একের পর এক হরতালে কয়েক হাজার মানুষের পিঠ ঠেকেছে দেয়ালে ব্যবসায়ীরা করেছেন মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ
মৌলভীবাজার প্রতিনিধি : একের পর এক হরতালে দেশের অন্যতম পর্যটন নগরী মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল পর্যটন নির্ভর আবাসিক হোটেল, রেস্ট হাউস, রেষ্টুরেন্ট, হকার ও ট্যুর গাইডরা পড়েছেন চরম বিপাকে। লোকসান গুনতে গুনতে পর্যটনের সাথে সম্পৃক্ত কয়েক হাজার মানুষের পিঠ ঠেকেছে দেয়ালে। অন্যদিকে হরতালে পিকেটাররা ব্যবসায়ীদের দোকানপাট ভাঙচুরের ঘটনায় শ্রীমঙ্গলের ব্যবসায়ীরা করেছেন মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা। শ্রীমঙ্গলের লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান ও চা বাগানসহ রয়েছে প্রায় শতাধিক পর্যটন স্পট। আর এই স্পটগুলোকে ঘিরে রয়েছে অর্ধশত ট্যুর গাইড। হরতালে পর্যটকদের ট্যুর বাতিল হওয়ায় পর্যটন স্পটগুলো যেমন থাকে জনশূন্য তেমনি কোন আয় রোজগার না করতে পেরে পরিবার-পরিজন নিয়ে ট্যুর গাইডরাও পড়েছেন চরম অর্থকষ্টে।
লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের ট্যুর গাইড লিটন পাল জানায়, হরতালের কারণে তার ১০টি বিদেশি পর্যটক ট্যুর বাতিল হয়েছে। পাশাপাশি হরতালের কারণে বিদেশিরা দেশ ছেড়ে চলে যাচ্ছে। এতে করে চরম অর্থ সংকটে পরিবার-পরিজন নিয়ে দিন কাটাচ্ছেন তিনি। অন্যদিকে হরতাল ঘোষণার দিন থেকেই শুরু হয় হোটেল-রেস্ট হাউজের বুকিং বাতিল হওয়া। এতে প্রায় দুই শতাধিক হোটেল-রেস্ট হাউজের কয়েক হাজার কর্মীর বেতন ভাতা ও আনুষঙ্গিক খরচ সামাল দিতে গিয়ে অনেকটা দেয়ালে পিঠ ঠেকেছে মালিকদের। বাংলাদেশ চা বোর্ড নিয়ন্ত্রিত শ্রীমঙ্গল টি রিসোটের্র ম্যানাজার অরুন জানান, একসময় টি রিসোর্টের রুম পাওয়া কষ্টসাধ্য থাকলেও এখন হরতালের কারণে প্রতিটি কটেজ খালি পরে থাকে। এতে করে লোকসান গুনতে হচ্ছে এই প্রতিষ্ঠানটিকে। এদিকে বিগত হরতালে পক্ষ-বিপক্ষের পিকেটাররা দোকানপাট ভাঙচুর করায় ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ীরা। শ্রীমঙ্গল ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি শেখ লুৎফুর রহমান বলেন, হরতালের আওতামুক্ত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে হামলা ভাঙচুর মেনে নেয়া যায় না। আগামীতে এর পুনরাবৃত্তি হলে ব্যবসায়ীরা রাজপথে এসে এর জবাব দেবে। লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যানের টিকেট মাস্টার জানান, প্রতিদিন উদ্যানে ৫ থেকে ৬শ’ পর্যটকের আনাগোনা থাকলেও বর্তমানে এখানে পর্যটকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে মাত্র ১০ থেকে ১২ জনে। পর্যটন নির্ভর জীবিকা নির্বাহকারীদের দাবি প্রয়োজনে হরতালের বিকল্প কর্মসূচি নিয়ে হলেও তাদের পরিবার-পরিজনের মুখে দু’মুঠো অন্ন তুলে দেয়ার পথ যেন তারা খোলে রাখেন এই দাবি শ্রীমঙ্গলবাসীর।