বোরহানের পা জড়িয়ে ধরলেন কাজল
নিউজ ডেস্ক :: দীর্ঘদিন ধরেই তাদের সম্পর্ক ছিল সাপে-নেউলে। এরই ধারায় আখাউড়া পৌরসভা নির্বাচনে দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শেখ বোরহান উদ্দিন আহমেদ। আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী বর্তমান মেয়র তাকজিল খলিফা কাজলের আচার-আচরণে বোরহানসহ অনেক নেতাই ছিলেন ক্ষুব্ধ। বোরহান প্রার্থী হলে দলের একটি বড় অংশ বোরহানকে সমর্থন দেয় নীরবে। বোরহান প্রতিদ্বন্দ্বিতায় থাকলে দলীয় প্রার্থীর অবস্থা নড়বড়ে হয়ে যাবে বলে বোরহানকে বসানোর যারপরনাই চেষ্টা শুরু হয়। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আল মামুন সরকার দুদিন যান আখাউড়ায় বোরহানের বসায়। কেন্দ্রীয় একাধিক নেতাও ফোন করেন বোরহানকে। রোববার মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষদিনে বোরহান তার মনোনয়ন উঠিয়ে নেন। এর পরই জেলা আওয়ামী লীগ নেতাদের সামনে কাজল বোরহানের পা জড়িয়ে ধরে ক্ষমা চান। অতীতের ভুলত্রুটির জন্য মাফ চান তার কাছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এ সময় বোরহান কেঁদে ফেলেন। কাজলকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘তুমি আমার অনেক ক্ষতি করেছো। এ রকম আর কইরো না। ক্ষমতার অপব্যবহার কইরো না। মানুষকে ইজ্জত করতে শিখো, সম্মান করতে শিখো। মানুষ তোমাকে সম্মান করবে। উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মতিউর রহমানকে দেখিয়ে বলেন, এদের প্রতি আর অবিচার কইরো না।’ এর উত্তরে কাজল বলেন, জীবনে অনেক অন্যায় করেছি, ভুল করেছি, আমাকে মাফ করে দেন। জীবনে যতদিন রাজনীতি করবো আপনাদের সম্মান করবো। উপজেলা আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল এক নেতা জানান, এর আগেও কাজল বোরহানের বাসায় গিয়ে ক্ষমা চান।
শেখ বোরহান উদ্দিন আহমেদ বলেন, কেন্দ্রীয় দুজন নেতা আমাকে ভীষণভাবে চেপে ধরেন। জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা দুদিন আমার বাসায় আসেন। তারা আমাকে বলেন, আপনি ৩ মেয়াদ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। উপজেলা চেয়ারম্যান হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে। এখন আপনি কি চান নৌকা পরাজয় হোক? আমি দলের সভানেত্রীর সম্মান, নৌকার সম্মানের কথা চিন্তা করে আমার প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেই। এখন কাজল বিরাট ভোটের ব্যবধানে জয়ী হবে। আমি নির্বাচন করলে অবশ্যই জয়ী হতাম। দুর্গাপুর, টানপাড়া, খরমপুর, মসজিদপাড়া, তারাগন, আমার ওয়ার্ড, আমার গ্রাম- সবাই আমার জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়েছিল। উপজেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ জয়নাল আবেদীন বলেন, বোরহান ভাই সাংগঠনিক লোক। দলের স্বার্থে তিনি কাজলকে ছাড় দিয়েছেন। তাদের মধ্যে কিছু ভুল বোঝাবুঝি ছিল। সেগুলো মিটে যাবে। আমাদের জেলা নেতারা দুদিন এসেছেন। কাজলও বোরহান ভাইয়ের বাসায় গেছেন।