা তহবিল গঠন, কৃষিতে বীমা ব্যবস্থা প্রবর্তন, চরাঞ্চলের কৃষি উন্নয়নে বিশেষ বরাদ্দ, সার কারখানা স্থাপন, ধানের মূল্য নিশ্চিত করা, কৃষিপণ্য আমদানি নীতি সংশোধন, কৃষি সম্প্রসারণ ব্যবস্থাপনাকে আধুনিকীকরণ ও কৃষি গবেষণায় বিশেষ বরাদ্দ প্রভৃতি।