আইন করে যুদ্ধাপরাধীদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হবে
নিউজ ডেস্ক ::
মুক্তিযুদ্ধ বিষয়কমন্ত্রী আ.ক.ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, অচিরেই পাকিস্তানের কৃতদাস যুদ্ধাপরাধীদের স্থাবর-অস্থাবর সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে তা মুক্তিযোদ্ধাদের কল্যাণে ব্যবহার করা হবে। বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্তের কোন আইন নেই। প্রয়োজনে এ জন্য আইন প্রনয়ন করা হবে। বাংলদেশে আর কোন মুক্তিযোদ্ধা অবেহেলিত থাকবে না। আগামী জুলাই থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের সমস্ত রকম চিকিৎসা বিনামূল্যে করা হবে। মুক্তিযোদ্ধাদের বছরে ২টি উৎসব ভাতা প্রদান করা হবে।
মন্ত্রী আরো বলেন, স্বাধীনতা বিরোধী জামায়াতকে বাংলাদেশে রাজনীতি করতে দেয়া হবেন না। জামায়াতে ইসলামী ৭১ এর ভূমিকার জন্য জাতির কাছে ক্ষমা চায়নি। তখন তাদের ভূমিকা সঠিক ছিলো বলে দাবি করে আসছে। তাদের বাংলাদেশে রাজনীতি করার কোন অধিকার নেই। বাংলার মাটি থেকে জামায়াতের রাজনীতি চিরতরে বন্ধ করবো। অচিরেই এ ব্যাপারে আমরা কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহন করবো।
মন্ত্রী পাকিন্তানের সমলোচনা করে বলেন, পাকিস্তানী পার্লামেন্ট তাদের কৃতদাসদের রক্ষায় বাংলাদেশে কোন মুক্তিযুদ্ধ হয়নি, মানুষ মারা যায়নি, মহিলারা নির্যাতনের শিকার হননি, লুটপাট, অগ্নি সংযোগ করা হয়নি বলে প্রস্তাব পাশ করেছে। আমি এ প্রস্তাবের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ যানাই। কোন ভাবেই তারা যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করতে পারবেনা। আমরা আজ এখান থেকে পাকিস্তানী ১৯৫ জন যুদ্ধাপরাধীর বিচারের কাজ শুরু করলাম। পাকিস্তারের আস্ফালনের কড়া জবাব দেয়া হবে।
আ.ক.ম মোজাম্মেল হক বলেন, জিয়াউর রহমান মুক্তিযুদ্ধ করতে চাননি। তিনি ওয়ার কাউন্সিল গঠন করতে চেয়েছিলেন। ৭৫ এ বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর তিনি রাষ্ট্রিয় ক্ষমতা দখল করে বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনীদের বিদেশে যেতে সহায়তা করেছেন। তাদের বিভিন্ন দুতাবাসে চাকরি দিয়েছেন। যুদ্ধাপরাধী শাহ আজিজ, আলীমকে মন্ত্রী বানিয়েছেন। রাজাকার, আলবদরদের পুনর্বাসিত করেছেন। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভুলুণ্ঠিত করেছেন। এসব কাজের জন্য জিয়াউর রহমানের মরনোত্তর বিচার করা হবে।
তিনি বিএনপি জামায়াতকে কাপুরুষ আখ্যা দিয়ে বলেন, পাক বাহিনী যেমন ৭১ এ মুক্তিযোদ্ধাদের সামনে সম্মূখ যুদ্ধ করতে সাহস পায়নি। তারা গ্রামের মধ্যে ঢুকে বাড়ি ঘর জ্বালিয়ে পুড়িয়ে লুটপাট করেছে। অবলা নারীদের ধরে এনে নির্যাতন করেছে। নির্বিচারে অসহায় শিশু, নারী ও বৃদ্ধদের হত্যা করেছে। তাদের দোষর বিএনপি জামায়াত কাপুরুষের মতো চোরাগুপ্তা হামলা করে মানুষ হত্যা করছে। নাশকতা করে পুড়িয়ে বাংলাদেশের মানুষ হত্যা করে তাদের কোন লাভ হয়নি। তাই তারা বিদেশীদের হত্যা করে এ দেশকে অস্তিতিশীল করতে চেয়েছিলো। মানুষ হত্যা করে কোন দিন রাজনীতি করা যায়না। রাজনীতি করতে হয় রাজপথে। আমরা মুক্তিযুদ্ধ করে দেশ স্বধীন করার পর বঙ্গবন্ধুর হাতে অস্ত্র জমা দিয়েছিলাম ট্রেনিং জমা দেইনি। প্রয়োজনে আবার রাজ পথে নেমে বিএনপি জামায়াতের কাপুরুষোচিত নাশকতার জবাব আমরা ৭১ এর মতো দেব।
তিনি আজ শনিবার কাশিয়ানী মুক্ত দিবসের মুক্তিযোদ্ধাদের সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। এ সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন মুক্তিযোদ্ধা কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সহ-সভাপতি ইসমত কাদীর গামা, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক এস.এম মুজিবর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা মিয়া মুজিবর রহমান, ঢাকা রেঞ্জের ডি.আই.জি এস.এম মাহফুজুল হক নুরুজ্জামান, ক্যাপ্টেন (অবঃ) নুর মোহাম্মদ বাবুল, গোপালগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার বদরুদ্দোজা বদর।
কাশিয়ানী উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আলহাজ্ব মোঃ এনায়েত হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে মুক্তিযোদ্ধা মোঃ মোক্তার হোসেন, এস.এম মহসীন আলী, খান ওলিউর রহমান, শরীফ মোঃ মনিরুজ্জামান, মুক্তিযুদ্ধ প্রজম্মের মোঃ মশিউর রহমান খান, খালিদ হোসেন লেবু সহ অরো অনেকে বক্তব্য রাখেন।
এর আগে সকালে মন্ত্রী কাশিয়ানীর ভাটিয়াপাড়া সম্মুখ সমরের স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শহীদরে প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। সেখানে কিছুক্ষণ বিরবে দাড়িয়ে থাকার পর মন্ত্রী পবিত্র ফাতেহাপাঠ ও শহীদের রুহের মাগফিরাত কামনায় দোয়া-মোনাজাত করেন।