নাড়ির টানে বাংলাদেশে যুদ্ধশিশুর মেয়ে
প্রবাস ডেস্ক :: বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো এসেছেন কানাডার নাগরিক ক্যাটরিনা। দেখতে এসেছেন মায়ের দেশকে। তার মা শিখা চার মাস বয়সে ছেড়েছেন এ দেশ। ১৯৭২ সালে একাত্তরের ১৪ জন যুদ্ধশিশুর সাথে। তাই ক্যাটরিনার আসাটা আর দশজন পর্যটক মতো নয়, রয়েছে নাড়ির টান।
মুক্তিযুদ্ধের ৯ মাসে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আর তাদের দোসররা বাঙালি নারীর ওপর যে নৃশংস নির্যাতন চালিয়েছিল, সেই ইতিহাসই শিখা আর ক্যাটরিনা।
১৯৭১, বাঙালির অহংকার। আবার, মানবতার বিরুদ্ধে সব ধরনের অপরাধও ঘটেছে বাঙালির ওপর, এই সময়েরই। দীর্ঘ ৯ মাস তাদের এ দেশের নারীদের উপর চালানো হয়েছিল মানব সভ্যতার ইতিহাসের নিকৃষ্টতম নির্যাতন। অনেকেই জন্ম দিয়েছিলেন যুদ্ধশিশু।
যুদ্ধ শেষে সেই সময়ের সমাজ বাস্তবতায় এই শিশুদের গ্রহণ করা ছিল প্রায় অসম্ভব। এই শিশুদের জন্য সর্বপ্রথম এগিয়ে আসেন কানাডার কাপুচিনো দম্পতি। তাদের ‘ফ্যামিলিজ ফর চিলড্রেন’ নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, ১৯৭২ সালে ১৯ জুলাই একাত্তরের ১৫ জন যুদ্ধশিশুকে নিয়ে যায় কানাডা।
শুধুমাত্র এ শিশুদের জন্য বাবা-মায়ের আদর আর একটি নিশ্চিত আশ্রয়ের ব্যবস্থাই করে দেননি কাপুচিনো দম্পতি, নিজের সন্তানের পরিচয়ে বড় করেছেন যুদ্ধশিশুদের প্রথম দলে যাওয়া শিখাকে।
একাত্তরে নারীদের উপর নির্যাতনের ভয়াবহ সব বর্ণনা শুনে, শিখার ক্যাটরিনার চোখের পানি যেন কোনভাবেই বাঁধ মানছিল না। শুক্রবার মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরের আয়োজনে এক আলাপচারিতায় যোগ দিয়েছিলেন ক্যাটরিনা ও বনি কাপুচিনো।
বনি কাপুচিনো জানালেন, যুদ্ধের পর শত্রুর অংশ হিসেবে মনে করা হয় যুদ্ধশিশুদের। তাই বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের পরের যুদ্ধশিশুদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করতেই এগিয়ে এসেছিলেন তিনি।
এদিকে, আয়োজকরা জানালেন, মুক্তিযুদ্ধের প্রতি সত্যিকারের সম্মান জানাতে হলে, একাত্তরের বীরাঙ্গনা আর যুদ্ধশিশুদের সম্মান দেয়া প্রয়োজন।
সৌজন্যে: সময় টিভি