কুলাউড়ায় স্ত্রী হত্যার বিচার চেয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন মুক্তিযোদ্ধা ইয়াকুব
কুলাউড়া প্রতিনিধি : কুলাউড়ার কর্মধা ইউনিয়নের নূনা গ্রামের বহুল আলোচিত গৃহবধূ আছমা বেগম (৪৫) হত্যাকাণ্ডের ১৭ দিন পেরিয়ে গেলেও এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এদিকে মামলার অগ্রগতি নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন পরিবারের সদস্যরা। গোটা এলাকায় লোমহর্ষক এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় তোলপাড় চলছে। সচেতন মহলের কাছে হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ। একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা ও সেনাবাহিনীর (অব.) সদস্যের স্ত্রীকে এমন নির্মমভাবে হত্যা করা এবং হত্যাকাণ্ডের ১৭ দিনেও কোনো ক্লু উদ্ধার না হওয়া এবং সন্দেহভাজনদের গ্রেফতার না করায় পুরো বিষয়টি এখন রহস্যময়। অন্যদিকে স্ত্রী হত্যার বিচার চেয়ে দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন মুক্তিযোদ্ধা ইয়াকুব আলী। তিনি বলেন, আমি অসুস্থ মানুষ। পুরো পরিবার পরিচালনা করতেন আছমা। ওই দিন বাজার খরচ ও আমার ওষুধ আনতে রবিরবাজারে গিয়েছিলেন আছমা। কিন্তু তাকে লাশ হয়ে বাড়ি ফিরতে হলো। ১৯৬৫ সালে সেনাবাহিনীতে যোগ দিই আর ৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি। কিন্তু আজ স্ত্রী হত্যার বিচারের জন্য পুলিশ প্রশাসন, স্থানীয় প্রশাসনসহ মানুষের দ্বারে দ্বারে ঘুরতে হচ্ছে আমাকে। তিনি আরো বলেন, আমার ছোট মেয়ে দ্বাদশ শ্রেণীতে পড়ে। তার বিয়ে-সংক্রান্ত একটি প্রস্তাবে রাজি না হওয়াই আছমার জন্য কাল হয়ে দাঁড়াল। মামলার অভিযুক্ত আসামি পৃথিমপাশার আমুলী গ্রামের হোসেন আলীর ছেলে সুমন (২৪) আমার মেয়েকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। ছেলেটি চোরাকারবারি, তাই আমরা রাজি হইনি। সুমনসহ তার চাচাতো ভাই জসিমকে (২৫) আসামি করে ১৪ দিন আগে মামলা হলেও আজও তাদের আটক করা হয়নি। তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, সীমান্ত দিয়ে আসামিরা ভারতে পালিয়ে গেছে। আছমা বেগমের ছেলে শামসুজ্জামান, শাহেদুজ্জামান, ফখরুজ্জামান ও রাশেদুজ্জমান (১১) কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলে, আমাদের মায়ের সঙ্গে এলাকার কারো বিরোধ নেই এবং পরিবারের সঙ্গেও কারো বিরোধ নেই। মা সবার সঙ্গে মিলেমিশে থাকতেন। আমরা দুর্ভাগা, মায়ের স্বাভাবিক লাশটিও পাইনি। উলেখ্য, গত ৫ মে ফানাই নদীর তীরবর্তী একটি শস্যক্ষেতে আছমা বেগমের ক্ষতবিক্ষত লাশ পাওয়া যায়। তিনি সাত সন্তানের জননী।