দেশের চা বাগানের শ্রমিকদের কর্মবিরতি : মন্ত্রীর আশ্বাসে ২৪ ঘন্টাপর কর্মবিরতি প্রত্যারহার

সৈয়দ ছায়েদ আহমদ : শ্রমমন্ত্রী রাজি উদ্দিন রাজু, শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ান, শ্রম বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ইস্রাফিল আলম এমপি উপস্থিতে ঢাকায় এক বৈঠকে সমঝোতার ভিত্তিতে চা শ্রমিকদের ন্যায় সংঙ্গতদাবি পুরনের আশ্বাসে দেশের চা বাগানে ২৪ ঘন্টা কর্মবিরত পালন শেষে আজ বুধবার থেকে আবারও কাজ শুরু করবে চা শ্রমিকরা। ২০ দফা দাবিতে জেলার ৯২টি চা বাগানের শ্রমিকরা একযোগে কর্মবিরতি পালন করছেন। মঙ্গলবার সকালে এ কর্মবিরতি শুরু হয়। তবে কর্মবিরতি কতোদিন চলবে এবং পরবর্তী কর্মসূচি কি হবে সে ব্যাপারে দুপুরে শ্রমিকদের এক সমাবেশে নির্ধারণ করা হবে বলে চা শ্রমিক সূত্র থেকে জানা গেছে। বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের নির্বাচিত সাধারণ সমপাদক রাম ভজন কৈরী জানান, ২০১১ সালের ১সেপ্টেম্বর মালিক পক্ষের কাছে ২০ দফা দাবি পেশ করা হয়েছিল। এরপর দীর্ঘদিন পেরিয়ে গেলেও দাবিগুলোর প্রতি বাগান মালিকরা কোনো সম্মান দেখাননি। এমনকি এ ব্যাপারে আলোচনায়ও বসেননি তারা। ফলে বাধ্য হয়ে দলমত নির্বিশেষে জেলার সব চা বাগানের সাধারণ শ্রমিকরা একজোট হয়ে কর্মবিরতির ঘোষণা দেন। শ্রমিকদের ২০ দফা দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে- অবিলম্বে লেবার হাউজ দখলমুক্ত করা, দৈনিক মজুরি ১২০ টাকা করা, চা বাগানে ভিটা উচ্ছেদ আইন বাতিল করে ভূমি অধিকার প্রতিষ্ঠা করা, চা শ্রমিক সন্তানদের শিক্ষা বৃত্তি পুনরায় চালু করা, চাকরি ক্ষেত্রে ও শিক্ষা গ্রহণ ক্ষেত্রে চা শ্রমিকদের কোটা রাখা। এছাড়া অপরাংশ বিজয় বুনাজী গ্রুপ ২৩ মে বৃহস্পতিবার থেকে দেশের সব চা বাগানে তাদের ১৮ দফা আদায়ের দাবীতে একযোগেদাবি আদায় না হওয়া পর্যনত্ম কর্ম বিরতি পালন করবেন বলে জানান । এদিকে এক দলের শুরু হওয়া ও অপর দলের ডাকা কর্মবিরতি প্রত্যাহার ও তাদের দাবীদাওয়া নিয়ে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে ঢাকা শ্রমমন্ত্রীর কার্যালয়ে শ্রমিকদের নিয়ে এক জরুরী বৈঠকে তাদের ৫দফা দাবী মেনে নিলে দুই গ্রুপই তাদের ডাকা ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেয়। বৈঠকে সমজোতা গুলো হলো, আজ বুধবার থেকে লেবার হাউজ পরিচালনা করবে সরকারের প্রতিনিধি ( শ্রম পরিচালক), আগামী ১০ দিনের মধ্যে উভয় পক্ষের সকল মামলা তুলে নিতে হবে। ১৫ দিনের মধ্যে নির্বাচন প্রকৃয়া শুরু হবে এবং আগামী জুলাই মাসের মধ্যে নির্বাচন সম্পন্ন করা হবে। এ ছাড়াও আগামী দ্বি বার্ষিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার আগ পর্যন্ত মালিক পক্ষ শ্রমিকদের হাজিরা ৫৫ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬২ টাকা করে দিবেন। শ্রমিকদের দন্দ নিরসনের এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, শ্রমমন্ত্রী রাজি উদ্দিন রাজু, শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুন্নুজান সুফিয়ান, শ্রম বিষয়ক সংসদীয় স্থায়ী কমিটির চেয়ারম্যান ইস্রাফিল আলম এমপি, শ্রম সচিব মিকাল সিপার ও শ্রম পরিচালক খোরশেদ আলম। এ ছাড়াও শ্রমিকদের মধ্যে রামভজন কৈরীরসহ তার পক্ষের ৭জন ও বিজয় বুনার্জীসহ তার পক্ষের আরো ৭ জন।