‘৭ মাত্রার ভূমিকম্পে ঢাকার ৩০ ভাগ ভবন ধসে যাবে’
নিউজ ডেস্ক :: বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় সাত মাত্রার ভূকম্পন হলে শহরের ৩০ ভাগ ভবন সম্পূর্ণরূপে ধসে যাবে এবং একই মাত্রার ভূমিকম্পে চট্টগ্রামের ৮০ ভাগ ভবন ধসে যাবে। ঢাকা ও চট্টগ্রামে ৫ লাখ ভবনের মধ্যে ৭০ ভাগ ভবন নির্মাণেই বিল্ডিং কোড অনুসরণ করা হয়নি। ফলে ভূমিকম্পে এসব ভবনের ৫৬ ভাগই ধসে পড়বে।
জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ও বিশ্বব্যাংকের উদ্যোগে ‘আরবান বিল্ডিং সেফটি প্রজেক্ট’ ও ‘আরবান রেজিলিয়েন্স প্রজেক্ট’ এর আওতায় এক গবেষণা প্রতিবেদনে এমনই তথ্য উল্লেখ করা হয়েছে। গতকাল শনিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু সম্মেলন কেন্দ্রে এ প্রতিবেদন প্রকাশ উপলক্ষে অনুষ্ঠিত সেমিনারে বক্তারা ঢাকার ভবনগুলোর অবস্থা ও ভূমিকম্প দুর্যোগকালীন অবস্থায় করণীয় বিষয়ে আলোচনা করেন। গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন বাংলাদেশে জাইকার প্রধান প্রতিনিধি মিকিও হাতাইদা।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এশিয়া প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী। তিনি বলেন, আমাদের ভবন নির্মাণের নকশা প্রণয়নকারী স্থপতিদের ভূমিকম্প সম্পর্কে তেমন ধারণা নেই। তাদের পাঠ্যসূচিতে ভূমিকম্প সহনীয় বাড়ি নির্মাণ বিষয়ক কোর্স যুক্ত করা প্রয়োজন। অনেক ক্ষেত্রে স্থপতিরা একটি ভবনের দু’টি নকশা প্রণয়ন করেন। একটি রাজউকে জমা দেন অনুমোদনের জন্য। অন্যটি ভবন নির্মাণকারী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে দেয়া হয়। এ কারণে ভবন নির্মাণের সময় বিল্ডিং কোড অনুসরণ করা হয় না।
পরিকল্পনা মন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল বলেন, মানবসৃষ্ট দুর্যোগে মৃত্যু আমরা দেখতে চাই না। ঢাকা শহরসহ দেশের কোন এলাকায় কি ধরনের ভবন হবে সে বিষয়ে সকল অঞ্চল ম্যাপিং করে যথাযথ পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে চিহ্নিত করতে হবে।
আহসান উল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এম এম শফিউল্লাহ বলেন, ভবন নির্মাণে ঠিকাদারদের ভূমিকা সবচেয়ে বেশি। রাজউক বিষয়টি তদারকি করতে পারে।
ডিএনসিসি মেয়র আনিসুল হক বলেন, সিটি কর্পোরেশনের মেয়র থেকে শুরু করে কর্মচারীদের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনার ওপর কোনো প্রশিক্ষণ নেই। আর এ সংক্রান্ত কোনো কমিটিতেও মেয়র বা কাউন্সিলরদের রাখা হয়নি।
দিনব্যাপী এ সেমিনারে আরো বক্তব্য রাখেন ডিএসসিসি মেয়র সাঈদ খোকন, অর্থ মন্ত্রণালয়ের ইআরডি’র সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ মেজবাহউদ্দীন, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মোহাম্মদ মইনুদ্দীন আবদুল্লাহ, ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শাহ কামাল, রাজউক চেয়ারম্যান জয়নাল আবেদীন ভূঁইয়া, বিশ্বব্যাংকের দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ মার্ক এস. ফরনি ও স্বর্ণা কাজী, চিলি’র দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ ভিক্টর ওরেল্লানা, পিডব্লিউডি’র প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলামসহ জাপান, তুরস্ক ও চিলির ভূমিকম্প দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিষয়ক বিশেষজ্ঞরা।