জুড়ীতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো পার হয় ৬ ইউনিয়নের মানুষ

এম. মছব্বির আলী : একটি ব্রিজের অভাবে মৌলভীবাজারের জুড়ীতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে একটি বাঁশের সাঁকো পারাপার হয় ৬ ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষ। ইউনিয়নগুলো হলো জায়ফরনগর, পশ্চিমজুড়ী, পূর্বজুড়ী, গোয়ালবাড়ি, এবং বড়লেখা উপজেলার দক্ষিনভাগ ও সুজানগর ইউনিয়ন। জুড়ী উপজেলার জাঙ্গিরাই-সুজানগর রাস্তার পশ্চিম বাছিরপুর গ্রামের খালের মুখ নয়াবাজার সংলগ্ন ঐতিহ্যবাহী জুড়ী নদীর উপর ওই বাঁশের সাঁকোটি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ন অবস্থায় আছে। ওই নদীতে কোন ব্রীজ না থাকায় শুরু থেকে এলাকাবাসী ওই বাঁশের সাঁকোটি নির্মান করেন। প্রতিনিয়ত এ সাঁকো দিয়ে শত শত লোক পারাপারের কারনে এটি বর্তমানে নাজুক অবস্থায়। ফলে, যে কোন সময় এটি ভেঙ্গে দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। তারপরও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ পথেই যাতায়াত করতে হয় শত শত মানুষকে। প্রতিদিন সাঁকো দিয়ে পারাপার হয় বিভিন্ন পেশাজীবির লোক। শিক্ষা কিংবা জীবনের তাগিদে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে এ সাঁকো পারাপার হয় শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কৃষক, শ্রমিক, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন পেশাজীবিদের। এলাকাবাসীর ক্ষোভ, স্বাধীনতা পরবর্তী বহু সরকার আসলেও জুড়ী নদীর ওই সাঁকোর স্থানে অদ্যাবধি একটি ব্রিজ নির্মানে কোনো উদ্যোগ নেয়া হয়নি। জানা গেছে, উপজেলার ওই সাঁকো দিয়ে জাঙ্গিরাই, শিমুলতলা, নয়াগ্রাম, ইউসুফনগর, বাছিরপুর, খাগটেকা, চালবন, কুইয়াছড়া, কৃষ্ণনগর (মোহাম্মদপুর), কালনীগড়, ভবানীপুর, নয়াবাজার, গোয়ালবাড়ি, বড়ধামাই, পাতিলাসাঙ্গন, দক্ষিনভাগ. আজিমগঞ্জ, সুজানগরসহ অন্যান্য গ্রামের হাজার হাজার লোক প্রতিদিন যাতায়াত করে। এছাড়া এ সাঁকো দিয়ে অত্রাঞ্চলের স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসাগামী শিক্ষার্থীরা জুড়ী মডেল উচ্চ বিদ্যালয়, নিরোদবিহারী উচ্চ বিদ্যালয়, জুড়ী টি এন খানম একাডেমী ডিগ্রি কলেজ, নয়াগ্রাম শিমুলতলা দাখিল মাদ্রাসা, নয়াবাজার শিশু শিক্ষা সদন সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, আমতৈল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, কুইয়াছড়ি দাখিল মাদ্রাসা, নয়াবাজার আহ্মদিয়া ফাজিল মাদ্রসা, নয়াগ্রাম সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে পড়ালেখা করতে যায়। ফলে, সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠিয়ে অভিভাবকরা উদ্বিগ্ন থাকেন। স্থানীয়বাসিন্দা হাজী ওয়াহিদ আলী (৮৫), ইউসূফ আলী (৪৫), আব্দুল বারিক (৩৫), বাবুল মিয়া (৪৭)ও নাসির উদ্দিন (৩০) জানান, জাঙ্গিরাই-সুজানগর রাস্তার ওই সাঁকো দিয়ে বিভিন্ন শ্রেনীর লোকজন পার হন। হাকালুকি হাওরাঞ্চলের প্রায় ১০ হাজার হেক্টর জমির ধান জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো পারাপার হন কৃষকরা। উক্ত রাস্তায় বিকল্প পথ না থাকায় এ সাঁকো দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়েই পার হতে হয় তাদের। তারা আরও জানান, সব পেশাজীবির লোক জুড়ী শহরস্থ বিদ্যালয়, বিভিন্ন গ্রামের লোকজন এ সাঁকো পার হয়ে যেতে হয়। তাদের আশংকা যে কোন সময় সাঁকোটি ভেঙ্গে কিংবা সেখান থেকে পড়ে বড় ধরনের দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। তাই এখানে অবিলম্বে নতুন একটি ব্রিজ নির্মানের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের নিকট জোর দাবী জানান এলাকাবাসী।