শমশেরনগর রেলওয়ে ষ্টেশনের উন্নয়ন মুলক কাজ শেষ হতে না হতেই পিছ ঢালা খসে উঠছে

এম. মছবির আলী : সিলেট-আখাউড়া সেকশনের শমশেরনগর রেলওয়ে ষ্টেশনের উন্নয়ন মুলক কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ৫৪ লাখ ১৭ হাজার টাকা ব্যয়ে শুরু থেকেই অনিয়মের মধ্য দিয়ে কাজ সম্পন্ন হওয়ায় রাস্তার পাকাকরণ শেষ হতে না হতেই পিছঢালা গর্ত হয়ে খসে উঠছে। সরেজমিনে দেখা যায়, গত ১৭ ফেব্রম্নয়ারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চৌধুরী ট্রেডার্স শমশেরনগর রেলওয়ে ষ্টেশনের পস্নাটফর্ম ও কার পার্কি রাস্তা সম্প্রসারণ ও রিপিয়ারিং কাজ শুরু করে। ৯০ দিনের মধ্যেই তিনটি ভাগে বিভক্ত রেলওয়ে ষ্টেশনের উন্নয়ন মুলক এই কাজ সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। তাড়াহুড়ো করেই ঠিকাদার ভেঙ্গে ফেলা রাস্তার পুরনো মাটি ও ইটের গুড়ো পুনরায় পিছ ঢালাইর নিচে ব্যবহার করেই রাস্তার সম্প্রসারণ কাজ সম্পন্ন করেন। ফলে এখন বৃষ্টির কারণে রাস্তার পাকাকৃত পিছ ঢালা গর্ত হয়ে উপরের পলেস্থারা উঠে যেতে শুরু করেছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, কার পার্কিং ২৩ ফুট রাস্তা সম্প্রসারন হওয়ার কথা। রাস্তা নির্মাণের জন্য রেলওয়ের এসব ভূমিতে গড়ে উঠা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এমনকি মসজিদের পাশ পর্যন্ত ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে। অথচ ঠিকাদার সুবিধা পেয়ে কতিপয় ব্যবসায়ী দোকানের ঢালাই না ভেঙ্গে আঁকা বাকা করে কোথাও ২৩ ফুট আবার কোথাও ২১ ফুট প্রশস্থ করে রাস্তার কাজ সম্পন্ন করেছেন। এসব কাজে পরিমাণ মতো মসলা না দিয়ে নিম্নমানের বালু পাথর ব্যবহার করা হয়েছে। ফলে পাকা কাজ শেষ হতে না হতেই পিছ ঢালা উঠে যাচ্ছে। শমশেরনগরের স্থানীয় ব্যবসায়ী মানবাধিকার কর্মী মুর্শেদুর রহমান বলেন, উন্নয়ন কাজ চলাকালীন সিডিউল ও সিটিজেন চার্ট টাঙ্গিয়ে কাজ করার কথা। কিন্তু কোথাও এই চার্ট পাওয়া যায়নি। তিনি আরও বলেন, কাজ নিয়ম মাফিক সুষ্টভাবে সম্পন্ন হওয়ার দাবি জানালে ঠিকাদার একজন মন্ত্রীর আত্মীয় পরিচয়ে স্থানীয় পুলিশ দিয়ে তাকে নাজেহাল করানোর চেষ্টা করেন। রেলওয়ে ষ্টেশনের কাজ চলাকালীন সময়ে সরেজমিনেও কর্তব্যরত ঠিকাদারের কাছে কোন সিডিউল ও নকশা পাওয়া যায়নি। ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট প্রকৌশলীর কাছ থেকে কোন তথ্য ও সিটিজেন চার্ট দেখতে না পেয়ে সিটিজেন চার্ট প্রকাশ ও সিডিউল মোতাবেক কাজের জন্য স্থানীয় লোকজন কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে লিখিত অভিযোগ করেন। কাজে অনিয়মের অভিযোগ বিষয়ে ঠিকাদার সৈয়দ নুরুজ্জামান বাবু অনিয়মের কথা অস্বীকার করে বলেন, ঠিকাদারের কাছে সিডিউল ও নকশার কোন নিয়ম নেই। রাসত্মা সম্প্রসারণ কাজে সাব বেইজ নেই এবং ঢালাইর নিচে থাকবে সে কারণে ভেঙ্গে ফেলা রাসত্মার পুরনো মাটি ও ইটের গুড়ো দিতে হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। রেলওয়ের সিলেট বিভাগীয় সহকারী প্রকৌশলী মুজিবুর রহমানের কাছে সিডিউল ও নকশা দেখতে চাইলে তাদের কাছে সিডিউল ও নকশা নেই বলে এ প্রতিবেদকে জানান। তবে প্রকৌশলী আলাদা আলাদা তিনটি পার্টে কাজে মোট ৫৪ লাখ ১৬ হাজার ৮শ’ ৯৯.২০ টাকা ব্যয়ে কাজ হচ্ছে বলে জানান। এ ব্যাপারে কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, কাজে অনিয়ম বিষয়ে তিনি খতিয়ে দেখবেন।